বিলম্বে হলেও সরকার আ. লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ‘বন্ধ রাখার’ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিএনপি আনন্দিত
Published: 11th, May 2025 GMT
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ‘বন্ধ রাখার’ সরকারি সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আনন্দিত বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আনন্দিত যে, বিলম্বে হলেও গতরাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফ্যাসীবাদী সরকারের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দ্রুত করার এবং বিচারকার্য নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ ও তার সাথে যুক্ত সকল সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন চলছিল। প্রথমে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার বিকেল থেকে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন।
এর মধ্যে গতকাল শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচারকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এই সিদ্ধান্তে দলের আনন্দিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রাসঙ্গিক আইন সংশোধন করে ফ্যাসিবাদী দলের বিচার করার সিদ্ধান্তকে সঠিক মনে করেন তারা। তবে বিএনপির দাবি মেনে আরও আগেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে চাপের মুখে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো বিব্রতকর ও অনভিপ্রেত অবস্থায় সরকারকে পড়তে হতো না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ও সর্বশেষ ১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে বিএনপি তাদের লিখিত পত্রে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসাবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা’ এবং ‘ফ্যাসিবাদী দল ও সেই দলীয় সরকারের সঙ্গে যুক্তদের বিচার দ্রুত করে দেশের রাজনীতির ময়দানকে জঞ্জালমুক্ত করার’ দাবি জানিয়েছিল বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে দলটির মহাসচিব।
এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আলোচনায় আমরা স্পষ্ট করে বলেছিলাম, আইনি প্রক্রিয়াতেই ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব ও উচিত। বিভিন্ন সভা, সমাবেশ ও আলোচনায় আমরা আমাদের এসব দাবি বার বার উত্থাপন করেছি।’
বিএনপি প্রশাসনিক আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এই কারণেই বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের আগ মুহূর্তে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছিল বিএনপি।
বিবৃতিতে দ্রুত নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জনগণ তাদের ভোটাধিকার তথা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ফ্যাসিবাদের পতনের জন্য গুম, খুন, জেল, জুলুম সহ্য করেও অব্যাহত লড়াই করেছে। তাদের সেই দাবি এখনও অর্জিত হয়নি।
নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ (রূপরেখা) ঘোষণা না হওয়ায় জনমনে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে, সে ব্যাপারে সচেতন হওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফখর ল ইসল ম উপদ ষ ট আনন দ ত আওয় ম ব এনপ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজবাড়ীতে মির্জা ফখরুলের নামে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান, বিএনপি নেতাকে নোটিশ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে রাজবাড়ী পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকমল হোসেন চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলীর স্বাক্ষরে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোটিশে বলা হয়, গতকাল বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড়-আহ্লাদিপুর রাজবাড়ী-ফরিদপুর সড়কে রাজবাড়ী-১ আসনের মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে পৌর বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী মিছিল শুরু করেন। সেখানে আকমল হোসেন চৌধুরী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে ‘অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ স্লোগান’ দেন। এই স্লোগানের ভিডিও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে এবং জেলা বিএনপির নজরে আসে।
নোটিশে আরও বলা হয়, পৌর বিএনপির দায়িত্বশীল নেতা হয়েও তিনি দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন এবং গুরুতরভাবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তাই নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাখ্যা না পেলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে আজ সোমবার দুপুরে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব না পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।