ববি উপাচার্যের পদত্যাগের ১ দফা দাবি শিক্ষার্থীদের
Published: 4th, May 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচতিা শরমিনের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৪ মে) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা। উপাচার্যকে অপসারণ না করা হলে দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেওয়ার হুশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।
সংবাদ সম্মেলন শেষে উপাচার্য বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
৫ মে আদালতে ভিড় না করার জন্য ফয়জুল করিমের নির্দেশনা
প্রশাসনকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কফিন মিছিল
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অর্থনীতি বিভাগের ভূমিকা সরকার, লোকপ্রশাসন বিভাগের মোকাব্বেল শেখ, আইন বিভাগের শহিদুল ইসলাম শাহেদ, মাইনুল ইসলাম, এসএম ওয়াহিদুর রহমান, ইতিহাস বিভাগের মোশাররফ হোসেন, সাংবাদিকতা বিভাগের নাজমুল ঢালী, রসায়ন বিভাগের হাসিবুর রহমান হাসিব, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের মাসুম বিল্লাহ, বাংলা বিভাগের আশিকুর রহমান প্রমুখ।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ড.
তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে ২২ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়েছিল। ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি। বিশেষ করে, জুলাই মাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের কোনো বিচার হয়নি। বরং আন্দোলন দমনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে।
এ সময় ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ক্যান্সার আক্রান্ত এক শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সহায়তার আবেদন পাঁচ মাস ধরে উপাচার্যের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় পড়ে থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন তারা।
শিক্ষার্থী বলেন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন স্বৈরাচারী প্রশাসক থাকার কোনো সুযোগ নেই। অবিলম্বে যদি এ স্বৈরাচার উপাচার্যকে অপসারণ না করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গ শাটডাউন করে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে এখানে এমন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হোক, যিনি দক্ষিণবঙ্গ তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবান্ধব হবেন।
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, “বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জুলাই অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু তাদের সেই অবদানের যথাযথ মূল্যায়ন করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা রাষ্ট্র। উপাচার্যের কাছে একাধিকবার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গেলে তিনি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি। ২২ দফা দাবিতে আন্দোলনের পর তিনি এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও ছয় মাস পার হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। এমনকি চলমান ১৮ দিনের আন্দোলনেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো আলোচনায় আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”
এর আগে, সকাল সাড়ে ১১টায় উপাচার্য তার বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানান তিনি।
গত ৩০ নভেম্বর উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। পরবর্তীতে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে ১ মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।
উপাচার্যের বাসভবনের প্রবেশ করে গেট ভাঙচুরের অভিযোগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারিতে ৪২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বরিশাল বন্দর থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় প্রধান সাক্ষী হিসাবে উপাচার্য শূচিতা শরমিনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল উপ চ র য র বর শ ল ব
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে নির্মাণ হবে গণমিনার
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণপ্রতিরোধ ও আত্মত্যাগের স্মরণে সর্বস্তরের নাগরিক উদ্যোগে রাজধানীতে নির্মাণ করা হবে ‘গণমিনার’। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গণমাধ্যমকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বয়ে ‘গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে কমিটি এসব তথ্য জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্থপতি কামার আহমাদ সাইমনসহ বিশিষ্ট নাগরিকেরা।
সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা জানান, গণমিনারের স্থান হিসেবে বীর উত্তম মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান রোড ও বিজয় সরণির মধ্যবর্তী সবুজ চত্বরকে নির্বাচন করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এরই মধ্যে গণমিনার নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ, অর্থ ও প্রকৌশল সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে জাতিসংঘ স্বীকৃত (গত ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদনে) ১ হাজার ৪০০ শহীদের নাম ও পরিচিতি গণমিনারে খোদাই করে সংরক্ষণ করা হবে।
গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, কমিটিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুক্ত হচ্ছেন। অন্তর্ভুক্তিমূলক এ নাগরিক উদ্যোগটির লক্ষ্য, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান এবং শহীদদের স্মৃতিকে স্মারকরূপে সংরক্ষণ করা; যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মানুষের আত্মত্যাগ ও প্রতিরোধের চেতনা সঞ্চারিত হয়।
বক্তারা বলেন, জুলাই ২০২৪ ছিল একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যেখানে আপামর জনগণ স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ নির্যাতিত হয়েছেন, আহত হয়েছেন, প্রাণ হারিয়েছেন। জুলাই গণপ্রতিরোধে জাতির প্রতিবাদী সত্তার স্ফুরণ ঘটে। সেই সত্যকে স্মরণে রাখতে গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি একটি স্থায়ী স্মারক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আরও জানানো হয়, এই ভূখণ্ডে গত ২৫০ বছরের প্রতিরোধ ও লড়াইয়ের ইতিহাসের চিত্রও গণমিনারে তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে। এই গণমিনার হবে এমন এক স্মরণস্থল, যা রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে সব মত ও পথের মানুষের সম্মিলিত গণ–উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হবে। গণমিনার বাস্তবায়নে গণমানুষের সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে গণচাঁদা সংগ্রহেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের প্রভাষক অলিউর সান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংগঠক অলিক মৃ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন, কবি ও লেখক আলতাফ শাহনেওয়াজ, লেখক ও গবেষক ইলিরা দেওয়ানসহ আরও অনেকে।