আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল ডেঙ্গু মোকাবিলায় বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছেন। তাঁদের গবেষণায় তৈরি হয়েছে উলবাকিয়াবাহিত একধরনের মশা, যা ডেঙ্গুসহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগের প্রকোপ ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম।

আজ সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) জানায়, আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল একধরনের উলবাকিয়া সংক্রমিত এডিস ইজিপ্টি মশা সফলভাবে তৈরি করেছেন, যেটি ঢাকা শহরের স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম।

এটিকে ‘ভালো মশা’ হিসেবে বর্ণনা করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এটি ডেঙ্গু এবং অন্যান্য মশাবাহিত রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে একটি নিরাপদ, জৈবিক পদ্ধতি ব্যবহারের নতুন দ্বার উন্মোচন করছে।

অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গহোফার মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, আইসিডিডিআরবি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) বিজ্ঞানীরা এ গবেষণায় যুক্ত ছিলেন।

এ গবেষণাটি সম্প্রতি জার্নাল দ্য নেচারের সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে প্রকাশিত হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

উলবাকিয়া মশার উপকারিতা বর্ণনা করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি এডিস মশায় ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করে। একই সঙ্গে মানুষ বা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ড.

মোহাম্মদ শফিউল আলমকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘পরিবেশে মশা ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ থাকতে পারে; কিন্তু এগুলো জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত নয়। এগুলো হলো ভালো মশা, যাদের দেহে থাকে প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া।’

গবেষণায় এটিকে উপকারী হিসেবে পাওয়া গেছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উলবাকিয়া অনেক দেশেই নিরাপদে ব্যবহার হয়েছে এবং এটি ডেঙ্গু ও অনুরূপ ভাইরাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জন্য নতুন একটি প্রতিরক্ষার পথ খুলে দিতে পারে।

মূলত দুটি কৌশলে উলবাকিয়া মশা দিয়ে ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রথমটি হলো দমন কৌশল যেখানে শুধু পুরুষ উলবাকিয়া মশা পরিবেশে ছাড়া হয়। এই পুরুষ মশা স্ত্রী মশার সঙ্গে মিলিত হয়, এতে স্ত্রী মশার ডিম ফোটে না। ফলে মশার সংখ্যা কমে যায়।

দ্বিতীয়টি হলো প্রতিস্থাপন কৌশল। যেখানে পুরুষ ও স্ত্রী উভয় মশা ছাড়া হয় এবং উলবাকিয়া-আক্রান্ত স্ত্রী মশারা প্রজন্মের পর প্রজন্মে এই ব্যাকটেরিয়া বয়ে বেড়ায় ও ছড়িয়ে দেয়। তারা উলবাকিয়া আক্রান্ত বা আক্রান্ত নয় এমন পুরুষদের সঙ্গে মিলিত হলেও তাদের বংশধর উলবাকিয়া বহন করে এবং এভাবে শেষ পর্যন্ত বন্য মশাদের প্রতিস্থাপন করে। এ দুটি কৌশলই বিভিন্ন দেশে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে বলে বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইস ড ড আরব পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোণায় এনসিপি নেতাসহ ৩ জনকে মারধরের ঘটনায় মামলা 

নেত্রকোণার কলমাকান্দায় জমির আইল নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা সমন্বয় কমিটির সদস্য মেহেদী হাসান (১৯), তার বাবা এবং বড় ভাইকে পিটিয়ে জখম করার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে মামলাটি হয়। শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকালে কলমাকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আহতরা হলেন- কৈলাটী ইউনিয়নের সেহড়াউন্দ গ্রামের মেহেদী হাসান, তার বাবা মানিক মিয়া (৬৩) ও বড় ভাই আকাশ মিয়া (২৮)।

আরো পড়ুন:

চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২

সড়কের কাজে অনিয়ম, অস্বীকার করায় এলজিইডি কর্মচারীকে মারধর

মামলার আসামিরা হলেন- আজগড়া গ্রামের মো. মোন্তাজ মিয়া (৭০), তার তিন ছেলে জুয়েল মিয়া (৩৫), সোহেল মিয়া (৪০) ও মনির মিয়া (২৮), একই গ্রামের মো. ইছা মিয়া (৩২), রাকিব মিয়া (২২), আদম আলী (১৯) ও মামুন মিয়া (২৭)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বুধবার দুপুরে মানিক মিয়া ও মনির মিয়ার মধ্যে ধান ক্ষেতের আইল নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করলেও পরে মনির মিয়াসহ ৭-৮ জনের একটি দল মেহেদী, তার বাবা ও ভাইয়ের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। মেহেদীর অবস্থা অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার মেহেদী হাসান বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
 
ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

কলমাকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, ‍‍“ঘটনার পর আসামির গা ঢাকা দিয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”

ঢাকা/ইবাদ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ