ভারতের ওয়ানডে অধিনায়ক রোহিত শর্মা ক্রিকেট নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিক ও ধারাভাষ্যকারদের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সাংবাদিকেরা মানুষকে বেশি বেশি পড়ানো ও দেখানোর জন্য এবং ধারাভাষ্যকাররা ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে খেলোয়াড়দের সমালোচনা করেন বলে অভিযোগ তাঁর।

বিমল কুমার নামের ভারতীয় এক সাংবাদিকের ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোহিত বলেছেন, ‘আপনারা বিতর্ক তৈরি করতে বেশি মনোযোগ দেন, খবরকে ফুলিয়ে–ফাঁপিয়ে তোলেন। সাংবাদিকতার মান অনেক নিচে নেমে গেছে। আগে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকত ক্রিকেট। এখন সবকিছুই ভিউ, লাইক আর আরও বেশি মানুষকে পড়ানোর লক্ষ্যে হয়।’

সংবাদমাধ্যমে এবং খেলার চ্যানেলে ক্রিকেটের মৌলিক বিষয় উপেক্ষিত দাবি করে রোহিত যোগ করেন, ‘খেলা নিয়ে খুব কমই লেখা বা কথা হয়। কৌশল, বিশ্লেষণ কিছুই নেই। যখন কোনো ম্যাচ হয়, আমরা টিভিতে দেখি। কিন্তু ধারাভাষ্যকাররা কীভাবে কথা বলে একবার শুনে দেখুন।’

ইউটিউবে রোহিতের সাক্ষাৎকারটি প্রচার হয়েছে আজ। এর আগে গতকাল রাতে ইনস্টাগ্রাম পোস্টের মাধ্যমে ভারত টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব ছাড়েন এই ক্রিকেটার। গত বছর টি–টোয়েন্টি ফরম্যাট ছেড়ে দেওয়া রোহিত এখন থেকে শুধু ওয়ানডে খেলবেন।

২০০৭ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে আসা এই ব্যাটসম্যানের মতে, ভারতের ধারাভাষ্য অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, ‘এখানে ধারাভাষ্যে যেভাবে কথা বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন। এটা হতাশাজনক। সত্যি বলতে কি, আমার কাছে মনে হয় (ভারতের ধারাভাষ্যকাররা) একজন খেলোয়াড়কে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে কথা বলে। খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’

ফর্মের কারণে সমালোচনা খেলোয়াড়দের প্রাপ্য হলেও বর্তমানে ব্যক্তিগত নানা বিষয়ও টেনে আনা হয় বলে অভিযোগ ভারতের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ী অধিনায়কের, ‘এখনকার ক্রিকেটে আমরা অনেক মসলা ঢুকিয়ে ফেলেছি। অনেকেই আছে যারা খেলাটা ভালোভাবে জানতে চায়। বুঝতে চায় একজন খেলোয়াড়ের ফর্ম কেন খারাপ হয়। তারা ব্যক্তিগত ঘটনা জানতে চায় না। আপনার বলার অধিকার আছে মানে যা ইচ্ছা বলতে পারেন না। খেলোয়াড়দের সম্মান করুন।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফিরে দেখা এক জীবন: যেখানে মা ছিলেন অভিনেত্রী, অভিনেত্রী ছিলেন মা

আজ ৮ মে। বেঁচে থাকলে আজ ৭৮ বছরে পা দিতেন শর্মিলী আহমেদ—ঢাকাই বিনোদনজগতের এক উজ্জ্বল, নির্ভরযোগ্য ও মমতাময়ী মুখ। ২০২২ সালের ৮ জুলাই না–ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি। কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া ভালোবাসা, অভিনয়ের স্মৃতি আর জীবনের গভীর মানবিক অধ্যায় আজও ছুঁয়ে যায় আমাদের হৃদয়। জন্মদিনে ভক্তরা তাঁকে স্মরণ করছে—একজন মা, শিল্পী ও সংগ্রামী নারীর প্রতীক হিসেবে

শৈশবেই অভিনয়ে
শর্মিলী আহমেদের প্রকৃত নাম ছিল মাজেদা মল্লিক। ১৯৪৭ সালের ৮ মে জন্ম রাজশাহীতে। মাত্র চার বছর বয়সেই তাঁর অভিনয়জগতে পা রাখা। রাজশাহী বেতারের শিল্পী হিসেবে তাঁর প্রথম শিল্প-পরিচয় তৈরি হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬২ সালে রেডিও ও ১৯৬৪ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। যদিও তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ‘ঠিকানা’ (উর্দু ভাষায় নির্মিত) মুক্তি পায়নি, এরপর তিনি দ্রুতই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন সুভাষ দত্তের পরিচালনায় নির্মিত ‘আলিঙ্গন’, ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ ও ‘আবির্ভাব’-এর মতো চলচ্চিত্রে। স্বাধীনতা-পূর্ব সময়ে উর্দু ভাষার কিছু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। স্বাধীনতার পর বাংলা চলচ্চিত্রের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতেও তাঁর উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। ‘রূপালী সৈকতে’, ‘আগুন’, ‘দহন’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমায় তিনি অভিনয় করেন।

ক্যামেরার সামনে শিল্পী, বাইরে এক মা
শর্মিলী আহমেদের অভিনয়জীবন কেবল সিনেমাকেন্দ্রিক ছিল না। টেলিভিশনের পর্দায়, বিশেষ করে ৮০ ও ৯০ দশকে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সবচেয়ে পরিচিত মা চরিত্রের প্রতীক। মায়াবী মুখ, শান্ত অথচ দৃঢ় উপস্থিতি, আবেগের সূক্ষ্ম প্রকাশ—সব মিলিয়ে তিনি ছিলেন মা, দাদি, ভাবি কিংবা পরিবারপ্রীতির প্রতিচ্ছবি। তবে বাস্তব জীবনের ‘মা’ চরিত্রটি ছিল তাঁর আরও গভীর। জীবনকালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার কাছে পরিবার আগে, তারপর কাজ।’ এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই মা হওয়ার পর তিনি কিছু সময় অভিনয় থেকে বিরত থাকেন। মেয়েকে মানুষ করতে অভিনয়ের কাজ কমিয়ে দেন। ঢাকার বাইরে শুটিং একরকম এড়িয়ে যেতেন। কখনো যেতে হলেও রাত যতই হোক ফিরতেন বাসায়। যদি ফিরতে না পারতেন, তাহলে বোনকে বাসায় নিয়ে এসে মেয়েকে দেখাশোনা করার ব্যবস্থা করতেন। মেয়ে তনিমা আহমেদ, যিনি নিজেও একজন অভিনেত্রী, একসময় মায়ের ব্যস্ততা ও ত্যাগ বুঝতে শেখেন। মা–মেয়ের মধ্যে এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শর্মিলী আহমেদ বলেছিলেন, ‘আমি জানি না মা হিসেবে কতটা পেরেছি, কিন্তু এটুকু জানি, ব্যস্ততার কারণে মেয়েকে অবহেলা করিনি।’

শর্মিলী আহমেদ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাসিত কবির সঙ্গে
  • জবিতে ৫ বছরে ৯ আত্মহত্যা, মানসিক সেবায় নেই পেশাদার কাউন্সিলর
  • ইমিগ্রেশনের অতিরিক্ত এসপি প্রত্যাহার, বরখাস্ত ২
  • ইমিগ্রেশনের অতিরিক্ত এসপি প্রত্যাহার, বরখাস্ত দুই
  • ইমিগ্রেশনের অতিরিক্ত এসপি প্রত্যাহার, তদন্ত কর্মকর্তা বরখাস্ত
  • ইমিগ্রেশনের অতিরিক্ত এসপি প্রত্যাহার, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরখাস্ত
  • ইমিগ্রেশনের এসপি প্রত্যাহার, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরখাস্ত
  • আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার, বরখাস্ত ২
  • ফিরে দেখা এক জীবন: যেখানে মা ছিলেন অভিনেত্রী, অভিনেত্রী ছিলেন মা