সিঙ্গাপুরের পার্লামেন্ট নির্বাচনে টানা ১৪ বারের মতো জয় পেয়েছে শাসক দল পিপলস অ্যাকশন পার্টি (পিএপি)। এর মধ্য দিয়ে নগররাষ্ট্রটিতে টানা ৬০ বছর ধরে চলা পিএপির শাসন আরও দীর্ঘয়িত হতে যাচ্ছে। ১৯৬৫ সালে সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতার আগে থেকেই সেখানে শাসন করছে পিএপি।

শনিবার সিঙ্গাপুরের পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, পার্লামেন্টের ৯৭টি আসনের মধ্যে ৮৭টি পেয়েছে পিএপি। ৩৩টি নির্বাচনী এলাকার অনেকগুলোতেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে দলটি। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে পিএপি। এর আগে ২০২০ সালের নির্বাচনে ৬৪ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তারা।

নির্বাচনে এই বিশাল জয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওংয়ের প্রতি সিঙ্গাপুরের মানুষের বিপুল সমর্থনকেই তুলে ধরেছে। গত বছর তিনি সিঙ্গাপুরের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে দুই দশক ধরে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী ছিলে লি হসিং লুং। তিনি আধুনিক সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা লি কুয়ান ইয়েওয়ের ছেলে।

শনিবারের ফলাফল অনুযায়ী, নির্বাচনে মূল বিরোধী দল ওয়ার্কার্স পার্টি ১০টি আসনে জয় পেয়েছে। গত নির্বাচনেও তারা ১০টি আসনে পেয়েছিল। সিঙ্গাপুরে কোনো বিরোধী দলের এটি সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়ার ঘটনা।

সিঙ্গাপুর বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল শহর। শনিবারের নির্বাচনে জীবনযাত্রার ব্যয় ও বাসস্থান ছিল প্রধান বিষয়। লরেন্স ওংয়ের সরকারের জন্য তা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই রয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে সিঙ্গাপুরে অর্থনীতি মন্দার মুখে পড়তে পারে বলে এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে লরেন্সের সরকার।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুরা কারিয়াতে কিয়ামতের ভয়াবহতার বর্ণনা

সুরা কারিয়া (মহাপ্রলয়) পবিত্র কোরআনের ১০১তম সুরা। কিয়ামতকে মহাপ্রলয় বলা হয়েছে, এ জীবনে যাদের সৎকর্মের পাল্লা ভারী হবে, সেদিন তারাই সুখের জীবন লাভ করবে। আর যার পাল্লা হালকা হবে, তার স্থান হবে গনগনে আগুন হাবিয়ায়।

সুরা কারিয়ার অর্থ আবার দেখে নিই

১. মহাপ্রলয়! ২. মহাপ্রলয় কী? ৩. মহাপ্রলয় সম্বন্ধে তুমি কী জান? ৪. সেদিন মানুষ বাতির পোকার মতো বিক্ষিপ্ত হবে। ৫. আর পাহাড়গুলো ধুনিত হবে রঙিন পশমের মতো। ৬. তখন যার পাল্লা ভারী হবে ৭. সে তো পাবে সুখ ও শান্তির জীবন, ৮. কিন্তু যার পাল্লা হালকা হবে ৯. তার জায়গা হবে হাবিয়া। ১০. সেটা কী, তুমি কি তা জান? ১১. (সে) এক গনগনে আগুন।

সুরার মূল বিষয়বস্তু

প্রথমেই আল্লাহ করিয়াহ শব্দটি ব্যবহার করেছেন এবং একটি শব্দেই প্রথম আয়াত শেষ করে দিয়েছেন। এর ফলে প্রশ্ন জাগে এই ‘করিয়াহ’ কী? আল্লাহ বলে দিচ্ছেন পরের আয়াতে। এরপর আবার আল্লাহ প্রশ্ন করে বললেন মহাপ্রলয় সম্বন্ধে তুমি কী জান? করিয়াহ শব্দটি বেশ অর্থবহ। করিয়াহ বলতে বিকট শব্দ বোঝায়, বিরক্তিকর, ভীতিকর, ধ্বংসাত্মক। আল্লাহ সুরার শুরুতে তিনবার (১ম, ২য়, ৩য় আয়াতে) এই শব্দ ব্যবহার করে এর গুরুত্ব তিন গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনবার ফুৎকার দেওয়ার কথা জানা যায়, প্রথম ফুৎকারে কিয়ামত হবে, দ্বিতীয়তে সবাই মারা যাবে, তৃতীয় ফুৎকারে আবার সবাই জেগে উঠবে। এই তিনবার করিয়াহ বলার মাধ্যমে ওই তিন ফুৎকারের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনসুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের বিশেষ ফজিলত০৭ মার্চ ২০২৫

চতুর্থ আয়াতে বলা হয়েছে, সেদিন মানুষ বাতির পোকার মতো বিক্ষিপ্ত হবে। তারা এদিক–সেদিক লক্ষ্যহীন ছুটতে থাকবে। এখানে আল্লাহ মানুষ বোঝাতে ‘নাস’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

পঞ্চম আয়াতে আছে, আর পাহাড়গুলো ধুনিত হবে রঙিন পশমের মতো। পাহাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে হালকা হয়ে যাবে যে উড়তে থাকবে। এরপরই ষষ্ঠ আয়াতে আল্লাহ বললেন, তখন যার ওজনের পাল্লা ভারী হবে, সে সুখী জীবন লাভ করবে। অপর দিকে কিন্তু যার পাল্লা হালকা হবে, তার জায়গা হবে হাবিয়া (৮ম ও ৯ম আয়াত)। এখানে হাবিয়াহকে তার মা হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে।

হাবিয়াহ জাহান্নাম ‘মা’ বলা হলো কারণ শিশু তার মায়ের দিকে এমনিতেই, নিজ ইচ্ছাতেই এগিয়ে যায়। তেমনি পাপী মানুষেরাও নিজেরাই তাদের মায়ের (হাবিয়াহ জাহান্নাম) দিকে এগিয়ে যাবে, নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। মা যেমন তার শিশুকে জন্মের আগে পেটের মধ্যে যত্নে রাখে, বড় হলেও বুকে আগলে রাখে, তেমনি হাবিয়াহ জাহান্নামও পাপীদের তার ভেতরে যত্নসহকারে আটকে রাখবে, বের হতে দেবে না। ১০ম আয়াতে সেটা কী, তুমি কি তা জানো? প্রশ্ন করার পর পরের (১১তম) আয়াতে আল্লাহই এর উত্তর দিয়েছেন। তা হলো (সে) এক গনগনে আগুন।

আরও পড়ুনমুসা (আ.)-এর বিয়ের শর্ত১৫ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ