জাসদের সব অংশের ঐক্য করে আমরা ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবো: ব্যারিস্টার ফারাহ খান
Published: 10th, May 2025 GMT
জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খানের ভাতিজি ব্যারিস্টার ফারাহ খান বলেছেন, ‘জাসদ ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। একটি বা দুটি আসনের জন্য বড় বড় দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার দরকার নেই। আমরা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সব অংশকে এক করে এবার ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবো।’
শনিবার দুপুরে রংপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের ঐক্যের লক্ষ্যে বিভাগীয় মতবিনিময় সভায় মূখ্য উদ্যোক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ফারাহ খান বলেন, ‘১৯৭১ সালে যে স্বপ্নের সোনার বাংলার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাধীনতার পরে দেশের গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিল, মানুষের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমরা এমন স্বাধীনতা চাইনি বলেই সিরাজুল আলম খান দাদার নেতৃত্বে ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ গঠিত হয়েছিল। সেসময় এই জাসদ একটি বটগাছের ভূমিকায় থাকলেও ব্যক্তি স্বার্থে আজ তা খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে পরগাছা হয়ে গেছে। তাই এখন সময় এসেছে, জাসদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।’
সারা দেশে ঐক্য করার জন্য জাসদের সব অংশের নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভার অংশ হিসেবে খুলনা ও বরিশালের পর রংপুরের সভায় ব্যারিস্টার ফারাহ খান বলেন, ‘‘জাসদ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ছিল গণতন্ত্র রক্ষা করা, কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো- আমাদের জন্মের এই ৫৩ বছরে আমরা আমাদের কোনো সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদককে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত করতে পারিনি। আমাদের নেতারা সিলেকশনের মাধ্যমে পদে বসেছেন। কিন্তু এবার আমরা কর্মীরা মিলে জাসদে ইতিহাস গড়ব। আমরা কর্মীরা নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের নেতা নির্বাচন করব। ‘ব্রাকেট বন্দি’ জাসদকে ঐক্যবদ্ধ জাসদে পরিণত করতে হবে। তিনি বলেন, জন্মলগ্ন থেকে বিভিন্ন সরকার আমাদের ওপর বিভিন্ন সময় অন্যায়-অবিচার করলেও আমরা কখনও আওয়ামী লীগ, কখনও বিএনপি, আবার কখনও এরশাদের হাতকে শক্তিশালী করেছি, নিজেদের হাতকে শক্তিশালী করতে পারিনি।’’
ব্যারিস্টার ফারাহ খান আরও বলেন, ‘আমরা যদি বিএনপি-জামায়াত ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বাঁধতে পারি, তবে কেন ঐক্যবদ্ধ জাসদ হতে পারব না। কেন সব ভুল ও মান-অভিমান ভুলে নিজেদের ভাইদের সঙ্গে আমরা এক হতে পারব না। আমাদের জাসদের কোনো অংশ বা নেতারা নতুন প্রজন্ম তৈরি করেননি। সিরাজুল আলম খান সেটি উপলব্ধি করে নিজে উদ্যোগী হয়ে আমাকে তার জীবদ্দশায় এই দলের রাজনীতিতে প্রবেশ করিয়েছেন। আমি নিউক্লিয়াস প্রধান স্বাধীনতার রুপকার জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খানের ভাতিজি। জাসদের ঐক্য নিয়ে তার সঙ্গে আমার বিস্তর কথা হতো, আমি তাকে কথা দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘বড় দলের নেতারা আমাদের একটি-দুটি আসন দেয়, আর আমরা তাতেই খুশি হয়ে যায়। কিন্তু জাসদই হতে পারতো এই দেশের মূল কান্ডারী। তাই এবারে আমাদের লক্ষ্য হোক, জাসদের ঐক্য।’
বীরমুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাসদ নেতা সাব্বির আহমেদ, আব্দুল হাই, আলহাজ আমিনুল ইসলাম রাজু, শফিয়ার রহমান, ইসমাইল হোসেন বাদল, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মুকুল প্রমুখ। এসময় রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা জাসদের বিভিন্ন গ্রুপের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থেকে দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষায় ঐক্যবন্ধ জাসদ গড়ে তোলার পক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জ ল আলম খ ন স ব ধ নত আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের বিরোধিতাকারীদের আস্ফালন মেনে নেওয়া হবে না: গণতন্ত্র মঞ্চ
সম্প্রতি রাজধানীর শাহবাগে আন্দোলনের সময় দেওয়া কিছু স্লোগান এবং জাতীয় সংগীত থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, স্বাধীনতাসংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করার প্রচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে একটি পক্ষ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামবিরোধী স্লোগান দিয়েছে। এমনকি প্রকাশ্যে জাতীয় সংগীতের অবমাননা করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, যারা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তাদের অনুসারী ও পৃষ্ঠপোষকদের বাংলাদেশের জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। তাদের আস্ফালন বাংলাদেশের জনগণ সর্বাত্মকভাবে প্রতিহত করবে।
বিবৃতিতে সই করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম।
আরও পড়ুনরাজু ভাস্কর্যে সমবেত কণ্ঠে গাওয়া হলো জাতীয় সংগীত২০ ঘণ্টা আগে