নির্বাচনে জোটগত প্রার্থী দেবে ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী ঐক্যজোট
Published: 9th, May 2025 GMT
সংস্কার, নির্বাচন, নারী কমিশনের প্রস্তাব ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ইসলামী ঐক্যজোটের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। ইসলামী ঐক্যজোটের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তাদের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল কাদির।
এ সময় দুই দলের নেতারা জাতীয় নির্বাচনে সম্মিলিতভাবে আসনভিত্তিক একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন। এ ছাড়া আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত একটি ইসলামি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালানোর বিষয়ে একমত হন তাঁরা, যাতে ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদ কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে।
প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন; গণহত্যাকারী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থার বিষয়েও উভয় পক্ষ একমত পোষণ করে।
সভায় দুই দলের সম্মতিতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে দেশ পুনর্গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাতিল এবং জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু করার দাবির বিষয়েও মতৈক্য হয়।
এ সময় ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব সৈয়দ এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের প্রমুখ। ইসলামী ঐক্যজোটের পক্ষে অন্যদের মধ্যে ছিলেন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জোনায়ের আহমাদ, মহাসচিব সাখাওয়াত হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব ফজলুর রহমান, আবদুল কাইয়ুম, শামসুল আলম, জুনায়েদ গুলজার, লিয়াকত আলী, মাসরূর আহমাদ প্রমুখ।
আরও পড়ুনএকক প্রার্থী দিয়ে ভোটে লড়তে চায় ৫ ইসলামপন্থী দল, জামায়াতের সিদ্ধান্ত পরে২৪ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্যে পৌঁছাতে নাগরিক ঐক্য ছাড় দেবে
সংস্কার কমিশনগুলোর ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১১৮টির বিষয়ে একমত হয়েছে নাগরিক ঐক্য। ঐকমত্যে পৌঁছাতে নাগরিক ঐক্য ছাড় দেবে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে করা ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়। সংস্কার প্রশ্নের ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা করছে কমিশন। এর অংশ হিসেবে আজ নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, তাঁরা আগে ১১৪টি বিষয়ে একমত হয়েছিলেন। আজ তাঁরা ১১৮টি বিষয়ে একমত হয়েছেন। ৩৮টি বিষয়ে তাঁদের দ্বিমত থাকলেও মতপার্থক্য অনেকখানি নিরসন হয়েছে। আর বাকি ১০টির বিষয়ে তাঁরা আংশিক একমত।
নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষের ১০০ প্রতিনিধির মধ্যে ৫০ শতাংশ নাগরিক সমাজ ও বাকিটা রাজনৈতিক দল থেকে নির্ধারণের বিষয়ে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে তারা দ্বিমত পোষণ করেছে।
নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার বলেন, যেহেতু এটা (উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব) রাজনৈতিক মনোনয়ন থেকেই আসবে, ফলে আলাদা করে ৫০ শতাংশ সিভিল সোসাইটির জন্য বরাদ্দ করলে বাংলাদেশ একটা শক্তিশালী সিভিল সোসাইটি হারাবে। তখন সিভিল সোসাইটির সদস্যরাও চিন্তা করবেন, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে পরবর্তী সময়ে নির্বাচনের পর উচ্চকক্ষে যাওয়া যাবে। কারণ, মনোনয়ন রাজনৈতিক দল থেকেই আসবে। এ কারণে তাঁরা বাংলাদেশের একটি স্ট্রং সিভিল সোসাইটি, যারা নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করবে, সেটা চান।
নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব মোতাবেক কোনো দল এক শতাংশ ভোট পেলে তারা উচ্চকক্ষে আসন পাবে—এটির সঙ্গে তারা একমত।
সাকিব আনোয়ার বলেন, উচ্চকক্ষে প্রতিনিধি নির্বাচনে একটি দলের ন্যূনতম ৩ শতাংশ ভোট পেতে হবে—তাঁরা এমন প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। সংবিধান সংস্কার কমিশন এ ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটের কথা বলেছে। তাঁরা এটা সমর্থন করেন। তাঁরা বলেছেন, কোনো একটা দল যদি ১ শতাংশ ভোটও পায়, তাদের একজন প্রতিনিধি উচ্চকক্ষে থাকবেন।
ঐকমত্যে পৌঁছাতে নাগরিক ঐক্য ছাড় দেবে বলে জানান সাকিব আনোয়ার। তিনি বলেন, তাঁদের অবস্থান হলো, ছাড় দিয়ে হলেও যত বেশি বিষয়ে ঐকমত্যে আসা যায়। তাঁরা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের বিপক্ষে নন। আস্থা ভোট ও অর্থবিল—এ দুটো ছাড়া সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন—এভাবে ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের কথা বলেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুনরাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যেকে কিছু কিছু ছাড় দেবে, প্রত্যাশা আলী রীয়াজের৪ ঘণ্টা আগে