Samakal:
2025-06-20@08:49:03 GMT

গরমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

Published: 5th, May 2025 GMT

গরমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

গ্রীষ্মের  প্রচণ্ড তাপদাহে চারদিক ওষ্ঠাগত। মাঝেমধ্যে কালবৈশাখীর হাওয়া আর বৃষ্টির ঝাপটায় কিছুটা স্বস্তি মিললেও সময়টা গরমের। গরমের এই আবহাওয়ায় দেখা দেয় বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা, রোগ-জরা। 
গরমের কারণে এমনিতে এই সময়ে পরিশ্রমের কাজ করতে ইচ্ছে করে না। গরম বেশি পড়লে ডায়াবেটিক রোগীরা নিয়মিত হাঁটতে চান না বা হাঁটতে পারেন না। আবার অতিরিক্ত গরমের ফলে অনেকে বিভিন্ন ধরনের জুস, শরবত খেয়ে থাকেন। ফলে ডায়াবেটিস হয়ে পড়ে অনিয়ন্ত্রিত। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে যে কোনো সাধারণ অসুখে রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে। 
এই গরমে ঘামের কারণে পানির সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বেরিয়ে গিয়ে দেখা দেয় পানিস্বল্পতা। যে সব ডায়াবেটিক রোগীর কিডনি জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ রয়েছে বা ডায়ইউরেটিক্স জাতীয় ওষুধ সেবন করেন তাদের ক্ষেত্রে এই পানিস্বল্পতা ভয়ংকর হতে পারে।   সমস্যা বেশি হলে রক্তচাপ কমে যায়, দুর্বল লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে– এমনকি অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। গরমের শুরুতে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সাধারণত দূষিত পানি বা খোলা-বাসি খাবার থেকে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। অতিরিক্ত পাতলা পায়খানা হলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও  ইলেকট্রোলাইট বের হয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে, কিডনি বৈকল্য দেখা দিতে পারে, এমনকি  মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে। এ অবস্থায় রোগীকে খাবার স্যালাইন দিতে হবে। তবে বারবার বমি হলে, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে, মুখ- জিহবা শুকিয়ে গেলে দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া পানিবাহিত অন্যান্য রোগ যেমন টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এগুলো হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
ঋতু পরিবর্তনের কারণে অনেকে  জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হযন। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে সাধারণ এই সর্দি-জ্বর থেকে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, কানে ইনফেকশন, টনসিলাইটিস ও নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা না হলে যা অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 
প্রখর রোদে ত্বকে ফোসকা পড়া, ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, ফাংগাসের সংক্রমণ, ঘামাচি ও চুলকানি দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে এগুলো সংক্রমিত হয়ে ভোগান্তি বাড়াতে পারে।
ডায়াবেটিক রোগীর ওপর অতিরিক্ত তাপমাত্রার প্রভাব
l অতিরিক্ত গরমে ঘামের সঙ্গে অতিরিক্ত  পানি বের হয়ে যাওয়ার ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ঝুঁকি বাড়ায়।
l ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রণ থাকলে রক্তের ঘনত্ব এমনিতেই বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতা হলে এই ঘনত্ব আরও বাড়ে। এর ফলে হাইপার অসমোলার কোমার মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
lঅতিরিক্ত গরমে ডায়াবেটিসের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে-কমে। রক্তে শর্করা কমানোর ওষুধ সেবনে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
সমস্যা এড়াতে করণীয়
lপর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফলের রস, আখের রস, চিনি-গুড়ের তৈরি শরবত, কোমল পানীয় খাওয়া বাদ দিতে হবে। 
l ডায়রিয়াসহ যেকোনো পানিশূন্যতায় পরিমাণ মতো স্যালাইন খেতে হবে। 
l সন্ধ্যার পরে অথবা খুব ভোরে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে।
lঅতিরিক্ত গরমে কায়িক পরিশ্রম থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকতে হবে। 
lবাইরে বের হলে প্রয়োজনে টুপি বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে। 
l হালকা, ঢিলেঢালা, সুতির পোশাক পরতে হবে। 
l নিয়মিত গোসল করতে হবে। 
l চা, কফি, গুরুপাক খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। 
lনিয়মিত রক্তের শর্করা পরিমাপ করে ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। v

[ডায়াবেটিস,  থাইরয়েড ও হরমোন বিশেষজ্ঞ 
কনসালট্যান্ট, ইমপালস হাসপাতাল, তেজগাঁও, ঢাকা।]
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ট স অন য ন ত র অন য ন ত র ত গরম র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

আরাক পারমাণবিক স্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত: আইএইএ

ইরানের আরাক শহরের কাছে নির্মাণাধীন একটি পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলায় ‌‘গুরুত্বপূর্ণ ভবন’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান বৃহস্পতিবার আরাক হেভি ওয়াটার রিয়্যাক্টরে বোমাবর্ষণ করে। তবে আইএইএ জানিয়েছে, ওই স্থাপনায় কোনো পারমাণবিক পদার্থ ছিল না।

হেভি ওয়াটার রিয়্যাক্টর ঠান্ডা রাখার জন্য এক ধরনের বিশেষ রাসায়নিক পানি ব্যবহার করা হতো। আরাক স্থাপনার মতো রিয়্যাক্টরগুলো বিজ্ঞান গবেষণার জন্য ব্যবহার করা যায়। এর অবস্থান তেহরান থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। তবে এই রিয়্যাক্টরে উপজাত হিসেবে প্লুটোনিয়াম তৈরি হয়, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

আইএইএ-এর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি এক বিবৃতিতে বলেন, ইসরায়েলি হামলার ফলে এখন পর্যন্ত ‘গুরুতর তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর ঘটনা’ ঘটেনি। তবে ‘তেজস্ক্রিয় দুর্ঘটনার ঝুঁকি’ এখনও রয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই কঠিন ও জটিল পরিস্থিতিতে আইএইএয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলো নির্ধারিত সময়ে এবং নিয়মিতভাবে পারমাণবিক স্থাপনাগুলো নিয়ে কারিগরি তথ্য পাওয়া।’



 

সম্পর্কিত নিবন্ধ