জীবনভিত্তির ও ব্যতিক্রমী চরিত্রে অনবদ্য তিনি। নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। সম্প্রতি অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন অভিনেত্রী। ইউটিউব ও টেলিভিশনের দর্শকপ্রিয় এই অভিনেত্রীর অভিনীত ১০৯টি নাটক এক কোটি ভিউ অতিক্রম করেছে।
ইউটিউব ও টেলিভিশন মিলে এই মাইলফলক এককভাবে তারই দখলে। তিনি হলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিমির ছোটবেলার একটি ছবি শেয়ার করা হয়েছে। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘পিচ্চি হিমি!’। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একজন ব্যক্তির কোলো হিমি। কপালের এককোনো কাজলের বড় টিপ। তাকিয়ে আছেন ক্যামেরার দিকে। ছবিটি প্রকাশ পাওয়ার পর ভক্তদের ভালোবাসায় ভাসছেন তিনি।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত হন হিমি।
২০১৪ সালে ‘রঙ-আরটিভি টুয়েন্টি টুয়েন্টি কালারস মডেল সার্চ’-এর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই হিমির নাট্যজগাত্রে পথচলা শুরু হয় হিমির। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি।
নিজের সহজাত অভিনয়শৈলী ও দর্শকবান্ধব উপস্থিতির মাধ্যমে অল্প সময়েই ছোট পর্দার অন্যতম প্রিয় মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। হিমির জনপ্রিয় নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘লাভ ইউ ম্যাডাম’, ‘হ্যাপিনেস’, ‘দুষ্টু শ্বশুর মিষ্টি জামাই’, ‘আমরা গরিব’, ‘বিপদে পরে বিয়ে’, ‘বিয়ের পরীক্ষা’, ‘বন্ধুর বউ’, ‘জামাই নাম্বার ১’, ‘নানা বাড়ি বরিশাল’, ‘সংসার আমার ভাল্লাগেনা’, ‘বেশরম’, ‘হবু ঘর জামাই’, ‘ভূতুড়ে প্রেম’, ‘স্বামী ভক্ত বউ’, ‘ভাই প্রেম বোঝেনা’, ‘ফেইসবুক প্রেম’, ‘প্রেম করেছি বিষ খেয়েছি’, ‘রান পাখি’, ‘জামাই শ্বশুরের কুরবানি’, ‘কিউট প্রেমিক’ প্রভৃতি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার উপস্থিতি দলের জন্য আশীর্বাদ
ভ্রমণ ক্লান্তি কাটাতে গতকাল বুধবার সারাদিন বিশ্রামে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। নিয়মিত তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন চিকিৎসকরা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গতকাল খোশমেজাজে সময় কাটিয়েছেন তিনি।
দলের নেতাদের কেউ গতকাল তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন– এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে উৎসাহী কর্মী অনেককে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ফিরোজার সামনে গিয়ে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলতে দেখা গেছে।
দলের একাধিক নেতা জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান লন্ডন থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। চিকিৎসার জন্য চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও চার মাস লন্ডনে ছিলেন। তাঁর দেশে ফেরা এবং শারীরিকভাবে তুলনামূলক সুস্থতা নেতাকর্মীকে স্বস্তি দিয়েছে; তাদের উৎফুল্ল করেছে। তাঁর এই উপস্থিতি গণতন্ত্রের জন্য দলের চলমান লড়াইয়ে নেতাকর্মীকে উজ্জীবিত করেছে বলেও মনে করছেন নেতারা। দেশে তাঁর উপস্থিতি দলের জন্য আশীর্বাদ।
নেতাকর্মী মনে করছেন, দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাঁর মতো সর্বজনগ্রহণযোগ্য নেতা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যেটি এখন সবচেয়ে জরুরি হয়ে পড়েছে। আগামীর রাজনীতিতে তাঁর দিকনির্দেশনায় দল ও দেশ উপকৃত হবে বলে বিশ্বাস করেন নেতাকর্মী। আবার বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসা পর্যন্ত পথজুড়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীর শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে খালেদা জিয়াও মানসিকভাবে তৃপ্তি বোধ করছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সমকালকে বলেন, চিকিৎসকরা নিয়ম করে বাসায় গিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখে আসছেন। তিনি ভালো আছেন, বিশেষ করে তাঁর মানসিক অবস্থা বেশ ভালো। তিনি মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে আছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, তাঁকে একটানা বসে না থেকে কিছুটা হাঁটা-চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসা শেষে ২৫ জানুয়ারি তিনি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠেন। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলে। চার মাস পর গত মঙ্গলবার দুই পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে দেশে ফেরেন তিনি।
পারিবারিক সূত্র জানায়, তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান তাঁর বাবার বাসা ধানমন্ডিতে থাকছেন। আরেক পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান শাশুড়ি খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকছেন।
দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সমকালকে বলেন, ‘মাঝে ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতিহিংসা খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখলেও তিনি এই রাজনীতির জন্য, দেশের গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন। কারা নির্যাতন সহ্য করেছেন। আমাদের প্রত্যাশা, তিনি পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠবেন। তাঁর অভিজ্ঞতা আর আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিচক্ষণতায় দেশে আবারও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে।’
৫ আগস্ট-পরবর্তী বাস্তবতায় মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া প্রথম ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলসংলগ্ন মাঠে বিএনপির বর্ধিত সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন তিনি। এর আগে ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রকাশ্য কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। কারারুদ্ধ হওয়ার আগে তিনি সিলেট সফর করেছিলেন।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি বন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।