বিদেশের সঙ্গে লেনদেনের ভারসাম্যে আরও উন্নতি
Published: 7th, May 2025 GMT
বিদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতির ধারা অব্যাহত আছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি পরিস্থিতি ভালো থাকায় দেশের চলতি হিসাবে ঘাটতি এখন অনেক কম। গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) এ হিসাবে ঘাটতি ছিল ৪৪০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি মাত্র ৬৬ কোটি ডলারে নেমেছে। সার্বিক লেনদেনেও ঘাটতি অনেক কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মার্চভিত্তিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে রপ্তানি হয়েছে তিন হাজার ৩৮৭ কোটি ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল তিন হাজার ৯৫ কোটি ডলার। রপ্তানি বেড়েছে ২৯৩ কোটি ডলার বা ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ৯৩০ কোটি ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৪ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার। আমদানি বেড়েছে ২৬০ কোটি ডলার বা ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ। মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৪৩ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল এক হাজার ৫৭৬ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডলার বাজার পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আমদানিতে এখন আর আগের মতো কড়াকড়ি নেই। এখন আমদানিকারকরা ব্যাংকে গিয়ে ডলার পাচ্ছেন। ডলার সংকটের কারণে গত অর্থবছরে যেখানে আমদানি কমে যায় ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে সেই অবস্থা নেই। আমদানি আগামীতে আরও বাড়বে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ২০৮ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল এক হাজার ৭৩৭ কোটি ডলার। গত ৯ মাসে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে ৪৭১ কোটি ডলার বা ২৭ দশমিক ১০ শতাংশ। সব মিলিয়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবে ঘাটতি কমে ৬৬ কোটি ডলারে নেমেছে। আগের মাস ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঘাটতি ছিল ১৩০ কোটি ডলার।
চলতি হিসাবের সামান্য ঘাটতি থাকলেও আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত রয়েছে। মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে উদ্বৃত্তের পরিমাণ ১৩১ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল মাত্র ৯০ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতি হয়েছে। গত মার্চ পর্যন্ত সামগ্রিক লেনদেনে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০৭ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪৭৬ কোটি ডলার। আগের মাস ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঘাটতি ছিল ১১১ কোটি ডলার।
বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতির কারণে আগে ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। দীর্ঘ ২০ মাস পর গত ৩০ এপ্রিল রিজার্ভ আবার ২২ বিলিয়ন ডলারের ওপরে উঠেছে। অবশ্য আকুতে পরিশোধের পর রিজার্ভ আবার ২০ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। দীর্ঘদিন ধরে ডলারের দর ১২২ টাকায় স্থিতিশীল আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন কড়াকড়ি করছে। নীতি দুর্বলতার সুযোগে আগে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে করে হুন্ডি কমে বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি অনেক বাড়ছে। এ সময়ে আমদানি বাড়লেও বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতি হয়েছে। আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে তিনি আশা করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল নদ ন ক ল নদ ন আমদ ন দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি
সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (গভর্নেন্স পারফরমেন্স মনিটরিং সিস্টেম- জিপিএমএস)’ বাস্তবায়নে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে তিন সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করেছে সরকার।
সম্প্রতি এই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
কমিটিতে বাকি দুই সদস্য হলেন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারি কাজের জবাবদিহিতা, দক্ষতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) পরিবর্তে নতুন সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (জিপিএমএস) চালু করা হয়েছে। এই জিপিএমএস বাস্তবায়নে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব কমিটিকে সহায়তা করবেন। তাছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।
এ কমিটি জিপিএমএস বাস্তবায়নের বিষয়ে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসে সেকশন ১-এর আওতায় প্রস্তুত করা পরিকল্পনা অনুমোদন দেবে এবং অর্থবছর শুরুর আগে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করবে এ কমিটি।
এছাড়া, প্রতি অর্থবছর শেষে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসের সার্বিক মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে। জিপিএমএস বিষয়ে সরকারের দেওয়া অন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা