দরপত্র কারসাজিতে গচ্চা সরকারি ১০ লাখ টাকা
Published: 9th, May 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ক্রয়ের দরপত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সর্বনিম্ন মূল্যের দরপত্র দাখিলকারীকে বাদ দিয়ে তিন নম্বরে থাকা কোম্পানিকে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ১০ লাখ টাকা গচ্চা গেছে। আবার দরপত্রে অংশ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দাবি করে আদালতে মামলা করেছে ওয়ালটন।
শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগের জন্য গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ৪৫টি কম্পিউটারের দরপত্র আহ্বান করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। দরপত্রে অংশ নেয় ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, সফট-টেক, স্মার্ট টেকনোলজি (বিডি) লিমিটেড, ক্রিয়েচার কম্পিউটারস, গ্লোবাল ব্র্যান্ড লিমিটেডসহ সাতটি প্রতিষ্ঠান। কম্পিউটার সরবরাহের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকারকে প্রধান করে সাত সদস্যের স্পেসিফিকেশন কমিটি গঠন করে গত বছরের ১৭ অক্টোবর। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ব্র্যান্ড, মডেল, প্রসেসর, মেমরি, স্টোরেজ, গ্রাফিক্সসহ ১৭টি বিষয় উল্লেখ করে একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেয় ওই কমিটি।
অথচ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ এর ২৯(৩) ধারায় আছে– কারিগরি টেন্ডার আহ্বানে স্পেসিফিকেশনে ট্রেডমার্ক, পেটেন্ট, নকশা, উৎপাদনকারী বা সরবরাহকারীর নাম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা যাবে না। কিন্তু এসব বিধানের তোয়াক্কা না করে মডেল, স্পেসিফিকেশন ও কোম্পানির নাম উল্লেখ করে দরপত্র আহ্বানের সুপারিশ করেন স্পেসিফিকেশন কমিটি ও সিনিয়র প্রোগ্রামার নাসির উদ্দিন।
এ বিষয়ে কমিটির আহ্বায়ক মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ভালো জিনিস কিনতে গ্লোবাল কোম্পানির নাম উল্লেখ করেছি।’
এদিকে কম্পিউটার ক্রয়ের কারিগরি স্পেসিফিকেশন মূল্যায়নের জন্য ২ সদস্যের মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়। তারা সাত কোম্পানির জিনিসপত্র মূল্যায়ন করে মতামত দেন। বলা হয়, ওয়ালটন ডিজি-টেক বাংলাদেশি ব্র্যান্ড। ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ বলেছেন ডেল বা এইচপির সমমানের তারা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া শর্ত পূরণ করতে পারেনি ওয়ালটন। শর্ত অনুযায়ী ওয়ালটনকে বাদ দিতে পারেন।
কারিগরি স্পেসিফিকেশন মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক সাইফুর রহমান বলেন, ‘কে শর্ত পূরণ করেছে সেটা আমাদের বিষয় না। আমরা শুধু যেসব মানদণ্ড নির্ধারণ করা আছে, সে অনুযায়ী টেকনিক্যাল দিকগুলো যাচাই করেছি।’
পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ এর ৪৮(২) ধারা অনুযায়ী টেন্ডার পেয়ে থাকে সবচেয়ে কম মূল্যের দরপত্র দাখিলকারী প্রতিষ্ঠান। কুবির কম্পিউটার ক্রয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম দরপত্র ছিল ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রির, যা ৪৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু এ কোম্পানিকে টেন্ডার না দিয়ে তিন নম্বরে থাকা স্মার্ট টেকনোলজিকে দেওয়া হয়। যাদের দরপত্র ছিল ৫৬ লাখ ৩৪ হাজার টাকার।
সর্বনিম্ন দরপত্র হওয়ার পরও ওয়ালটন কোম্পানিকে টেন্ডার না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানির চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ বলেন, ‘আমরা সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের টেন্ডার দেয়নি। এ বিষয়ে সিনিয়র প্রোগ্রামারের (নাসির) কাছে কয়েকবার চিঠি ও ই-মেইল করে জানতে চাইলেও কোনো রেসপন্স করেননি। এতে আমাদের কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’
ওয়ালটনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটির আপিল বিভাগের রিভিউ প্যানেল জানান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কম্পিউটার ক্রয়ের বিনির্দেশে কয়েকটি ব্র্যান্ড উল্লেখ করলেও সমতুল্য শব্দটি যোগ করায় প্রসেসর ও গ্রাফিক্স ব্যতীত অন্যত্র বড় ধরনের ব্যত্যয় হয়েছে বলে মনে হয়নি। তবে প্রশাসনের কাছে ওয়ালটন কারণ জানতে চাইলে তাদের ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এ ধরনের মাইনর ডেভিয়েশনকে উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরপত্র উপেক্ষা করে নন-রেসপনসিভ হিসেবে মূল্যায়িত করে সরকারের ৯ লাখ ৯৪ হাজার টাকার ক্ষতি করা হয়েছে। এ ক্ষতির দায় টেকনিক্যাল কমিটির তিন সদস্যের ওপর বর্তায়। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ এর ৬০(৩)ঙ বিধি মোতাবেক দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে ওয়াল্টন। এ ছাড়া আপিলকারীর নিরাপত্তা জামানত ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তারা।
ওয়ালটনের ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদুর রহমান রাদ বলেন, কোম্পানি একটি দরপত্রকে কেন্দ্র করে অনেক টাকা বিনিয়োগ করে। এই টাকার সুদ আসে। তবে টাকার পরিমাণ জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
দরপত্র কম হওয়ার পরও কাজ না পাওয়ার বিষয়ে টেন্ডারের প্রকিউরমেন্ট কমিটির এনটিটি ও সিনিয়র প্রোগ্রামার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যে শর্ত উল্লেখ করেছিল তা ওয়ালটন ডিজি-টেক পূরণ করতে পারেনি। এ ছাড়া ২ নম্বরে থাকা সফট টিচের ব্যবসায়িক ছাড়পত্র না থাকায় তাদের দেওয়া হয়নি। স্মার্ট টেকনোলজি শর্ত পূরণ করায় তাদের টেন্ডার দেওয়া হয়।
ওয়ালটন ডিজি-টেক কোম্পানিকে কেন নন-রেসপন্স করা হয়েছে, জানতে চাইলে মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, দরপত্র চলাকালীন তারা (ওয়ালটন) বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তাদের জিনিসগুলো ক্রয় করার জন্য বলেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ।
তিন নম্বরে থাকা কোম্পানিকে কেন টেন্ডার দেওয়া হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন কমিটির মানদণ্ডের আলোকে কম্পিউটার ক্রয়ের কারিগরি স্পেসিফিকেশন মূল্যায়ন কমিটি যেভাবে মতামত দিয়েছে সেভাবে নির্ধারণ করেছেন তারা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র দরপত র ম হ ম মদ র জন য অন য য় কম ট র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নিভৃতচারী কৃষকের আর্তনাদ কি আমরা শুনছি
কৃষি এবং কৃষকই এ দেশের প্রাণ—এই ধ্রুব সত্যটি নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু বেদনাদায়ক বাস্তবতা হলো, মধ্যস্বত্বভোগী ও কপট ব্যবসায়ীদের কারণে কৃষকের স্বার্থ বরাবরই উপেক্ষিত। নীতিনির্ধারক ও মূলধারার রাজনীতিবিদদের নীরবতা এবং কৃষকের সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি জনগুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যকে ‘ট্রল’ করার মতো দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতা আমাদের জাতীয় সংবেদনশীলতার অভাবকেই প্রকটভাবে তুলে ধরে।
করোনাকালীন ভয়াবহ সংকটে কৃষি যেভাবে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করে অর্থনীতিকে রক্ষা করেছে, তা আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না। অথচ এত কমিশন গঠিত হলেও, কৃষি কমিশন গঠন করা হয়নি। এর মূল কারণ সম্ভবত নিভৃতে কাজ করে যাওয়া কৃষক বা কৃষিশ্রমিকের মূল্য এই সমাজে অনেক সস্তা।
বর্তমানে কৃষি খাত নিয়ে যত আলোচনা—তা সবই যেন নিরাপদ কৃষি, বাণিজ্যিক কৃষি, কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ, ভ্যালু চেইন ও উৎপাদন বৃদ্ধিকেন্দ্রিক। প্রধান স্টেকহোল্ডার কৃষক ও তাঁর জীবন-জীবিকার স্বার্থ প্রায়শই থেকে যাচ্ছে অন্তরালে। অন্যান্য পেশাজীবীর মতো কৃষকের কোনো সক্রিয় সংগঠন নেই। চাষাবাদ ফেলে ঢাকা শহরে দাবি আদায়ের আন্দোলনে নামাও তাঁদের পক্ষে অসম্ভব, কারণ তাতে তাঁদের পেটে ভাত জুটবে না।
অথচ কৃষকেরা শুধু অর্থনৈতিকভাবেই নয়, শারীরিকভাবেও চরম ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ক্যানসারে আক্রান্ত পুরুষ রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পেশায় কৃষক! মাস্ক, গ্লাভস বা রাবারের জুতা চোখে না দেখা, ছেঁড়া গামছা মুখে পেঁচিয়ে বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করা ভূমিহীন মানুষটা আমাদের কাছে হয়তো ‘কৃষিশ্রমিক’, ‘কৃষক’ নন; কিন্তু খাদ্য উৎপাদনচক্রে তাঁর অবদান সবচেয়ে মৌলিক এবং তাঁর স্বাস্থ্যঝুঁকিও সবচেয়ে বেশি।
সমাজের চোখে ‘কৃষক’ বলতে যখন বিঘার পর বিঘা জমির মালিক, শিক্ষিত বাণিজ্যিক উদ্যোক্তাদের বোঝানো হচ্ছে, তখন প্রান্তিক, নিরক্ষর মানুষগুলোর অস্তিত্ব ও সংগ্রাম প্রায় অস্বীকৃত থেকে যাচ্ছে।
আবার কৃষক ও কৃষির সমস্যা শুধু অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত নয়, এর শিকড় প্রোথিত আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাতেও। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বাণিজ্যিক কৃষিকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আমাদের শিক্ষায় কৃষির নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক দিকগুলো প্রায় উপেক্ষিত।
কৃষকের নিবিড় জীবন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্ম প্রায়শই অন্ধকারে থাকছে। গান গাইতে গাইতে ধান কাটা, ধান লাগানো বা নবান্ন উৎসব—এসব প্রথা ও রীতিনীতি কেবল সংস্কৃতি নয়, কৃষকের জীবনের আনন্দ, দুঃখ ও শ্রমের প্রকাশ। পাঠ্যক্রমে এসবের অনুপস্থিতি কৃষি ও কৃষক সম্পর্কে নাগরিকসচেতনতা বৃদ্ধির পথে এক বড় বাধা।আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কৃষির উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো আলোচনা বা গবেষণা নেই। কীভাবে নারীর হাত দিয়ে কৃষির সূচনা হয়েছিল—ফসলের বীজ সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বপন ও পরিচর্যার প্রথম ধাপগুলোয় নারীর যে ঐতিহাসিক ভূমিকা ছিল, সেই গুরুত্বপূর্ণ নৃতাত্ত্বিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক দিকগুলো পড়ানো হয় না বললেই চলে।
বাংলার কৃষিকাজে লোকায়ত জ্ঞানের অন্যতম ধারক খনার বচন প্রাসঙ্গিক হলেও আবহাওয়া, ফসল রোপণের সময়, মাটির গুণাগুণ–সম্পর্কিত হাজার বছরের পরীক্ষিত প্রথাগত প্রজ্ঞা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রমে স্থান পায় না। এর বদলে শুধু স্থান পায় আধুনিক প্রযুক্তি ও বাণিজ্যিকীকরণের তত্ত্ব।
ধান লাগানো থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াকরণ, বীজ সংরক্ষণ, ফসল মাড়াই ও ঝাড়াইয়ের মতো অনেক ধাপে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণ বাংলাদেশের কৃষিতে অপরিহার্য অনুষঙ্গ। বিভিন্ন গবেষণায় এই সত্য বারবার প্রমাণিত হয়েছে। অথচ এই বিশাল শ্রমশক্তি ও তাঁদের সমস্যা নিয়ে মূলধারার একাডেমিক আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় না। যদিও সস্তা শ্রম আর অধিকার বঞ্চনার মতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কৃষিতে নারীর উপস্থিতি বাড়ছে।
কৃষকের নিবিড় জীবন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্ম প্রায়শই অন্ধকারে থাকছে। গান গাইতে গাইতে ধান কাটা, ধান লাগানো বা নবান্ন উৎসব—এসব প্রথা ও রীতিনীতি কেবল সংস্কৃতি নয়, কৃষকের জীবনের আনন্দ, দুঃখ ও শ্রমের প্রকাশ। পাঠ্যক্রমে এসবের অনুপস্থিতি কৃষি ও কৃষক সম্পর্কে নাগরিকসচেতনতা বৃদ্ধির পথে এক বড় বাধা।
কৃষির এই বহুমুখী সংকট থেকে মুক্তি পেতে হলে শুধু যান্ত্রিকীকরণ আর উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে নজর দিলেই চলবে না। প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী নীতিগত পরিবর্তন।
যা করা যেতে পারে:
ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ: সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ফসল কেনার সরকারি উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত ও মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য কমাতে শক্তিশালী ‘ভ্যালু চেইন’ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ: প্রান্তিক কৃষক ও কৃষিশ্রমিকদের জন্য বিনা মূল্যে মানসম্পন্ন কীটনাশকপ্রতিরোধী মাস্ক, গ্লাভস এবং সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম সরবরাহ করা।
শিক্ষায় কৃষির সাংস্কৃতিক পাঠ অন্তর্ভুক্তিকরণ: উচ্চশিক্ষা ও স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে কৃষির উৎপত্তি, নৃতত্ত্ব, নারীর ভূমিকা, লোকায়ত জ্ঞান (যেমন খনার বচন) এবং কৃষকের জীবন ও সংস্কৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
কৃষিশ্রমিকের স্বীকৃতি: নারীর কৃষিভিত্তিক শ্রমের স্বীকৃতি প্রদান করা। কৃষিশ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনী ও স্বাস্থ্যবিমার ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় আলাদা বরাদ্দ রাখা।
সর্বোপরি নীতিগত সদিচ্ছা এবং কৃষকের ন্যায্য অধিকার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধিই পারে আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার মূল ভিত্তি—নিভৃতচারী কৃষককে তাঁর প্রাপ্য সম্মান ও স্বীকৃতি দিতে। কৃষি ও কৃষক সম্পর্কে প্রত্যেক নাগরিকের সচেতনতা বৃদ্ধি এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
মো. জুবায়ের ইবনে কামাল অফিসার, জনতা ব্যাংক পিএলসি। প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়