আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে ১০ দিনের আল্টিমেটাম
Published: 8th, May 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) আবু সাঈদ হত্যা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিস্ফোরক আইনের মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেল সাড়ে ৪টা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল নিয়ে আবু সাঈদ চত্বরসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে আয়োজিত সমাবেশে তারা এ দাবি করেন।
মিছিলে তারা ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘মামলা নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘অ্যকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেনো বাহিরে’, ‘জবাব চাই জবাই চাই, প্রশাসন জবাই চা ‘, ‘ফ্যাসিবাদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
৯ মাস পর আবু সাঈদ হত্যা মামলা করল বেরোবি প্রশাসন
জুলাই অভ্যুত্থানে হামলায় জড়িত ৭১ জনের বিরুদ্ধে মামলা বেরোবি প্রশাসনের
সমাবেশে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আল ইমরান বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলেছি মামলা নিয়ে তালবাহানা চলবে না। জড়িত সবাইকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তারপরেও প্রশাসন অনেকের নাম বাদ দিয়েছে। পোমেলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। কিন্তু যারা এদের মদদ দিয়েছে, মামলায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যকেও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যার অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ কিভাবে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে? আমরা ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এর মধ্যে যদি জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।”
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সিয়াম মন্ডল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় মামলা করার আগে আমরা শুনেছি, আওয়ামী লীগের অনেক দোসরকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে আমরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করি এবং উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেই। তারপরও ৭১ জনের লিস্ট থেকে অনেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।”
তিনি বলেন, “পিছন থেকে যারা কলকাঠি নাড়ছে, তারাও বাদ পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও বাদ পড়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে জড়িতদের মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”
এ বিষয়ে জানতে আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই রংপুরের পুলিশ সুপার জাকির হোসেনের মোবাইলে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
বুধবার (৭ মে) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হামলাকারী রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ছাত্রলীগ, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৭১ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে গত বছরের ১৮ আগস্ট আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ন্যায়বিচার হয়েছে, এই রায় সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ: সালাহউদ্দিন আহমদ
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলায় যে রায় হয়েছে, তাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, এই বিচার, এই রায় সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ।
আজ সোমবার রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে আসামিদের অপরাধের তুলনায় এই সাজা যথেষ্ট কম। কিন্তু আইনে এর ওপরে কোনো সাজা নাই।
আজ বেলা তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই প্রতিক্রিয়া জানান সালাহউদ্দিন আহমদ। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেক আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে কয়েকটি জিনিস প্রমাণিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার যত শক্তিশালী হোক, যত দীর্ঘদিনই রাষ্ট্রক্ষমতা অবৈধভাবে পরিচালিত করুক, ক্ষমতা ভোগ করুক, একদিন না একদিন আদালতের কাঠগড়ায় তাঁদের দাঁড়াতেই হবে।
আরও যেসব মামলা আছে, সেই মামলাগুলোতেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই বিচার অপরাধের তুলনায় যথেষ্ট নয়। কিন্তু এটা শুধু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নয়, সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ। ভবিষ্যতে যাতে এই রাষ্ট্রে কেউ আর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম না করতে পারে, ফ্যাসিস্ট না হয়ে উঠতে পারে, একনায়কতন্ত্র যাতে প্রতিষ্ঠা না হয়, তার একটি উদাহরণ। এটা ভবিষ্যতের জন্য একটা শিক্ষা। শুধু অতীতের জন্য বিচার নয়, এটা মনে রাখতে হবে।