চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলে বৈধভাবে আসন বরাদ্দ দিয়ে পরে স্থগিত করায় কাঁথা-বালিশ নিয়ে হলগেটে অবস্থান করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে হলটির প্রধান গেটের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। হলে না উঠানো পর্যন্ত তাদের এ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন পর ফরহাদ হোসেন হলে আবাসন বরাদ্দের আবেদন নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর ভিত্তিতে আইসিটি সেল কর্তৃক বরাদ্দপ্রাপ্তদের ফলাফল দেওয়া হয়। হলে সিট সংখ্যা ৭০০। এর মধ্যে ৫৩০ জন শিক্ষার্থীর সিট নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের অধিকাংশ হলটিতে উঠেছেন। মৌখিক পরীক্ষায় বাকি ১৭০ জন শিক্ষার্থীর সিট স্থগিত রাখা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

‘সংবিধান ও গণতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রধান চ্যালেঞ্জ’

সৈকতে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করল চবি বিএনসিসি

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলছেন, বর্ষ নিয়ে প্রশাসন যে সমস্যার কথা জানিয়ে আমাদের সিট স্থগিত রেখেছে, আসলে এতে আমাদের কোনো ভুল ছিল না। আবেদন ফরম অনুযায়ী আমাদের সবকিছু শতভাগ সঠিক। পরে প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে যৌক্তিক সমাধানের কথা জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। এতে আবাসন নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো.

শরিফুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসন কর্তৃক সরবরাহ করা ফর্ম অনুযায়ী যথাযথ নিয়মে আবেদন করে মেধার ভিত্তিতে শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলে সিট বরাদ্দ পেয়েছি আমরা। এরপর সাক্ষাৎকারে হঠাৎ বর্ষ সংক্রান্ত সমস্যার কথা উল্লেখ করে আমাদের সিট স্থগিত করে দেয়।”

তিনি বলেন, “সমস্যার সমাধানের জন্য প্রাধ্যক্ষ থেকে আইসিটি সেল হয়ে প্রক্টর অফিস, উপ-উপাচার্য অফিসে গত ১৩ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত চরকির মতো ঘুরানো হচ্ছে আমাদের। প্রশাসন থেকে সমাধানের আশ্বাস দিলেও তার কোনো অগ্রগতি নেই। গত ২৬ এপ্রিল থেকে হলে উঠার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় সবাই মেস বা বাসা ছেড়ে দিয়েছি। এখন যাযাবরের মতো এখানে সেখানে থাকতে হচ্ছে আমাদের।”

তিনি আরো বলেন, “প্রশাসন সমাধানের কথা বললেই আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠিতব্য সমাবর্তনের পরে দেখবে বলে দায়মুক্ত হচ্ছে। তাদের ভুলের কারণে সৃষ্ট সমস্যার কারণে দিনের পর দিন হয়রানি করছে আমাদের। হল উদ্বোধন হয়েছে, একইসঙ্গে আসন বরাদ্দ পাওয়া একাংশ হলে থাকতে। এদিকে আমাদের বরাদ্দ পাওয়া সিটগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। অথচ আমাদের থাকার জায়গা নেই।”

“নিরুপায় হয়ে আজ শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলে আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমরা আবাসন সংকটে লেখাপড়ারও পরিবেশ পাচ্ছি না, মাথা গোজারও ঠাঁই পাচ্ছি না। অথচ প্রশাসনের আন্তরিকতার ঘাটতির কারণে সমস্যার সমাধান দিনের পর দিন বিলম্বিত হচ্ছে। এই হয়রানির শেষ কোথায়?,” যুক্ত করেন শরিফুল ইসলাম।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী নোমান ইবনে মুসলিম উদ্দিন বলেন, “প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তি। এর শেষ কোথায়? শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের আসন পেয়েও আমাদের সিট স্থগিত করা করায় নিরুপায় হয়ে আজ আমরা অবস্থান কর্মসূচি করছি।”

এদিকে, ঘটনাস্থলে এসে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে চবি শাখা ছাত্রদল। 

শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “তারা আবেদন ফরম অনুযায়ী বৈধভাবেই সিট বরাদ্দ পেয়েছে। এখন আবাসনের অভাবে তারা ভোগান্তিতে আছেন। দ্রুত তাদের হলে উঠানো হোক। আমরা তাদের পাশে আছি।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় আসন বরাদ্দ কমিটির আহ্বায়ক ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “তারা আবেদনে একটি ভুল করেছে। সমাবর্তনের পর তাদের হলে উঠাব বলেছি এবং সমাবর্তনের আগে সমস্যাটি আমরা সমাধান করব। এখন তারা অবস্থান কর্মসূচি করলে কিছু বলার নেই।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর দ দ প আম দ র স সমস য র ন র পর

এছাড়াও পড়ুন:

শিল্পকলায় বরেণ্য তিনসংস্কৃতিসাধককে স্মরণ

শিল্পকলা একাডেমিতে নানা আয়োজনে স্মরণ করা হলো তিন বরেণ্য সংস্কৃতিসাধক আলোকচিত্রী আমানুল হক, আলোকচিত্র গবেষক ড. নওয়াজেশ আহমদ এবং কিংবদন্তি সুরকার ও সংগীত পরিচালক সমর দাসকে। বৃহস্পতিবার জাতীয় নাট্যশালা ভবনের সেমিনার কক্ষ এবং জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র প্রাঙ্গণে ‘মনীষী স্মরণ’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ জানানো হয়।

বিকেল ৪টায় জাতীয় নাট্যশালা ভবনের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় আমানুল হক ও ড. নওয়াজেশ আহমদের জীবন, কর্ম ও আলোকচিত্র শিল্পে তাদের অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট আলোকচিত্রশিল্পী নাসির আলী মামুন ও চিত্রশিল্পী নাসিম আহমেদ নাদভী। দেশের বাইরে থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ‘আমানুল হক আর্কাইভস’-এর তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক আহমেদ অরূপ কামাল। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক তানজিম ওয়াহাব।

বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, আমানুল হক ও ড. নওয়াজেশ আহমদ শুধু আলোকচিত্রের নান্দনিক ভুবনেই নয় বরং দেশের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ইতিহাসের বহুমাত্রিক দলিল নির্মাণেও অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। তাদের আলোকচিত্র দেশ ও জাতির অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।

সন্ধ্যা ৬টায় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় সমর দাস স্মরণ অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। পরে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে সমর দাসের সুর করা কালজয়ী গান এবং সেই সুরে নৃত্যের অপূর্ব মেলবন্ধন দর্শকদের আবিষ্ট করে তোলে।

জাতীয় নাট্যশালায় ‘দেয়াল জানে সব’

সময়ের রক্তাক্ত অভিজ্ঞতা আর স্বপ্নভঙ্গের প্রতিধ্বনি নিয়ে মঞ্চে এলো নতুন নাট্য প্রযোজনা ‘দেয়াল জানে সব’। ‘মনসুন রেভ্যুলেশন’-এর স্পিরিটকে উপজীব্য করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে হয় নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন। প্রযোজনা ও পরিবেশনায় ছিল নাট্যদল স্পন্দন থিয়েটার সার্কেল। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাকিল আহমেদ সনেট। নাটকটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী আজ সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে একই মিলনায়তনে। দর্শকের জন্য উন্মুক্ত এই প্রদর্শনী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ