আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সামনে রেখে গত ১৩ এপ্রিল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সমকাল এবং চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের সহযোগিতায় এক আলোচনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা তুলে ধরেন

তাসকীন আহমেদ, সভাপতি, ডিসিসিআই 
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিধারা অব্যাহত রাখতে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে। এর জন্য করজাল সম্প্রসারণ এবং কর ব্যবস্থাপনা সহজ করা দরকার। করপোরেট কর রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি স্বয়ংক্রিয় করতে হবে। আমদানি পর্যায়ে আগাম কর উৎপাদনকারীদের জন্য বিলুপ্তি ও বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য কমাতে হবে। অনানুষ্ঠানিক খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য ভ্যাট ১ শতাংশ এবং অন্যদের জন্য সিঙ্গেল ডিজিট হার নির্ধারণ করতে হবে। সিএমএসএমই খাতের অর্থায়নের শর্তাবলি সহজ করা দরকার। অবকাঠামো ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে নির্মাণ উপকরণ ও মেশিনারির ওপর শুল্ক এবং ভ্যাট ছাড় দেওয়া উচিত। শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। রপ্তানি আয় বাড়াতে কৃষি, চামড়া, ওষুধ, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল ও তথ্যপ্রযুক্তির মতো সম্ভাবনাময় খাতে আসন্ন বাজেটে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। 

ফোরকান উদ্দীন, সাবেক সভাপতি, আইসিএবি
দেশের জিডিপির আকার যেখানে প্রশ্নবিদ্ধ, সেখানে কর-জিডিপির আলোচনা কতটুকু যৌক্তিক, তা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে। কর আদায়ে যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়, তা অযৌক্তিক। গতবারের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত ছিল না। অন্যদিকে কর নির্ধারণ পদ্ধতি খুব দুর্বল। অন্যতম কারণ কর কর্মকর্তাদের অনেকেই হিসাবরক্ষণের আন্তর্জাতিক মান সম্পর্কে ভালো জানেন না। ফলে বিরোধ নিষ্পত্তিতে সমস্যা হয়। কর কর্মকর্তাদের হিসাবরক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দরকার। কার্যকরী কর যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। অডিট প্রক্রিয়া এবং ভ্যাট আইন সহজ করতে হবে।  

রিজওয়ান রাহমান, সাবেক সভাপতি, ডিসিসিআই 
করের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সংস্কার করলেও অটোমেশনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অটোমেশন আমাদের জন্য জরুরি হয়ে গেছে।  সমস্যা হলো, অটোমেশনের বিরোধিতা এনবিআর থেকে আসে। কারণ অটোমেশন হলে তাদের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা কমে যাবে। এটি নিশ্চিত, অটোমেশন হলে কর-জিডিপি হার বাড়বে। বর্তমান সরকার রাজনৈতিক সরকার নয়। এ সরকার যদি অটোমেশন করতে না পারে, তাহলে পরবর্তী সময়ে এই কাজ দুরূহ হয়ে যাবে। আরেকটি বিষয় হলো, এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা প্রস্তুত নন। সরকারকে ব্যবসায়ীদের মনোভাব বিবেচনায় নিতে হবে। 

আসিফ আশরাফ, এমডি, ঊর্মি গ্রুপ 
২০২২ সালে এনবিআর তৈরি পোশাক এবং টেক্সটাইল খাতে গ্রিন ফ্যাক্টরির করপোরেট কর ১০ শতাংশ এবং ১২ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। খবরের কাগজে দেখছি, এনবিআর এই হার বাড়াতে চায়। বিডার এত বড় একটা বিনিয়োগ সম্মেলনের পর নীতি ইস্যুতে যদি সরকার সরে আসে, তাহলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমার অনুরোধ থাকবে, সরকার করপোরেট করহার যাতে না বাড়ায়। মাথায় রাখতে হবে, বাজেট হচ্ছে একটি সংবেদনশীল সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাড়তি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারত থেকে কার্গো বিমানে পণ্য পরিবহনে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল হয়েছে। এর বিপরীতে ভারতের স্থলবন্দর থেকে সুতা আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। এটি করা ঠিক হবে না। 

একেএম বদিউল আলম, সদস্য, এনবিআর
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। একজন আলোচক বলেছেন, এনবিআর আগামী অর্থবছরের কর প্রস্তাব চূড়ান্ত করে ফেলেছে, এখন আলোচনা করে কতটুকু লাভ হবে। প্রকৃত তথ্য হলো, এনবিআরের কাজ শেষ হয়নি। কাজ চলছে। আলোচনায় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অনেক প্রস্তাব এসেছে। প্রস্তাবগুলো যৌক্তিক। তবে সব প্রস্তাব একসঙ্গে বাস্তবায়ন করতে গেলে রাজস্ব কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কেননা, সরকারের ব্যয়ের বড় অংশ এনবিআরকে সংগ্রহ করতে হয়। প্রস্তাবগুলো এনবিআর পর্যালোচনা করবে। বাজেট ব্যবসাবান্ধব করার চেষ্টা থাকবে। ব্যবসায়ীরাই সরকারের রাজস্ব আয়ের মূল চালিকাশক্তি। 
মতিউর রহমান, সাবেক সভাপতি, ডিসিসিআই 
শিল্প-কারখানা এক প্রকার বন্ধ। গ্যাস-বিদ্যুৎ ঠিকমতো নেই। এর মধ্যে কর অবকাশ সুবিধা বাতিল করা হচ্ছে। বছরের মাঝখানে হঠাৎ করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় নতুন শিল্প-কারখানা কীভাবে হবে। কারখানা স্থাপন করতে গেলে বাংলাদেশের মতো বিধিনিষেধ আর কোনো দেশে নেই। কাস্টমসের কারণে পণ্য আমদানিতে দেরি হলে আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে। এটি মওকুফ করতে হবে। ডলারের বিপরীতে টাকার যতটুকু মান কমেছে, সেই হারে কর কমানো হোক। ব্যাংকের সুদের হার কমাতে হবে। কর এবং ব্যাংকের সুদ দেওয়ার পর আমাদের আর কিছু থাকে? স্থানীয় এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা যাবে না। 

মোহাম্মদ হাতেম, সভাপতি, বিকেএমইএ
বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো ঘটনা। যেহেতু তারা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছে, এখন সরকারের পদক্ষেপে তা এড়ানো সম্ভব। তাদের যেসব পণ্যে উচ্চ শুল্ক রয়েছে, তা কমানো উচিত। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন নেগোসিয়েশনে যেতে হবে, তাদের দেশ থেকে আনা কাঁচামাল দিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে তারা যাতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। আগামী বাজেটে পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত কৃত্রিম তন্তুর শুল্ক ও অন্যান্য কর কমানোর সুপারিশ করেন। কেননা, বিশ্ববাজারে কৃত্রিম তন্তুর পোশাকের চাহিদা ৭৫ শতাংশ। আমাদের কৃত্রিম তন্তুর পোশাক উৎপাদনের দিকে ব্যাপকভাবে যেতে হবে। কিন্তু কৃত্রিম তন্তুর ওপর নানা রকম শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করা আছে। আমার বিশ্বাস, এবার এনবিআর এগুলো প্রত্যাহার করে নেবে। 

শেখ মোহাম্মদ মারুফ, এমডি, ঢাকা ব্যাংক
ব্যাংক খাত কঠিন সময় পার করছে। খেলাপি ঋণ,  সুশাসনের ঘাটতিসহ নানা সমস্যার কারণে এ খাত শঙ্কার মধ্যে আছে। ব্যাংক খাতে সংস্কার কীভাবে এগিয়ে নেওয়া হবে, তার সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা বাজেটে থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি। আমরা আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর কথা বলছি। ব্যাংক সংস্কারের ক্ষেত্রে বিশেষত অবসায়ন, একীভূতকরণ ইত্যাদির ক্ষেত্রে আমানতকারীদের সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। তাদের ভরসা যাতে ব্যাংকিং খাতের ওপর থাকে। অন্য খাতের তুলনায় ব্যাংকের করহার অনেক বেশি। এখন খেলাপি ঋণের হার অনেক বেশি। প্রভিশন সংরক্ষণের পরিমাণ বেশ বেড়েছে। এই অবস্থায় ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়াতে হলে করহার কমাতে হবে। 

একেএম হাবিবুর রহমান, চেয়ারম্যান, সিএসই 
পুঁজিবাজার অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এখানে আস্থার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব পেয়ে থাকে। আস্থার সংকট থাকলে বিনিয়োগকারীরা এখানে আসতে চায় না। দীর্ঘদিন ধরে যেসব কারসাজি ও অনিয়ম হয়েছে, সেগুলোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় পুঁজিবাজার ধুঁকছে। শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে বাজারে কারসাজি কমে আসবে। বিনিয়োগকারীরা ফিরে আসবে। আরেকটি বিষয় হলো, পণ্য বহুমুখীকরণের দরকার রয়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সেচঞ্জে কমোডিটি এক্সেচঞ্জ চালু করার লাইসেন্স পাওয়া গেছে। এর রেগুলেশনটা বিএসইসির অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর পর এর বিকাশের জন্য আমরা কর অবকাশ চাই। 

মমিনুল ইসলাম, চেয়ারম্যান, ডিএসই 
আমাদের অর্থনীতি এখন একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৯১ সালে ভারতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে পুঁজিবাজারকে ব্যবহার করা হয়। এতে করে পুঁজিবাজার এবং একই সঙ্গে অর্থনীতি লাভবান হয়। এই মুহূর্তে করের বোঝা বাড়িয়ে বাজেটে ঘাটতি কমানোর চেষ্টা করা উচিত হবে না। ঘাটতি অর্থায়নে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগাতে হবে। স্থানীয় এবং বহুজাতিক বিভিন্ন কোম্পানিতে সরকারের অনেক শেয়ার আছে। সরকার যদি বিশেষত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে আনতে পারে, তাহলে তা হতে পারে বড় উৎস। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমাসহ সরকারের শেয়ার থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে এবং শর্ত দেওয়া যেতে পারে যে, তিন বছরের মধ্যে তারা পুঁজিবাজারে আসবে। 

ইমরান করিম, ভাইস চেয়ারম্যান, কনফিডেন্স গ্রুপ 
দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৬৫ শতাংশ জ্বালানি আমরা আমদানি করি। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে এ হার অনেক কম। আবার জ্বালানির ওপর আমদানি পর্যায়ে কর সবচেয়ে বেশি। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বেশি হয়। অন্য দেশগুলো এলএনজি, কয়লা কিংবা অন্য জ্বালানির ওপর একই হারে কর আরোপ করে। ভারতে সব ক্ষেত্রে আড়াই শতাংশ এবং পাকিস্তানে ১১ শতাংশ। শ্রীলঙ্কায় ২০ শতাংশ। এর কারণ, বিশ্ববাজারে সব ধরনের জ্বালানির দাম ওঠানামা করে। যে সময় যে জ্বালানির দাম কম, সেই সময় ওই জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে সাশ্রয়ী হবে। আমাদের এখানে ভিন্ন ভিন্ন হারে কর আরোপ করা 
হয়। আমাদের শিল্পের পক্ষ থেকে সুপারিশ হলো, জ্বালানি আমদানির ওপর একই হারে কর আরোপ করলে সুবিধা হবে। অন্যদিকে বিদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করলে কোনো কর নেই। আমরা যারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র করেছি, আমরা কর দিচ্ছি। এই বৈষম্য দূর করা উচিত। 

আবুল কাসেম খান, সাবেক সভাপতি, ডিসিসিআই 
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য লজিস্টিক অবকাঠামো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে লজিস্টিক অবকাঠামো খাতে বছরে ২০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ দরকার। সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে সরকারের সেই সক্ষমতা নেই। এখানে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার কৌশল নিতে হবে। বাংলাদেশে পুঁজিবাজার থেকে অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়ন করা হচ্ছে না। সরকার অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নে পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারে। তাহলে ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। গত দুই বছর আমরা লজিস্টিকস নীতি নিয়ে অনেক কাজ করেছি এবং একটা নীতি দাঁড় করানো হয়েছে। আগামী ১০ বছরের জন্য জাতীয় লজিস্টিকস অবকাঠামো মহাপরিকল্পনা করা উচিত। অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিনিয়োগকারীদের জন্য পুঁজিবাজার বা বন্ড বাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে। পিপিপি কর্তৃপক্ষকে আরও সক্রিয় করতে হবে। আইসিডিগুলোকেও আরও সক্রিয় করা দরকার। 

মোঃ সবুর খান, সাবেক সভাপতি, ডিসিসিআই 
আমরা ব্যবসায়ীরা কর দিতে চাই। সমস্যা হলো, করের বাইরে আরও কিছু দিতে হয়। পথেঘাটে বিভিন্ন পর্যায়ে আরেক পক্ষকে টাকা দিতে হয়। এ থেকে আমরা মুক্তি চাই। বর্তমানে অরাজনৈতিক সরকার রয়েছে। তারা যদি একটা উদ্যোগ নেয়, সরকারকেই শুধু ট্যাক্স দিলে আর কোনো সমস্যা হবে না। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বা ঘুষ বন্ধ করতে হলে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে সুশাসন নিশ্চিত করার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। 

কবির আহমেদ, সভাপতি, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারস অ্যাসোসিয়েশন 
আমাদের সড়ক অবকাঠামো যা রয়েছে, তাকে লজিস্টিক্যাল অবকাঠামো নেটওয়ার্ক বলা যাবে না। এটি মূলত পরিবহন চলাচলের জন্য। আমার প্রস্তাব, এই নেটওয়ার্ক উন্নয়নের জন্য বড় অঙ্কের বাজেট থাকতে হবে। এছাড়া সবচেয়ে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী হলো নৌপথ। আমাদের নৌ নেটওয়ার্ক আগের চেয়ে কমে গেছে। এটি বাড়াতে হবে। ভালো লজিস্টিকসের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। 

শাহেদ মুহাম্মদ আলী, সম্পাদক, সমকাল  
সংবাদপত্রে আমরা অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে সারাবছরই প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকি। আজকের আলোচনায় বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা ভালোভাবে অবগত হলাম। আমাদের সংবাদ তৈরির ক্ষেত্রে এই আলোচনা দিকনির্দেশক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমার কাছে মনে হয়েছে, আজকের আলোচনার সারমর্ম হলো– আমরা একটি দায়বদ্ধতার অর্থনীতি চাই এবং আগামী বাজেটে তার প্রতিফলন দেখতে চাই। সমকালের পক্ষ থেকে আমি সম্মানিত আলোচক এবং উপস্থিত সবাইকে আজকের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। 

মো.

আবদুর রহমান
চেয়ারম্যান, এনবিআর 
আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত খুব কম। কর কমপ্লায়েন্স দুর্বল। এক কোটির বেশি টিআইএন আছে। রিটার্ন দেন ৪৫ লাখের মতো। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই ‘শূন্য’ রিটার্ন দেন। অন্যদিকে আমাদের ট্যারিফ হার উচ্চ, যা যৌক্তিকীকরণ দরকার। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক শুল্কহার আরও যৌক্তিক করা হবে। ব্যক্তি এবং কোম্পানির আয়করের হার কমানোর খুব বেশি সুযোগ নেই। করহার কমাতে গেলে বাজেট ঘাটতি বেড়ে যাবে। তবে কোম্পানি লোকসান করলেও কর দিতে হয়, যা নিয়ে ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে আপত্তি করছেন। এ বিষয়ে নতুন বাজেটে ব্যবসায়ীরা ইতিবাচক বার্তা পাবেন। গত ৫০ বছর ঘাটতি বাজেট দিয়ে ঋণ নেওয়ায় সুদ ব্যয় ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় রাজস্ব বাড়াতেই হবে। অটোমেশন ছাড়া আমাদের বিকল্প নেই। আমরা এ বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। কর প্রদান মোবাইল অ্যাপে আনার জন্য 
কাজ চলছে। আগামী অর্থবছর থেকে যাতে ব্যক্তি আয়কর দাতারা সবাই অনলাইনে রিটার্ন জমা দেন, সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। কোম্পানি করদাতাদেরও আমরা একই প্রক্রিয়ায় আনার চেষ্টা করছি। কর ব্যবস্থা বৈমষ্যহীন করার চেষ্টা চলছে। দীর্ঘদিন 
ধরে দেওয়া কর অব্যাহতি নতুন বাজেটে কমানো হবে।
 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী 
প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা কোন ধরনের উন্নয়ন মডেল চাই। আমরা টাকা ছাপিয়ে অর্থনীতি পরিচালনা করতে দেখেছি। আমরা বিনিয়োগ কেন্দ্রিক মডেলে যেতে পারছি না। আমরা কিন্তু বারবার ঘুরপাক খাচ্ছি। বিনিয়োগ না হলে কোনো উদ্যোগ কাজে আসবে না। বিনিয়োগ ছাড়া কর-জিডিপি অনুপাত বাড়বে না। বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ না বাড়লে কর আহরণ বাড়বে না। ভিয়েতনাম আমাদের তুলনায় এগিয়ে আছে, যার কারণ তারা বিনিয়োগকেন্দ্রিক মডেল অনুসরণ করেছে। আমাদের বর্তমান কর কাঠামোতে অসামঞ্জস্য রয়েছে। পুরো কর কাঠামো হতে হবে বিনিয়োগকেন্দ্রিক। দেশের ব্যাংকগুলোর অবস্থা খুবই
খারাপ। শেয়ারবাজার লুট হয়েছে। আমরা ভালো আর্থিক পণ্য আনার বিষয়ে নজর দিতে পারিনি। বেসরকারি খাতনির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সহায়ক কর কাঠামো, আর্থিক খাত এবং পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে হবে। 
 

মীর নাসির হোসেন
সাবেক সভাপতি, এফবিসিসিআই 
প্রতি বছর বড় আকারের বাজেট ঘোষণা করা হয়। পুরোটা বাস্তবায়ন হয় না। এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রকৃত আদায়ের মধ্যে অনেক ফারাক থাকে। বাজেট হতে হবে বাস্তবসম্মত। একই সঙ্গে শিল্পবান্ধব হতে হবে। আরেকটি বিষয় হলো, সুদহার বাড়াতে বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, বেসরকারি খাতের জন্য ঋণ গ্রহণ অত্যন্ত কঠিন হয়ে গেছে। ঋণের জন্য খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে গ্যাস-বিদ্যুতের খরচও। সার্বিকভাবে ব্যবসার খরচ অনেক বেড়েছে। এর সুরাহা করতে হবে। অন্যদিকে কর আহরণে কর্মকর্তাদের ঐচ্ছিক ক্ষমতা কমাতে হবে। বন্ধ করতে হবে হয়রানি। কৃচ্ছ্র শুধু বেসরকারি খাতের জন্য নিলেই হবে না। সরকারের মধ্যেও কৃচ্ছ্র প্রয়োজন। আগামী অর্থবছরের বাজেট ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব, অন্তর্ভুক্তিমূলক, বাস্তবমুখী এবং সময়োপযোগী হতে হবে। 
 

মাহবুবুর রহমান
সভাপতি, আইসিসি-বাংলাদেশ
বৈশ্বিক অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ নানা সংকট অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। ডলারের উচ্চ দর, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ্বালানি সংকট, কর্মসংস্থানের কম সুযোগ, বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকটসহ বিভিন্ন ইস্যু শিল্প খাতে প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থার মধ্যে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা হারাতে হবে। এই পরিস্থিতির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপ আমাদের জন্য নতুন উদ্বেগ। সরকারের উচিত, এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করা দরকার। বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে নীতিমালা করা প্রয়োজন। দেশি হোক বা বিদেশি হোক, বিনিয়োগকারীদের জন্য নীতির ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের যথাযথ সহায়তা না দিলে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা যায় না। বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নতির জন্য আগামী বাজেটের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ চাই। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এত বাড়ানো হলেও লোডশেডিং কেন হচ্ছে। কর আদায় কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় আনা খুব জরুরি। ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো উচিত। 
 

আবদুল আউয়াল মিন্টু
সাবেক সভাপতি, এফবিসিসিআই 
আমরা শুধু কর নিয়ে কথা বলি, সরকারের ব্যয় নিয়ে নীরব থাকি। সরকারি ব্যয়কে দায়বদ্ধতার মধ্যে আনতে হবে। এ জন্য আইন করতে হবে। কেননা, চুরি হয় ব্যয় করার সময়। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জনগণের জন্য কাজ করার কথা। গত ১৫ বছর তা হয়নি। আমি চাই এমন বাজেট, যা ব্যবসা ও বিনিয়োগ প্রসারে সহায়তা করে এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়ায়। বেসরকারি খাত যাতে উৎপাদন বাড়াতে পারে এবং রপ্তানিতে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে পারে, তার জন্য সহায়ক নীতি গ্রহণ করতে হবে। উৎপাদন করে যদি রপ্তানি বাড়াতে না পারি তাহলে নিজেদের বাজারে বিক্রি করতে হবে। এ কারণে সার্বিক চাহিদা বাড়ানোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। রাজস্বনীতি এবং মুদ্রানীতির মধ্যে সামঞ্জস্য থাকতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন এমন হতে হবে, যাতে সব মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হয়। সরকারি তথ্য-উপাত্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে মিথ্যা কথা বলা বন্ধ করতে হবে। রাজস্ব আহরণে এনবিআরের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। হয়রানি বন্ধ করলে রাজস্ব বাড়বে। 
 

ড. সায়েরা ইউনূস
ইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক
প্রতি বছর জুন মাসে সরকার বাজেট ঘোষণা করে। এর পরের মাস জুলাইতে বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি ঘোষণা করে। এর কারণ, বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রাকে বিবেচনায় নিয়ে ‘মানিটারি প্রোগ্রাম’ করা হয়। ফলে বাজেটের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে মুদ্রানীতি। বাজেটের ঘাটতি অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ব্যাংক এবং ব্যাংকবহির্ভূত অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। ফলে বাজেটে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটা বড় ভূমিকা থাকে। বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে বেশি পরিমাণে ঋণ নিলে বেসরকরি খাতে অর্থায়ন কমে যায়। তাছাড়া টাকা ছাপিয়ে ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। বন্ড বাজার কিংবা পুঁজিবাজার থেকে বাজেট ঘাটতি অর্থায়নের পরিমাণ বাড়ালে ব্যাংক খাতের ওপর চাপ কমবে। 

ঢাকা চেম্বারের
প্রস্তাবনা

আয়কর ও ভ্যাট 

    করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ টাকা করা এবং সর্বোচ্চ করহার ২৫%
    অটোমেটেড করপোরেট কর রিটার্ন পদ্ধতি চালু
    প্রমাণক উপস্থাপন সাপেক্ষে সব ধরনের ব্যবসায়িক খরচের সম্পূর্ণ অংশ অনুমোদনযোগ্য বিয়োজন হিসেবে বিবেচনার জন্য আয়কর আইন সংশোধন
    আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৭২(৪) সংশোধন করে হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি ও ‘আইএফআরএস ফর এসএমই’ শব্দটি সংযুক্ত করা
    আমদানি পর্যায়ে আগাম কর উৎপাদনকারীদের জন্য বিলুপ্তি
ও বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য হ্রাস
    অনানুষ্ঠানিক খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য ১% ও অন্যদের জন্য একক সিঙ্গেল ডিজিট হার নির্ধারণ
    মূসক আইনের ধারা ৪৬(২)(ক)-কে প্রত্যাহার করে যে কোনো উপকরণ ব্যয়ের জন্য রেয়াত প্রদান
    ভ্যাট সংগ্রহে অনলাইন ম্যানেজমেন্টের (ওয়েবসাইট) পাশাপাশি মোবাইল অ্যাপ তৈরি

 

আর্থিক খাত 

    ঋণের সুদহার কমানো, ঋণ শ্রেণিবদ্ধ হওয়ার সময়সীমা আরও ছয় মাস পেছানো এবং সব শিল্পের জন্য অন্তত ছয় মাসের মোরাটোরিয়াম সুবিধা  
    মন্দ ঋণ কমানোর জন্য আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং আরবিট্রেশন আইন বাস্তবায়ন 
    রপ্তানি বাজার বহুমুখীকরণ, ফ্যাক্টরিং, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পেশাভিত্তিক অভিবাসন রেমিট্যান্স প্রবাহকে আরও বেগবান করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি
    বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সিএমএসএমই অর্থায়নের মানদণ্ডের শর্তাবলি সহজ করা 
    শেয়ারবাজার শক্তিশালী করতে ভালো কোম্পানি বাজারে নিয়ে আসার জন্য প্রচারণা বাড়ানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন বাস্তবায়ন করতে ইকুইটি-ভিত্তিক শেয়ারনীতি প্রণয়ন, প্রিমিয়াম সরকারি বন্ড এবং অবকাঠামো বন্ড চালু  

 

অবকাঠামো

    অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে উচ্চ মূল্যের নির্মাণ উপকরণ ও মেশিনারির ওপর শুল্ক ও ভ্যাট ছাড় নিশ্চিত
    ইনফ্রাস্ট্রাকচার বন্ড, সুকুক ও
অন্যান্য ইনোভেটিভ ফিন্যান্সিং মডেল চালু করে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি 
    জ্বালানির দাম অনুমানযোগ্য রাখতে রপ্তানিকারক দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শিল্প ও ভোক্তাদের ওপর চাপ কমানো 
    প্রকল্প নির্বাচনে মিতব্যয়ী হওয়া এবং অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প মনিটরিং ও ইভাল্যুয়েশন করতে রিয়েল টাইম মনিটরিং সিস্টেম চালু করা 

 

শিল্প ও বাণিজ্য

    ম্যান মেইড ফাইবারভিত্তিক পোশাকশিল্পের বিকাশে কাঁচামাল, কেমিক্যাল এবং ক্যাপিটাল মেশিনারিজের শুল্ক যৌক্তিকীকরণ 
    চামড়াশিল্প উন্নয়নে কার্যকর সিইটিপি স্থাপনে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ও ব্যক্তি পর্যায়ে ইটিপি স্থাপনের জন্য সহজ শর্তে ঋণ 
    প্রান্তিক পর্যায়ে পণ্যভিত্তিক
কোল্ড চেইন অবকাঠামো উন্নয়নে বাজেটে বরাদ্দ 
    লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পপার্কে আধুনিক ইউটিলিটি সুবিধা  
    সেমিকন্ডাক্টর খাতের গবেষণা, উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন এবং বিশেষায়িত পার্কের জন্য বাজেটে আলাদা বরাদ্দ 
    ওষুধশিল্পের বিকাশে মুন্সীগঞ্জের এপিআই পার্কের অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিতের  পাশাপাশি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক মওকুফ/যৌক্তিকীকরণ 
    এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী ওষুধ, আইটি, ইলেকট্রনিক্স, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পসহ অন্যান্য খাতে আইপিআরের ব্যবহার এবং ইকোসিস্টেম তৈরিতে বরাদ্দ 
    এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে শিল্প খাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানাে 
    এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী পর্যায়ে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সব ধরনের উৎপাদনশীল খাতে এনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল অ্যান্ড করপোরেট গভর্ন্যান্স (ইএসজি) এবং আন্তর্জাতিক কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে বাজেট সহায়তা প্রদান 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় দ র করপ র ট কর র দ র জন য ন শ চ ত কর য ক ত ক কর ব যবস য় র র ব যবস য় র পদক ষ প ত র জন য ড স স আই র জন য ব র জন য স আম দ র ক ন র জন য প রস ত ব কর জ ড প প রকল প ক র যকর সরক র র ব সরক র র রহম ন অবক ঠ ম ব যবস থ পরবর ত র কম ন বর দ দ র অন ক কম ন র পর য য় হ র কম আর থ ক কর র ক ক ষমত সমস য ধরন র করহ র বছর র এলড স ত করত অবস থ ব যবহ র ওপর দরক র র অবক আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাফালের নির্মাতা সংস্থা দাসোর শেয়ারে ধস

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের মধ্যে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইসলামাবাদ। এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান রয়েছে। এ অবস্থায় রাফাল যুদ্ধবিমানের নির্মাতা সংস্থা দাসোর শেয়ারে পতন হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর ৩ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে।

সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল বলছে, আকাশযুদ্ধে রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার বিষয়ে পাকিস্তানের দাবির পর এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ফরাসি এ জায়ান্ট কোম্পানির শেয়ারদর ৩৭৩.৮ মার্কিন ডলার থেকে ৩৬২.০৫ মার্কিন ডলারে নেমে আসে।

গত মঙ্গলবার রাতে এসব বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। তবে এ নিয়ে ভারত কোনো মন্তব্য করেনি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ