যুদ্ধের নেপথ্যে বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে: নচিকেতা
Published: 7th, May 2025 GMT
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। এ হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। তারপর থেকে পারমাণবিক ক্ষমতাধর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তারই জবাব হিসেবে গতকাল রাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। এটির নাম দিয়েছে— অপারেশন সিঁদুর।
বলিউড, দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি ও কলকাতার অনেক তারকাই এই যুদ্ধকে সমর্থন জানিয়েছেন। তবে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বরেণ্য সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী। ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে তিনি বলেন, “একটা কারণে আমি যুদ্ধ নিয়ে আতঙ্কিত। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সাধারণ মানুষ। আপনি-আমি।”
অর্থনৈতিক স্বার্থে গোটা পৃথিবীতে যুদ্ধ সংগঠিত হয়ে থাকে। এ বিষয়ে নচিকেতা বলেন, “সারা পৃথিবীতে যত যুদ্ধ হয়েছে, যত হিংসা ছড়িয়েছে সব ক’টির নেপথ্যে বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে। সব যুদ্ধ ‘স্পনসর’ করা! আমি প্রমাণ করে দেব।”
আরো পড়ুন:
আমি যুদ্ধের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে: কবীর সুমন
প্রযোজক তার সঙ্গে রাত কাটাতে বলেন: অঞ্জনা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উদাহরণ টেনে নচিকেতা বলেন, “মনে রাখবেন, রকফেলারদের তেল প্রস্তুতকারী সংস্থা সেই সময় জার্মানি এবং ইতালি, দুই দেশকেই পেট্রোল সরবরাহ করেছিল। এই সরবরাহ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন, এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল। কিছু ঐতিহাসিকের মতে, এটি শুধুই ব্যবসা।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইলিশের দাম নির্ধারণে চিঠি: ব্যবসায়ীদের বিরূপ প্রতিক্রিয়া, ক্রেতার সাধুবাদ
মৌসুমসহ প্রায় বছরব্যাপীই চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ পাওয়ার জায়গাগুলোতে চড়া দাম থাকে সুস্বাদু এই মাছের। এ ছাড়া মাছ ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারদের সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য তো আছেই। সারা বছর দামের এ ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে এবং সিন্ডিকেট ঠেকাতে ইলিশের দাম নির্ধারণের জন্য মঙ্গলবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
ডিসির এই চিঠিতে ভোক্তা পর্যায়ে তথা সাধারণ ইলিশ ক্রেতাদের মধ্যে দাম কমে যাওয়ার আশা জাগলেও চাঁদপুরের মাছ ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। তারা বলছেন, পদ্মা, মেঘনায় জাটকা নিধন, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে ইলিশ ধরা পড়ছে কম। এরপর দাম কমানো হলে ইলিশ ধরার জেলেরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
চাঁদপুর মাছঘাটের মেসার্স আনোয়ার হোসেন জমাদার আড়তের ব্যবসায়ী মনসুর আহমেদ মাহীন বলেন, চাঁদপুরে এখন বড় ইলিশ আসে, ছোট ইলিশ কম। মৌসুমের শুরুর তুলনায় এখন ইলিশের দাম কেজিতে ২/৩শ টাকা কমে এসেছে। ভরা মৌসুমে দাম আরও কমবে। শান্তি ফিস আড়তের মালিক সম্রাট বেপারী বলেন, ‘আমরা শুনলাম চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক দাম নির্ধারণ করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। দাম নির্ধারণ করে ইলিশ বিক্রি সম্ভব না।’ কারণ হিসেবে তিনি জানান, খরচ এবং আড়তে ইলিশ সরবরাহের ওপর নির্ভর করে এর দাম। সরবরাহ বেশি থাকলে দামও কমতে থাকে। এখন প্রশাসন যদি দাম নির্ধারণ করে দেয়, তবে ঘাটে মাছ আসা কমে যাবে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবেবরাত সরকার জানান, জেলা প্রশাসন ইলিশের দাম নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ে যে চিঠি দিয়েছে তা তাদের কাছে খুবই অযৌক্তিক মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, ইলিশ মাছ কাঁচামাল। এর দাম উঠানামা করে। ভরা মৌসুমে তথা জুলাই-অক্টোবর মাসে এর দাম অনেকটাই কমে আসবে। বর্তমানে বাড়তি দামের কারণ হিসেবে তিনি জানান, এখন প্রতিদিন মাত্র ৮-১০ মণ ইলিশ ঘাটে আসে; যা চাহিদার তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল। তিনি বলেন, দাম যদি নির্ধারণই করতে হয় তবে সেটি পুরো দেশে করতে হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন সমকালকে বলেন, চাঁদপুর ও আশপাশের জেলার গুটিকয়েক ব্যবসায়ী ও আড়তদার নিজেদের ইচ্ছেমতো ইলিশের দাম হাঁকাচ্ছেন; যা একেবারেই ক্রেতার নাগালের বাইরে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ইলিশের দাম নির্ধারণ করা প্রয়োজন। স্থানীয় মৎস্য সমিতির নেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান তিনি। জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই ভোক্তার স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। একইসঙ্গে ব্যবসায়ী ও জেলেদের কথাও মাথায় রাখব আমরা।’
সরেজমিন দেখা গেছে, বর্তমানে চাঁদপুর ঘাটে পদ্মা-মেঘনার এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ২ হাজার টাকার ওপরে। এরচেয়ে কিছুটা বড় সাইজের ইলিশ ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে ৫০০/৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছিল ১২শ থেকে ১৪শ টাকা কেজি দরে। খুচরা বাজারে এই দাম আরও বেশি।