নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের প্রতি অবমাননাকর ভাষা ব্যবহারের নিন্দা জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। দলটি বলেছে, তারা যেকোনো নাগরিকের প্রতি যেকোনো ধরনের সংঘবদ্ধ শারীরিক, মানসিক ও ভাষাগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান এ কথা বলেন।

নারীর জীবনকে মর্যাদাপূর্ণ, মানবিক ও নিরাপদ করার জন্য নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন যেসব সুপারিশ দিয়েছে, সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন দুই নেতা। পাশাপাশি তাঁরা সুপারিশগুলো নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আলোচনা এবং আরও যেসব প্রস্তাবনা এতে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার, সে বিষয়েও সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

নারীর ন্যায্য অধিকার প্রাপ্তির জন্য সরকারকে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখার দাবি জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলন বলেছে, সংস্কারের সব সিদ্ধান্ত যাতে প্রতিনিধিত্বমূলক হয় এবং দেশের সব মানুষ যাতে এই সংস্কারের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। মব সৃষ্টির (উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিশৃঙ্খলা) মানসিকতা সব সময়ই অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পদ্ধতি বলেও মনে করে দলটি।

গণসংহতি আন্দোলন বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যান্য কমিশন যেমন বাতিলের প্রশ্ন আসে না, তেমনি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনও বাতিলের প্রসঙ্গ না এনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এটিকে সবার জন্য প্রতিনিধিত্বমূলক করে তোলার ক্ষেত্রে মনোযোগ দেওয়া উচিত। অন্যান্য কমিশনের মতোই নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের অনেকগুলো সুপারিশই যেমন অত্যন্ত জরুরি, তেমনি বেশ কিছু সুপারিশের ক্ষেত্রে বিতর্ক ও প্রশ্ন উঠেছে, দ্বিমত এসেছে। দ্বিমত ও বিতর্কের জায়গা থাকাটাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আলোচনার মাধ্যমেই সব অংশীদারের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশে বহু অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে এই মুহূর্তে অসংখ্য নারী কর্মরত রয়েছেন। তাঁদের কর্মস্থলের নিরাপত্তা এবং কর্মজীবন ও অবসরকালীন জীবনের কোনো নিশ্চয়তার বিধান আজ পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি। একই কথা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত পুরুষদের ক্ষেত্রেও খাটে। তবে সামাজিক ও আইনি সুরক্ষা বলয়ের বিবেচনায় নারীই সর্বক্ষেত্রে অধিকতর অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছে।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিভাজনের রাজনীতিকে পেছনে ফেলে আসার সুযোগ পাওয়া গেছে বলেও মনে করে গণসংহতি আন্দোলন। বিবৃতিতে দলটি বলেছে, বহুবার বহুভাবে এ দেশের মানুষকে বিভাজিত করে পরস্পরের প্রতি আক্রমণাত্মক ও হিংসাত্মক অবস্থায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে, যার পরিণতি হলো ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন। তাঁরা কোনোভাবেই এই ধরনের বিভাজনের পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না।

যাঁরা সংঘবদ্ধভাবে নারীর প্রতি সহিংস ভাষা প্রয়োগ করছেন, তাঁরা যেন নতুন করে দেশের মানুষকে বিভাজিত না করেন, সেই আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। গণসংহতি আন্দোলন বলেছে, বরং গঠনমূলক আলোচনার পথ তৈরি করুন। নারীর প্রতি সহিংস ভাষা ও মনোভাব কখনোই ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে না।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পেশীর শক্তি বাড়াতে যেসব খাবার খেতে পারেন

পেশী হল অত্যন্ত বিশেষায়িত সংকোচনশীল কোষ। যা পানি এবং এক-পঞ্চমাংশ প্রোটিন দিয়ে তৈরি। তাই পেশীর আকার ঠিক রাখতে এবং পেশী মেরামত করতে, নিয়মিত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ।

পেশীর শক্তি বাড়ানোর জন্য প্রোটিন, শর্করা এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার অপরিহার্য। এই উপাদানগুলো পেশী মেরামত এবং গঠনে সহায়তা করে, পাশাপাশি শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি জোগায়। কোন কোন খাবার পেশীর শক্তি বাড়াতে সহায়তা দিতে পারে, চলুন জানা যাক। 

মুরগির মাংস
একশো গ্রাম মুরগির মাংস শরীরে ত্রিশ গ্রাম প্রোটিন এবং চার গ্রাম চর্বি সরবরাহ করতে পারে। যার কারণে অনেক ক্রীড়াবিদ নিয়মিত তাদের খাবার তালিকায় মুরগির মাংস অন্তর্ভুক্ত করেন। আপনিও খাবারে মুরগির মাংস যোগ করতে পারেন।

ডিম
ডিমে উচ্চ মানের প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং বি ভিটামিন রয়েছে। যা পেশী গঠনে সহায়তা করে।

মাছ
স্যামন এবং টুনা মাছ প্রোটিন এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পেশীর ব্যথা কমাতে এবং পেশী বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।

দই
দইতে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে যা ব্যায়ামের পরে পেশী পুনরুদ্ধার এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। দইতে কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড থাকে যা একটি বিশেষ ধরণের চর্বি। 

ডাল এবং বিনস
মটরশুঁটি, মসুর ডাল এবং অন্যান্য ডাল উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিন এবং ফাইবারের ভালো উৎস।

টোফু
সয়াবিন থেকে তৈরি টোফু নিরামিষাশীদের জন্য প্রোটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। 

সূত্র: ফিচারফিট

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ