আড়াইহাজারে এক ব্যাক্তির জায়গা জবর দখল করার পর তার আর পৃথিবীতে নিজের কোন জায়গা জমি নাই বলে অপমান করায় রাগে দূঃখে কিটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বিল্লাল হোসেন (৪৫) নামে এক ব্যক্তি।

এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী জামেলা আক্তার বাদী হয়ে রোববার বিকেলে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েণে  শনিবার রাতে  উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের গহরদী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।  

জানা গেছে, ওই গ্রামের বিল্লাল হোসেনের বাড়ী ঘরে ৮ মে সকাল অনুমান ৯.

০০ টায় একই গ্রামের মৃত তাইজুদ্দিনের ছেলে আলমগীর , মৃত আবুল হোসেনের ছেলে হাসানাত, খায়ের গং হামলা চালায় এবং বাড়ী ঘর ভাংচুর করে জবরদখল করে তারা।

হামলার সময় বিল্লালের ঘর থেকে এক ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার সহ অন্যান্য মালামাল লুটপাট করে এবং ভাংচুর করে প্রায় ৬ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে হামলাকারীরা।

 এর পর ১০ মে শনিবার সকাল অনুমান ১০টার  দিকে বিল্লাল এবং তার স্ত্রী জামেলা আক্তার তাদের বাড়ীর সামনে অবস্থান কালে আলমগীর গং তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তাদের বাড়ী ঘর নাই বলে ছোট করে কথা বলে। 

এতে রাগে দুঃখে, অভিমানে বিল্লাল হোসেন কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে প্রথমে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে তার অবস্থা গুরুতর বিধায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। 

ঢাকায় নেয়ার পথে তার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে পড়লে তাকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রো-একটিভ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে বিল্লাল হোসেন মারা যান।

এ ব্যাপারে নিহত বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী জামেলা আক্তার বাদী হয়ে আলমগীর, হাসনাত, খায়েরসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আড়াইহাজার থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

অভিযুক্ত খায়ের জানান, জমি বিষয়ে আগেই মিমাংসা হয়ে গেছে। স্ত্রীর সাথে অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে। 

আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসিরউদ্দিন জানান, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণসহ পাঁচ কারণে জোড়া খুন

এক মাস আগে চট্টগ্রামে প্রাইভেট কারে গুলি চালিয়ে দুজনকে খুনের নেপথ্যে পাঁচটি কারণ উঠে এসেছে পুলিশের তদন্তে। এগুলো হলো পোশাক কারখানা থেকে ঝুট কেনাবেচার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার, ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের দলের শক্তি প্রদর্শন, সাজ্জাদের ‘রাজত্ব’ টিকিয়ে রাখা ও সাজ্জাদকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে সহযোগিতা করা।

জোড়া খুনের পরিকল্পনা ও নেতৃত্ব দেওয়া কারাগারে থাকা সাজ্জাদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ এ তথ্য জানতে পারে। ৩ মে নোয়াখালীর হাতিয়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজির ১৩টি মামলা রয়েছে।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নগরের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় অর্ধশত ছোট-বড় শিল্পকারখানা রয়েছে। বেশ কিছু বড় বড় পোশাক কারখানাও রয়েছে সেখানে। এসব কারখানা থেকে ঝুট কেনাবেচা নিয়ে ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের প্রতিপক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্ব রয়েছে। সাজ্জাদ ও তাঁর অনুসারীরাই এগুলো নিজেদের কবজায় রাখতে চান। সাজ্জাদ কারাগারে থাকলেও তাঁর অন্যতম সহযোগী মেহেদী হাসান তাঁদের প্রতিপক্ষ ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ও তাঁর লোকজনকে লক্ষ্য করে প্রাইভেট কারে গুলি চালান।

৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান সরোয়ার। একসময় সরোয়ার ও সাজ্জাদ দুজনই বিদেশে পলাতক সাজ্জাদ আলী খান ওরফে বড় সাজ্জাদের অনুসারী ছিলেন। সরোয়ার বড় সাজ্জাদের কথামতো না চলায় বিরোধ বাঁধে। এরপর ছোট সাজ্জাদকে দিয়ে বিদেশে বসে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের নির্দেশনা দিয়ে আসছেন বড় সাজ্জাদ। জানতে চাইলে সরোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এখন কিছুর মধ্যে নেই। ছোটখাটো ব্যবসা করে চলি। আমাকে সরিয়ে ছোট সাজ্জাদ তাঁর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চান।’

জোড়া খুনের ঘটনাটি ঘটে গত ৩০ মার্চ রাতে। রুপালি রঙের একটি প্রাইভেট কার কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া এক্সেস রোডে আসতে থাকে। গাড়িটি শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর পেছন থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেল সেটিকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। প্রাইভেট কারের ভেতর থেকেও মোটরসাইকেল আরোহীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। গুলিতে অনেকটা ঝাঁঝরা হয়ে যায় গাড়িটি। নিহত ব্যক্তিরা হলেন বখতিয়ার হোসেন (৩০) ও মো. আবদুল্লাহ (৩২)। তাঁরা ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। গাড়িতে সরোয়ারও ছিলেন, তবে তিনি বেঁচে যান। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের করা মামলায় বলা হয়েছে, দুই ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও সরোয়ার হোসেনের বিরোধের জের ধরে আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ায় জন্য দায়ী করে ক্ষুব্ধ হয়ে সরোয়ার ও তাঁর অনুসারীদের ওপর এই হামলা চালানো হয়।

সন্ত্রাসী সাজ্জাদ, তাঁর স্ত্রী তামান্না শারমিনকে হুকুমের আসামিসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে বাকলিয়া থানায় মামলা করেন নিহত বখতিয়ারের মা ফিরোজা বেগম। মামলার বাকি পাঁচ আসামি হলেন মো. মেহেদী হাসান, মোবারক হোসেন, মো. খোরশেদ, মো. রায়হান ও মো. বোরহান। তাঁরা সবাই সাজ্জাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, জোড়া খুনের ঘটনায় সাজ্জাদ হোসেন, মেহেদী হাসান, মো. সজীব, এহতেশাম রাফাত, মো. বেলাল ও মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে সজীব ঘটনার আগে বায়েজিদ বোস্তামী কয়লার ঘর এলাকায় চার ঘণ্টা হাসানের নেতৃত্বে বৈঠক করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে পুরো ঘটনার পরিকল্পনা ও খুনের বর্ণনার বিস্তারিত উঠে এসেছে। জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মোজাম্মেল হক আরও বলেন, মেহেদী হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। জোড়া খুনের ঘটনার সময় পিস্তল হাতে, কালো গেঞ্জি ও সাদা কেডস পরে ছিলেন হাসান। সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে তাঁকে শনাক্ত করা হয়েছে।

আট খুনের মামলার আসামি বিদেশে পলাতক ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ আলী খান ওরফে বড় সাজ্জাদই ছোট সাজ্জাদকে দিয়ে সন্ত্রাসী দল পরিচালনা করেন। ছোট সাজ্জাদকে বড় সাজ্জাদের উপহার হিসেবে অস্ত্রও দেওয়ার তথ্যও পেয়েছেন বলে জানান নগর পুলিশের উপকমিশনার আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের পর সাজ্জাদ তাঁর কাছে থাকা অস্ত্রগুলো হাতবদল করে ফেলেন, যার কারণে রিমান্ডে সাজ্জাদ অস্ত্রগুলোর তথ্য দিলেও সেখানে পাওয়া যায়নি। তবে সাজ্জাদ ও তাঁর সহযোগীদের অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিলম্বে হলেও সরকার আ. লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ‘বন্ধ রাখার’ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিএনপি আনন্দিত
  • পলোগ্রাউন্ড ময়দানে শুরু হয়েছে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ
  • ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণসহ পাঁচ কারণে জোড়া খুন
  • ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৫ নেতা গ্রেপ্তার