পেঁয়াজ

পেঁয়াজ শুধু মানুষকে কাঁদায়ই না, মশার কামড়ের ক্ষত সারাতেও সহায়তা করে। সদ্য কাটা কন্দ থেকে বেরিয়ে আসা পেঁয়াজের রস মশার কামড়ের ক্ষত এবং জ্বালা কমাতে পারে। পেঁয়াজের কিছু ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া দমনকারী বৈশিষ্ট্যও আছে, যা সংক্রমণের আশঙ্কা কমাতে পারে। একটি পেঁয়াজ টুকরা করে কেটে আক্রান্ত স্থানে বেশ কিছুটা সময় লাগিয়ে রাখুন। তারপর স্থানটি পানি দিয়ে রগড়ে ধুয়ে ফেলুন।

রসুন

হৃদ্‌রোগ থেকে শুরু করে উচ্চ রক্তচাপ পর্যন্ত অনেক রোগনিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে রসুনের নামডাক আছে। ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে মশাসহ বিভিন্ন কীটপতঙ্গের কামড়ের স্থানে রসুন কেটে লাগালে আরাম মেলে। একটি রসুন চিকন চিকন টুকরা করে কাটুন। তারপর সুগন্ধবিহীন পেট্রোলিয়াম জেলি কিংবা লোশনের সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। তারপর একটি ঠান্ডা ওয়াশক্লথ কিংবা নরম কাপড় দিয়ে আক্রান্ত স্থানে জলপট্টি দিন।

বরফ

ঠান্ডা তাপমাত্রা এবং বরফ প্রদাহ কমায়। ঠান্ডা ত্বককে অসাড় করে দেয়। ফলে আপনি তাৎক্ষণিক স্বস্তি পেতে পারেন। যদিও এই স্বস্তি বেশিক্ষণ থাকে না। এ বিষয়ে আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজির পরামর্শ হচ্ছে, আক্রান্ত স্থানে দিনের মধ্যে কয়েকবার ৫-১০ মিনিটের জন্য বরফ দিন। বরফের গুঁড়া কাপড়ে পেঁচিয়ে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে চেপে ধরুন। প্রয়োজনে আইস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।

গরম পানি

গরম পানিতে ওয়াশক্লথ বা পাতলা কাপড় ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে ১০ মিনিট জলপট্টি দিন।

আরও পড়ুনভেষজ ওষুধে মরবে মশা, গবেষণায় সাফল্যের দাবি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের০৫ মে ২০২৪ভিনেগার

অ্যাপল সিডার ভিনেগার নানান সমস্যায় প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে সমাদৃত। সাধারণ ভিনেগারের গুণও এ ক্ষেত্রে কম নয়। মশার কামড়ে চুলকানি হলে এক ফোঁটা ভিনেগার (যেকোনো ধরনের) লাগিয়ে দিন। ভিনেগার চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবেও কাজ করে। তবে শুধু ভিনেগার লাগাবেন না। তার বদলে ঠান্ডা পানি ও ভিনেগারের মিশ্রণ তৈরি করে তাতে নরম কাপড় ভিজিয়ে নিন। তারপর কাপড়টি আক্রান্ত স্থানে লাগান। শরীরের বিভিন্ন স্থানে মশার কামড়ের ক্ষত থাকলে কুসুম গরম পানিতে দুই কাপ ভিনেগার মিশিয়ে বাথটাবে ২০ মিনিট গোসল করুন। সাবধান! পানি বেশি গরম হলে অবস্থার আরও অবনতি ঘটবে।

তুলসী পাতা

ত্বকের সংক্রমণের ঘরোয়া ওষুধ হিসেবে তুলসীর সুনাম আছে। এর পাতার অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদান প্রদাহ কমাতে পারে। দুই কাপ পানিতে ১৪ গ্রাম শুকনা তুলসী পাতা ফুটিয়ে নিন। মিশ্রণটি ঠান্ডা করুন। একটা নরম কাপড় মিশ্রণটিতে ভিজিয়ে নিন। তারপর ভেজা কাপড়টি দিয়ে আক্রান্ত স্থানটি মুছুন।

বেকিং সোডা

বেকিং সোডা অনেকের রান্নাঘরেই থাকে। কেক-বিস্কুট বানানো থেকে শুরু করে রান্নাঘরের সিংকের ড্রেন পরিষ্কার করা পর্যন্ত বিভিন্ন কাজেই বেকিং সোডা ব্যবহার করা হয়। এর প্রকৃত নাম সোডিয়াম বাইকার্বোনেট। বেকিং সোডা মশার কামড় থেকে সৃষ্ট যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরামর্শ অনুযায়ী, এক টেবিল চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে কোনো প্রকার অস্বস্তি হলে আর ব্যবহার করবেন না।

আরও পড়ুনপৃথিবীর কোন কোন অঞ্চলে মশা নেই এবং কেন নেই১৪ এপ্রিল ২০২৫মধু

মধু অনেক শারীরিক সমস্যার ঘরোয়া চিকিৎসার ক্ষেত্রে দারুণ কার্যকর। গলাব্যথা এবং ত্বকের শুষ্কতার মতো শারীরিক সমস্যার চিকিৎসায় শত শত বছর ধরে মধু ব্যবহার করা হচ্ছে। মেডিকেল-গ্রেড মধুতে ব্যাকটেরিয়া ও প্রদাহরোধী উপাদান থাকে প্রচুর পরিমাণে। আক্রান্ত স্থানে এক ফোঁটা মধু লাগিয়ে রাখুন। এতে চুলকানি দূর হবে। আক্রান্ত স্থানে বারবার নখ দিয়ে চুলকালে স্থানটিতে আরও বেশি ক্ষতের সৃষ্টি হয়। মধু লাগিয়ে রাখলে চুলকাতেও আর ইচ্ছা করবে না। কারণ, তখন আপনি চুলকাতে গেলে ভাববেন, হাতটা যদি চটচটে হয়ে যায়!

অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরা অতি পরিচিত ঔষধি গুণসম্পন্ন ভেষজ উদ্ভিদ। অ্যালোভেরা পোড়া ঘা এবং পোকার কামড়ের ক্ষত দূর করতে কার্যকর। এর কিছু পাতা কেটে ভেতরের জেল বের করে নিন। আক্রান্ত স্থানে অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে শুকিয়ে ফেলুন। দিনের মধ্যে প্রয়োজনমতো কয়েকবার ব্যবহার করুন।

সূত্র: হেলথলাইন

আরও পড়ুনমশা তাড়াতে গিয়ে যেসব বিপদ ডেকে আনবেন না১৭ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ১০ ম ন ট চ লক ন ত রপর

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ