Risingbd:
2025-06-27@00:08:47 GMT

মা মানে আত্মত্যাগ

Published: 11th, May 2025 GMT

মা মানে আত্মত্যাগ

মা- মাত্র একটি শব্দ। অথচ এই শব্দের অন্তরালে লুকিয়ে আছে ভালোবাসার সবচেয়ে বিশুদ্ধ, সবচেয়ে শক্তিশালী ও অনন্ত রূপ। মা মানেই আত্মত্যাগ, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, নিরব উপস্থিতিতে আগলে রাখা নির্ভরতার ছায়া। এই পৃথিবীতে অনেক সম্পর্ক থাকে, কিন্তু মা-সন্তানের সম্পর্ক এমন এক বন্ধন, যা জন্মের আগেই গড়ে ওঠে এবং মৃত্যুর পরেও হৃদয়ে বেঁচে থাকে।

প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পালিত হয় মা দিবস। যদিও এই একটি দিনে মাকে বিশেষভাবে সম্মান ও ভালোবাসা জানানো হয়, প্রকৃত অর্থে মা দিবস প্রতিটি সন্তানের জীবনে প্রতিদিনের সঙ্গী হওয়া উচিত। একজন মা সন্তানের জীবনে যেমন নিঃস্বার্থ সেবায় নিয়োজিত থাকেন, ঠিক তেমনই সমাজ ও মানবজাতির ভবিষ্যৎ গঠনে তার রয়েছে অনন্য ভূমিকা।

একজন মা সন্তানকে শুধু জন্ম দেন না, গড়ে তোলেন। তার হাত ধরেই আমরা হাঁটতে শিখি, কথা বলতে শিখি, ভালোবাসতে শিখি। শিশু যখন কথা বলতে জানে না, তখনো মায়ের ভাষা সে বোঝে। তার কান্না, হাসি, ইশারাতেই মা বুঝে যায় সন্তানের প্রয়োজন। 

আরো পড়ুন:

নিঃস্বার্থ ভালোবাসার আরেক নাম মা

অন্যের বাড়িতে কাজ করে মা খাবার নিয়ে আসতেন

ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পৃথিবীর প্রতিটি প্রধান ধর্মেই মায়ের মর্যাদা অসাধারণ। ইসলাম ধর্মে মায়ের পায়ের নিচে জান্নাত বলে ঘোষিত হয়েছে। হাদীসে এসেছে, আল্লাহর সন্তুষ্টি মায়ের সন্তুষ্টিতে, আর আল্লাহর অসন্তোষ মায়ের অসন্তোষে। হিন্দু ধর্মে মা কেবল একজন নারীর পরিচয় নয়, বরং দেবীত্বের প্রতীক। খ্রিস্ট ধর্মে মাদার মেরীকে স্বর্গীয় মর্যাদায় স্থাপন করা হয়েছে, যিনি পবিত্রতা, ত্যাগ ও ভালোবাসার প্রতীক। বৌদ্ধ ধর্মেও মাতৃত্বকে করুণার উৎস হিসেবে দেখা হয়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণগুলো একত্র করে বলা যায়, মা শব্দটি নিজেই এক আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতিচ্ছবি।

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, একজন মা-ই একটি জাতির চরিত্র গঠনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন। পরিবার গঠন, নৈতিক শিক্ষা, মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় মায়ের ভূমিকা অপরিসীম। একটি শিশু প্রথম শিক্ষা লাভ করে মায়ের কোলে। মায়ের মুখে উচ্চারিত আদর্শই পরবর্তীতে সেই সন্তানের জীবনের নীতিমালা হয়ে ওঠে।

সাহিত্যেও মাকে নিয়ে অসংখ্য লেখা রচিত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে মাকে নিয়ে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘আমার মা মরিয়াছেন, জানেনা সে দাস’, কাজী নজরুল ইসলামের ‘মা’ কবিতা কিংবা জীবনানন্দ দাশের গদ্যে-মা বারবার ফিরে এসেছে অভয়ার প্রতীক হয়ে। 

আমার নিজের জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে মায়ের অবদান অনস্বীকার্য। তার অবিরাম স্নেহ, নিঃশর্ত সমর্থন আর কঠোর পরিশ্রম আমাকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি জুগিয়েছে। জীবনের নানা চ্যালেঞ্জে যখন দিশেহারা হয়েছি, তখন তার একটি কথাই ভেতরে শক্তি জুগিয়েছে; তুই পারবি। একজন মা শুধু সন্তানকে আদর করেন না, তাকে সাহসও দেন, দৃঢ়তা শেখান।

আমার জীবনের লক্ষ্য শুধু নিজের জন্য নয়, মায়ের জন্যও। আমি চাই এমন এক অবস্থানে পৌঁছাতে, যেখানে মা কোনোদিন আর চিন্তা না করেন। আজকের এই মা দিবসে আমরা যারা সৌভাগ্যবান, যাদের মা এখনো পাশে আছেন—তারা যেন মাকে সময় দেই, ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি। 

আর যারা তাদের হারিয়েছেন, তারাও মায়ের শিক্ষা, ভালোবাসা ও স্মৃতিকে জীবনের আলো করে রাখেন। ভালোবাসা তখনই পূর্ণতা পায়, যখন তা প্রকাশ করা হয়। তাই শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নয়, বরং প্রতিদিনের জীবনে, আচরণে, সিদ্ধান্তে আমরা যেন মাকে সম্মান জানাই।

মা শুধু জন্মদাত্রী নন, তিনি ভবিষ্যৎ নির্মাতা। তিনি এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা, যিনি নিজের স্বপ্নগুলো বিসর্জন দিয়ে সন্তানের স্বপ্নকে রঙিন করেন। মা মানে আত্মত্যাগ, মা মানে সাহস, মা মানে ভালোবাসা। তার ছায়ার নিচে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তই এক জীবনের সমান আশীর্বাদ।

(লেখক: শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, লোকপ্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম দ বস ন র জ বন একজন ম জ বন র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আল্লাহু আকবার’ বলে হলের ছাদ থেকে লাফ দিলেন রাবি শিক্ষার্থী

‘আল্লাহু আকবার’ বলে হলের ছাদ থেকে লাফ দিয়েছেন সাদ আহমেদ নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। 

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাত ১১টা ২০ মিনিটে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের চার তলার উপর থেকে লাফ দেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।

সাদ আহমেদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। ছাদ থেকে লাফ দেওয়ার আগে ফেসবুকে তিনি কয়েকটি পোস্ট করেন। সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ভালোবাসি লিসা'।

লিসাকে উদ্দেশ্য করে তিনি লেখেন, “লিসা তুমি জানতা তোমাকে আমি কত্তটা ভালোবাসি, তবুও কেন এমন করলে? সব জায়গায় সেইম ইফোর্ট সেইম ডায়ালগ কীভাবে পারো লিসা? মানুষ এতটা সাইকো কীভাবে হয়? তোমাকে তো বলেই ছিলাম, আমার সাথে চিট করলে কিন্তু আমার বন্ধু ফিরোজের মতো আমাকেও মরা ছাড়া উপায় থাকবে না। এত্ত করে বুঝাইলাম তাও বুঝলে না।”

আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, “সরি আম্মু পারলে মাফ করে দিও। তুমি আমার আম্মু ছিলা, তুমি আমার আব্বু ছিলা। আর আমার বাপ একটা জানোয়ার।” 

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমি মাত্রই ছাদে উঠেছিলাম, তিন তলায় ওঠার পরে একজন জোরে 'আল্লাহু আকবার' বলে এবং পরক্ষণেই হঠাৎ জোরে শব্দ শুনতে পাই। তারপর ওখান থেকে দৌঁড়ে এসে দেখি একজন মাটিতে পড়ে আছে। পরে অ্যাম্বুলেন্স এসে তাকে রামেকে নিয়ে যায়।

তার এক বন্ধু বলেন, সাদ খুব সহজ সরল। সে হাফেজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। পারিবারিক কিছু সমস্যাও ছিলো। তবে এভাবে সে লাফ দেবে এটা ভাবতেই পারিনি।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “আমি বাইরে ছিলাম। ঘটনাটি শোনার পর হলে গিয়ে শুনতে পেলাম তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সে ফার্স্ট ব্লকের চার তলা থেকে লাফ দিয়েছিল। সম্ভবত তার একটা পা ভেঙ্গে গেছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা ঘটনাটি শোনামাত্রই সেখানে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাইছি। তাকে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা বিস্তারিত কিছু জানতে পারিনি।”

ঢাকা/ফাহিম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েল-ভারত যেভাবে পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে চেয়েছিল
  • কেবল ব্যক্তির বদল নয়, পুলিশের সংস্কারও প্রয়োজন: সামান্তা শারমিন
  • যে পাঁচ ক্লাব হতে পারে রদ্রিগোর নতুন ঠিকানা
  • যে পাঁচ ক্লাব হতে পারে রদ্রিগোর নতুন ঠিকান 
  • জোহরান মামদানির উত্থান: ফিলিস্তিনপন্থি রাজনীতির সুযোগ বাড়ার আভাস
  • অভিনয় নাকি নির্মাণ, কোন পথে হাঁটছেন পলাশ
  • নেতানিয়াহু ‘একজন যোদ্ধা’, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত: ট্রাম্প
  • ‘তোমাকে কতটা ভালোবাসি’ লিখে হলের ছাদ থেকে ছাত্রের লাফ
  • নেতানিয়াহুর মতো ‘মহান নায়ককে’ ক্ষমা করে দেওয়া উচিত: ট্রাম্প
  • ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হলের ছাদ থেকে লাফ দিলেন রাবি শিক্ষার্থী