সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজার উপজেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তঃউপজেলা সড়ক দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার হচ্ছে না। উপজেলা প্রকৌশল অফিস এ সড়কগুলো সংস্কারের জন্য শুধু প্রস্তাব পাঠিয়ে দায় সারছে। এর বাইরে কার্যত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় বিয়ানীবাজারসহ কয়েক উপজেলাবাসী নিত্য ভোগান্তিতে জর্জরিত।
সড়ক দুটির একটি বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ উপজেলার সংযোগ সড়ক মাথিউরা-বাণিগ্রাম। অপর সড়কটি হচ্ছে বিয়ানীবাজার-জকিগঞ্জ উপজেলার সংযোগ সড়কের জিরো পয়েন্ট-মইয়াখালি।
২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এ দুই সড়ক পুনরায় ২০২৪ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সড়কগুলোর ইট-সুরকি উঠে গিয়ে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। গর্ত, খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে বেহাল সড়ক দুটি। সংস্কারের জন্য ভুক্তভোগী এলাকাবাসী বারবার দায়িত্বশীলদের কাছে ধরনা দিলেও তাদের দুর্দশা লাঘব হয়নি। যার ফলে প্রতিদিন চলাচলের পাশাপাশি রোগী পরিবহনেও বেগ পেতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশল অফিস জানায়, বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ সংযোগ সড়কের মাথিউরা থেকে বাণিগ্রাম পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে ২০২৪ সালের মে মাসে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। আরআইডি-২ প্রকল্পের আওতায় সড়ক সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এ প্রস্তাবে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ কোটি টাকার বেশি। চলতি বছরের মার্চে এসে আরআইডি-২ প্রকল্প স্থগিত হওয়ায় বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ সংযোগ সড়কের মাথিউরা থেকে বাণিগ্রাম পর্যন্ত সড়ক সংস্কার অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
অপরদিকে বিয়ানীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের শেওলা জিরো পয়েন্ট থেকে মইয়াখালি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য চলতি বছরের মার্চে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। দুই মাস অতিবাহিত হলেও এ প্রস্তাব এখন গৃহীত হয়নি।
এ উপজেলার প্রবাসীরা প্রতি মাসে দুইশ কোটি টাকার বেশি রেমিট্যান্স পাঠান। অথচ উপজেলার প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে গ্রামীণ সড়কের ভঙ্গুর দশা দেখে তারা হতাশ। সম্প্রতি পরিবার নিয়ে ইংল্যান্ড থেকে আসা মাথিউরা খলাগ্রামের নিজাম উদ্দিন বলেন, পৌরশহরে অটোতে করে যাওয়ার উপায় নেই। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুধু সড়কের এ অবস্থার কারণে ছেলেমেয়েরা দেশে আসতে চায় না। 
মাথিউরা-বাণিগ্রাম সড়কে চলাচলের দুর্ভোগ লাঘবে দায়িত্বশীলদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান মাথিউরা পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুর রব। তিনি বলেন, ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় সড়কের ওপর ৫ ফুটের বেশি পানি ছিল। সড়কজুড়ে গর্ত। বৃষ্টি হলে জমে থাকে কাদাপানি। একই এলাকার পংকি মিয়া বলেন, দুই বন্যায় এ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গোলাপগঞ্জ কিংবা সিলেট শহরে যেতে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে।
একই রকম ভোগান্তির কথা জানান চরিয়া, খাড়াভরা, মইয়াখালিসহ পাঁচ গ্রামের বাসিন্দারা। ভুক্তভোগী এলাকার মাছুম আহমদ বলেন, প্রায় পাঁচ বছর থেকে এ সড়কে ধুঁকছে এলাকাবাসী। জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সড়ক সংস্কার বিষয়ে কোনো আশ্বাস পাচ্ছেন না। এই কয় বছরের মধ্যে সড়ক সংস্কার করার জন্য দায়িত্বশীলদের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।
জনগুরুত্বপূর্ণ এই দুই সড়ক সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর কথা জানিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী দিপক কুমার দাস বলেন, মাথিউরা-বাণিগ্রাম পর্যন্ত সড়কের প্রস্তাব পাঠানো হলেও যে প্রকল্পের আওতায় এটি সংস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল সেই প্রকল্প স্থগিত হয়ে গেছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের সম্ভাবনা কম। জিরো পয়েন্ট-মইয়াখালি সড়ক সংস্কারের জন্য দুই মাস আগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন না পেলে বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ কাজের অর্থ থেকে  কাজ করা হবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক সড়ক স স ক র র জন য প রস ত ব প ঠ ন স য গ সড়ক গ ল পগঞ জ উপজ ল র প রকল প সড়ক র এ সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে চান মনন

‘আপনার জীবনে দারুণ এক মুহূর্ত এটা। একটা পুরস্কার জিতলেন, যে পুরস্কার দাবার চৌকোনা বোর্ডে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি’—কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনলেন মনন রেজা। উত্তর দিলেন খুবই ছোট্ট করে, ‘জি।’

এরপর তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হলো গত বছর তাঁর অর্জন ও সাফল্যের কথা। ২০২৪ সালে জাতীয় দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদের ৪৩ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে হয়েছেন দেশের সর্বকনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক মাস্টার। ওপর–নিচ মাথা ঝাঁকিয়ে এবার বললেন, ‘হুম।’

এসবই মনন করেছেন ১৫ বছরে পা রাখার আগে। এখনো তাঁর সামনে পুরো জীবন পড়ে আছে—দাবার বোর্ডে মনন আরও কত কী করবেন ভবিষ্যতের সেই জীবনে, এমন আলোচনা দেশের দাবার অঙ্গনে। সেই সম্ভাবনার কথা ভেবেই মননকে সিটি গ্রুপ–প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার ২০২৪–এর বর্ষসেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

মননের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী আর এখন কীই–বা চান?’ মনে হচ্ছিল, আন্তর্জাতিক মাস্টার হওয়া মনন নিশ্চয়ই গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার স্বপ্নের কথাই বলবেন, যেটা থেকে খুব বেশি দূরেও নন তিনি। কিন্তু মনন ওই প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘আমি তো অনেক কিছুই করতে চাই। কিন্তু চাইলেই তো আর পাওয়া যাবে না। এর জন্য পরিশ্রম করতে হবে। লাগবে অবকাঠামোগত সহযোগিতাও।’

মননের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, পাশে বসে ছিলেন অন্য এক খেলার বর্ষীয়ান এক ক্রীড়াবিদ। তিনি একটু অবাক হয়েই বলে উঠলেন, ‘ছেলেটা ওর বয়সের চেয়ে বড়!’

মনন রেজার হাতে পুরস্কার তুলে দেন ২০০৪ সালের উদীয়মান রাসেল মাহমুদ জিমি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পোশাক ও বস্ত্র খাতে ঋণ দিতেই বেশি আগ্রহ ব্যাংকের
  • ‎ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন
  • মহাসড়ক অবরোধ করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন
  • শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিল পিপলস ইন্স্যুরেন্স
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রফেশনাল কোর্সে ভর্তিতে চলছে আবেদন, ক্লাস ২২ সেপ্টেম্বর
  • যবিপ্রবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু সোমবার
  • শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিল ২ কোম্পানি
  • তাসকিনের প্রথমের আনন্দ
  • ঋতুপর্ণাকে বিসিবির বাড়ি উপহার
  • বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে চান মনন