নির্বাচন বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নির্বাচনের কথা বলেছে। মানুষ দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাইলেও সরকার এ ব্যাপারে নিশ্চুপ কেন। এখন তো মানুষ ধীরে ধীরে নানা সন্দেহ করছে। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত ইচ্ছেমতো বাংলাদেশে লোক ঢোকাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।

রোববার রাজধানীতে এক শান্তি শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ফোরাম এ শোভাযাত্রার আয়োজন করে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একজন খুনের মামলার আসামি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি কীভাবে দেশে থেকে পালিয়ে গেলেন, সেই প্রশ্নের জবাব এখনো জাতি পায়নি। তাঁর লাল পাসপোর্ট বাতিল হয়নি, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কি কিছু জানত না?’।

ডিজিএফআই ও এনএসআই-এর দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, এত বড় একজন ব্যক্তি কীভাবে দেশে থেকে পালিয়ে যান, যদি না ‘ক্লিয়ারেন্স’ দেওয়া হয়? এই বিষয়টি গোটা জাতির জন্য আতঙ্কজনক এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের প্রশ্নে একটি গুরুতর ব্যর্থতার উদাহরণ।

সাতক্ষীরা, কুড়িগ্রাম, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজারসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে লোক পুশ-ইন (ঠেলে পাঠানো) করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ তার ইচ্ছামত লোক ঢোকাবেন বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আর আপনারা নিশ্চুপ, আপনারা কেউ সাবধান করছেন না। এর কারণ কি? তাহলে তো শেখ হাসিনা যেমন করেছেন আপনারাও তাই করছেন।’

সরকারের একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, তিনি বিএনপিকে পছন্দ করেন না। তিনি নিজের মতো করে প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন। তবুও কেন সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না?

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়ে রিজভী বলেন, বাংলাদেশ হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই একসঙ্গে বসবাস করে এসেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলার অভিযোগ যারা তোলে, তারা দেশের বন্ধু হতে পারে না। তিনি গৌতম বুদ্ধের দর্শনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সব ধর্মের উৎসবে অংশ নিই, একে অপরের পাশে দাঁড়াই—এটাই বাংলাদেশের শক্তি।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ফোরামের আহ্বায়ক দিলীপ বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক সাথোয়াইপ্রু চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুশীল বড়ুয়া।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র

প্রাচীন গল্পে আছে, ইকারাস মোমের ডানা নিয়ে সূর্যের খুব কাছে উড়ে গিয়েছিল। তখন মোম গলে গেলে ইকারাস নিচে পড়ে যায়। সৃজনশীল এক ফটোগ্রাফার সম্প্রতি সূর্যের দারুণ এক ছবি তুলে সেই দৃশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একজন স্কাইডাইভার মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য সূর্যের সামনে দিয়ে নেমে যান। ঠিক তখনই তাঁকে ক্যামেরাবন্দী করেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি। জ্বলন্ত সূর্যের মুখের ওপর দিয়ে যেন এক মানব প্রতিকৃতি নিচে নেমে গেল, এমন দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরা লেন্সে। দৃষ্টিবিভ্রমের এক অসাধারণ কীর্তি তৈরি করেছেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি।

অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি নিখুঁতভাবে তাঁর ক্যামেরা দিয়ে একজন স্কাইডাইভারকে ক্যামেরার সংকীর্ণ ফিল্ড অব ভিউয়ের মধ্য দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় ধারণ করেন। ছবিটি বেশ পরাবাস্তব এক অনুভূতি তৈরি করেছে। ইকারাসকে নিয়ে প্রাচীন মিথের সঙ্গে ছবিটি তুলনা করেছেন অনেকেই।

অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি চাঁদ ও সূর্যের অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি তোলার জন্য পরিচিত। তিনি সূর্যের সামনে স্কাইডাইভারের এই একটি মাত্র ছবির জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সূর্যের ছবি তোলা এমনিতেই কঠিন কাজ। সেখানে সূর্যের সামনে গতিশীল একটি বিমান বা একজন পতিত মানবকে একই ফ্রেমে আনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিমানটির গতিপথ, সূর্যের কোণ, ক্যামেরার অবস্থান ও স্কাইডাইভারের অবতরণের মতো সব বিষয়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক করে কাজটি হয়েছে।

অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি বলেন, ‘বলা যায়, একেবারে অযৌক্তিক একটি কাজ করেছি। যদিও চূড়ান্ত ছবিটি দারুণ এক অনুভূতি দেয়। স্কাইডাইভার ছিলেন ইউটিউবার ও সংগীতজ্ঞ গ্যাব্রিয়েল সি ব্রাউন। সে সূর্যের উত্তাল হলুদ পৃষ্ঠের বিপরীতে একটি কালো সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে ছবিতে চলে এসেছে। সূর্যের অবস্থান ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে হলেও ক্যামেরায় দারুণভাবে দেখা যাচ্ছে সব। ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করা ছবি অসম্ভব বলে মনে হয়। আগুনের মতো সৌর ক্রোমোস্ফিয়ারের আবহের বিপরীতে একটি সত্যিকারের মানব চিহ্ন আমাদের মুগ্ধ করে। দেখে মনে হবে যেন, মহাকাশে কেউ নিচে পড়ে যাচ্ছে।’

স্কাইডাইভাররা ব্রাউনের ৩ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে পতন শুরু করলে প্রায় ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে প্যারাসুট খোলার আগে ছবি তোলার সুযোগ মেলে। ম্যাককার্থি একটি লুন্ট ৬০ মিলিমিটার এইচ–আলফা ক্যামেরায় তার ফ্রি ফলের ছবি তোলেন। একটি এএসআই ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারে একক এক্সপোজার ধারণ করা হয়। আসলে এই বিভ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দূরত্বের সামঞ্জস্য। ব্রাউন একটি ছোট বিমান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। আর ম্যাককার্থি প্রায় আট হাজার ফুট দূরে অবস্থান করেছিলেন। স্কাইডাইভার অবশ্যই সূর্যের কাছে ছিলেন না। শুধু ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত অবস্থানের কারণে স্কাইডাইভারকে অসম্ভব কাছাকাছি দেখাচ্ছিল। আসলে লাফ দেওয়ার আগে বিমানটিকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য ছয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে। স্কাইডাইভারকে ফ্রেমে ধরার জন্য মাত্র একবারের সুযোগ ছিল। ম্যাককার্থি তাঁর মনিটরে সেই ক্ষুদ্র অবয়বটিকে সূর্যের আলোর সঙ্গে মিলিয়ে একটি নিখুঁত অবয়ব ধারণ করেন।

এই ছবিকে অনেকেই পৌরাণিক রূপকথার সঙ্গে তুলনা করছেন। গ্রিক মিথের ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ম্যাককার্থির এ ছবিটি সেই আখ্যানকেই একটি আধুনিক ও স্পষ্ট রূপে যেন তুলে ধরছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘১৫ হাজার সেফটিপিন শাড়িতে লাগালেও, তারা খুঁত বের করবে’
  • এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে হঠাৎ কেন অবস্থান নিলেন ট্রাম্প
  • এশিয়ার প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী কারা, কীসের ব্যবসা তাঁদের
  • করদাতা মারা গেলেও যে কারণে কর দিতে হয়, কীভাবে দেওয়া হয়
  • ৩ কোটি টাকা, ব্যক্তিগত উড়োজাহাজসহ আরও যা যা পান একজন মিস ইউনিভার্স
  • গায়িকা থেকে বিধায়ক, মৈথিলীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী চমকে ওঠার মতো
  • সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলেন উপদেষ্টার এপিএস
  • বিএনপি নেতা খুন: অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ফেসবুকে লিখলেন ‘আউট’
  • সাজা হলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘কনভিকশন ওয়ারেন্টের’ আবেদন করা হবে
  • সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র