Risingbd:
2025-10-03@04:08:00 GMT

মা মানে আত্মত্যাগ

Published: 11th, May 2025 GMT

মা মানে আত্মত্যাগ

মা- মাত্র একটি শব্দ। অথচ এই শব্দের অন্তরালে লুকিয়ে আছে ভালোবাসার সবচেয়ে বিশুদ্ধ, সবচেয়ে শক্তিশালী ও অনন্ত রূপ। মা মানেই আত্মত্যাগ, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, নিরব উপস্থিতিতে আগলে রাখা নির্ভরতার ছায়া। এই পৃথিবীতে অনেক সম্পর্ক থাকে, কিন্তু মা-সন্তানের সম্পর্ক এমন এক বন্ধন, যা জন্মের আগেই গড়ে ওঠে এবং মৃত্যুর পরেও হৃদয়ে বেঁচে থাকে।

প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পালিত হয় মা দিবস। যদিও এই একটি দিনে মাকে বিশেষভাবে সম্মান ও ভালোবাসা জানানো হয়, প্রকৃত অর্থে মা দিবস প্রতিটি সন্তানের জীবনে প্রতিদিনের সঙ্গী হওয়া উচিত। একজন মা সন্তানের জীবনে যেমন নিঃস্বার্থ সেবায় নিয়োজিত থাকেন, ঠিক তেমনই সমাজ ও মানবজাতির ভবিষ্যৎ গঠনে তার রয়েছে অনন্য ভূমিকা।

একজন মা সন্তানকে শুধু জন্ম দেন না, গড়ে তোলেন। তার হাত ধরেই আমরা হাঁটতে শিখি, কথা বলতে শিখি, ভালোবাসতে শিখি। শিশু যখন কথা বলতে জানে না, তখনো মায়ের ভাষা সে বোঝে। তার কান্না, হাসি, ইশারাতেই মা বুঝে যায় সন্তানের প্রয়োজন। 

আরো পড়ুন:

নিঃস্বার্থ ভালোবাসার আরেক নাম মা

অন্যের বাড়িতে কাজ করে মা খাবার নিয়ে আসতেন

ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পৃথিবীর প্রতিটি প্রধান ধর্মেই মায়ের মর্যাদা অসাধারণ। ইসলাম ধর্মে মায়ের পায়ের নিচে জান্নাত বলে ঘোষিত হয়েছে। হাদীসে এসেছে, আল্লাহর সন্তুষ্টি মায়ের সন্তুষ্টিতে, আর আল্লাহর অসন্তোষ মায়ের অসন্তোষে। হিন্দু ধর্মে মা কেবল একজন নারীর পরিচয় নয়, বরং দেবীত্বের প্রতীক। খ্রিস্ট ধর্মে মাদার মেরীকে স্বর্গীয় মর্যাদায় স্থাপন করা হয়েছে, যিনি পবিত্রতা, ত্যাগ ও ভালোবাসার প্রতীক। বৌদ্ধ ধর্মেও মাতৃত্বকে করুণার উৎস হিসেবে দেখা হয়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণগুলো একত্র করে বলা যায়, মা শব্দটি নিজেই এক আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতিচ্ছবি।

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, একজন মা-ই একটি জাতির চরিত্র গঠনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন। পরিবার গঠন, নৈতিক শিক্ষা, মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় মায়ের ভূমিকা অপরিসীম। একটি শিশু প্রথম শিক্ষা লাভ করে মায়ের কোলে। মায়ের মুখে উচ্চারিত আদর্শই পরবর্তীতে সেই সন্তানের জীবনের নীতিমালা হয়ে ওঠে।

সাহিত্যেও মাকে নিয়ে অসংখ্য লেখা রচিত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে মাকে নিয়ে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘আমার মা মরিয়াছেন, জানেনা সে দাস’, কাজী নজরুল ইসলামের ‘মা’ কবিতা কিংবা জীবনানন্দ দাশের গদ্যে-মা বারবার ফিরে এসেছে অভয়ার প্রতীক হয়ে। 

আমার নিজের জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে মায়ের অবদান অনস্বীকার্য। তার অবিরাম স্নেহ, নিঃশর্ত সমর্থন আর কঠোর পরিশ্রম আমাকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি জুগিয়েছে। জীবনের নানা চ্যালেঞ্জে যখন দিশেহারা হয়েছি, তখন তার একটি কথাই ভেতরে শক্তি জুগিয়েছে; তুই পারবি। একজন মা শুধু সন্তানকে আদর করেন না, তাকে সাহসও দেন, দৃঢ়তা শেখান।

আমার জীবনের লক্ষ্য শুধু নিজের জন্য নয়, মায়ের জন্যও। আমি চাই এমন এক অবস্থানে পৌঁছাতে, যেখানে মা কোনোদিন আর চিন্তা না করেন। আজকের এই মা দিবসে আমরা যারা সৌভাগ্যবান, যাদের মা এখনো পাশে আছেন—তারা যেন মাকে সময় দেই, ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি। 

আর যারা তাদের হারিয়েছেন, তারাও মায়ের শিক্ষা, ভালোবাসা ও স্মৃতিকে জীবনের আলো করে রাখেন। ভালোবাসা তখনই পূর্ণতা পায়, যখন তা প্রকাশ করা হয়। তাই শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নয়, বরং প্রতিদিনের জীবনে, আচরণে, সিদ্ধান্তে আমরা যেন মাকে সম্মান জানাই।

মা শুধু জন্মদাত্রী নন, তিনি ভবিষ্যৎ নির্মাতা। তিনি এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা, যিনি নিজের স্বপ্নগুলো বিসর্জন দিয়ে সন্তানের স্বপ্নকে রঙিন করেন। মা মানে আত্মত্যাগ, মা মানে সাহস, মা মানে ভালোবাসা। তার ছায়ার নিচে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তই এক জীবনের সমান আশীর্বাদ।

(লেখক: শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, লোকপ্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম দ বস ন র জ বন একজন ম জ বন র

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯

ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।

দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।

আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।

দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।

ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।

স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪০ ঘণ্টা পর এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ আরেকজন
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ৭ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার 
  • গরুর গোবর কুড়ানো থেকে সাত তারকা হোটেলে, জয়দীপের গল্প জানেন কি
  • টর্চলাইট
  • স্বাস্থ্য খাতে আলাদা বেতনকাঠামো হোক
  • গাজীপুরে আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার
  • খাগড়াছড়ির ঘটনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি
  • ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ দিলো আদালত
  • ‘মোটা জেনারেলদের’ কড়া সমালোচনা করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা হেগসেথ
  • ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯