কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) ২৩টি নাগরিক সেবা ও সনদের ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে। আজ সোমবার দুপুরে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন করপোরেশনের প্রশাসক সাইফ উদ্দিন আহমেদ।

আজ সোমবার দুপুরে নগরবাসীর পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দা। গত ২০ জানুয়ারি কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নাগরিক সেবার ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর গত ১৫ এপ্রিল সিটি করপোরেশনের সচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এতে স্বাক্ষর করেন। এতে ২৩টি নাগরিক সেবার বর্তমান ফি ও পুনর্নির্ধারিত ফি তুলে ধরা হয়। এতে ১৯টি খাতে ফি বাড়ানো হয়। এই ক্ষেত্রে ৫ গুণ টাকা বাড়ানো হয় ১৬টি খাতে। কোনো ধরনের গণশুনানি ছাড়া এভাবে মূল্য বাড়ানোর নজির নেই।’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ‘জানুয়ারি মাসের সিদ্ধান্ত, হঠাৎ করে মে মাসে বাজেটের এক মাস আগে জানানো হয়েছে। এত দিন এই সিদ্ধান্ত কেন জানানো হলো না। আবার বলা হচ্ছে, ১ মে থেকে এটি কার্যকর হবে। বর্তমান দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যুগে এভাবে জনস্বার্থবিরোধী মূল্যতালিকা বৃদ্ধি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন লাভবান প্রতিষ্ঠান, এখানে টাকার অভাব নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। সিটি করপোরেশনে ১ হাজার ৫৩৮ কোটি ১০ লাখ টাকার অধিকতর উন্নয়নকাজ চলছে। অন্যান্য ফি নগরবাসী দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় জনস্বার্থবিরোধী পুনর্নির্ধারিত মূল্যতালিকা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় নগরবাসীকে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী (আবু), কলেজশিক্ষক মো.

নাসির উদ্দিন, প্রকৌশলী আকবর হোসেনসহ অনেকে।

আরও পড়ুন১৬ ধরনের সেবার ফি ৫ গুণ বৃদ্ধি, গণশুনানি না করায় নাগরিকদের ক্ষোভ০৯ মে ২০২৫

প্রশাসক সাইফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নগরবাসীর কথা চিন্তা করেই ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। যদিও অন্যান্য সিটি করপোরেশনের তুলনায় এই ফি এখনো কম, তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াটি সঠিক ছিল না। ভবিষ্যতে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে ৯ মে প্রথম আলোয় ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশন: ১৬ ধরনের সেবার ফি ৫ গুণ বৃদ্ধি, গণশুনানি না করায় নাগরিকদের ক্ষোভ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং ১১ মে ‘নাগরিক সেবার ফি বৃদ্ধি, কুমিল্লাবাসীর মতামতকে বিবেচনায় নিন’ শিরোনামে সম্পাদকীয় ছাপা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নগরব স

এছাড়াও পড়ুন:

বাষট্টিতে নগরবাউল জেমস

নগরবাউল জেমস। তার পুরো নাম মাহফুজ আনাম জেমস। ভক্তরা তাকে ‘গুরু’ বলেই ডাকেন। জেমস মানেই তারুণ্যের উন্মাদনা। তার নাম অনেক তরুণের স্বপ্নের সূতিকাগার। নিজের মেধা আর মননে হয়ে ওঠেছেন এ প্রজন্মের গুরু। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) নন্দিত এই ব্যান্ড সংগীতশিল্পী জেমসের জন্মদিন। ৬১ বছর পূর্ণ করে বাষট্টিতে পা দিতে যাচ্ছেন তিনি। বিশেষ দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছা বার্তায় ভাসছেন জেমস। 

১৯৬৪ সালে ২ অক্টোবর নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন জেমস। কিন্তু তার শৈশব কেটেছে চট্টগ্রামে। বাবার চাকরির সূত্রে চট্টগ্রামের সৈকতের বালুচরে কেটেছে তার দুরন্ত শৈশব। জেমসের বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা, যিনি পরবর্তীতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 

আরো পড়ুন:

জুবিনের গাওয়া গান আমাকে বিখ্যাত করেছে: অনন্ত জলিল

পণ্ডিত চন্নুলাল মারা গেছেন

পরিবারের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সংগীতচর্চা শুরু করেন জেমস। একসময় সংগীতের জন্য ঘর ছাড়েন তিনি। পালিয়ে গিয়ে চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিংয়ে উঠেন। সেখান থেকেই তার সংগীতের মূল ক্যারিয়ার শুরু। 

১৯৮০ সালে ‘ফিলিংস’ নামে ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন জেমস। এর মাধ্যমে প্রথম তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। পরবর্তীতে এহসান এলাহী ফানটিকে নিয়ে নগর বাউল নামে ব্যান্ড গঠন করেন। বাংলা ভাষায় তিনিই প্রথম সাইকিডেলিক রক শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ড থেকে প্রকাশ করেন প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’। ১৯৮৮ সালে ‘অনন্যা’ নামে একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন জেমস। এ অ্যালবামের গানগুলো দারুণ শ্রোতাপ্রিয় হয়। 

বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে জেমসের খ্যাতি ছড়িয়েছে বিশ্বে। ভারতের পশ্চিম বঙ্গে রয়েছে জেমসের অনেক ভক্ত। সেই সূত্রে ২০০৪ সালে বাঙালি সংগীত পরিচালক প্রিতমের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। ২০০৫ সালে বলিউডের ‘গ্যাংস্টার’ চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন জেমস। চলচ্চিত্রটিতে তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এক মাসেরও বেশি সময় তা বলিউড টপচার্টের শীর্ষে ছিল। 

২০০৬ সালে ‘ওহ লামহে’ চলচ্চিত্রের ‘চল চলে’ গানে কণ্ঠ দেন জেমস। ২০০৭ সালে ‘লাইফ ইন এ মেট্টো’ চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন। এতে ‘রিশতে’ ও ‘আলবিদা’ গানে কণ্ঠ দেন তিনি। সর্বশেষ হিন্দি চলচ্চিত্রে ‘ওয়ার্নিং’-এ প্লেব্যাক করেন জেমস। ‘বেবাসি’ শিরোনামের গানটি ২০১৩ সালে মুক্তি পায়। 

জেমসের গাওয়া উল্লেখযোগ্য গান হলো—‘বাংলাদেশ’, ‘জেল থেকে আমি বলছি, মা’, ‘দুখিনী দুঃখ করো না’, ‘লেইস ফিতা লেইস’, ‘বাবা কত দিন’, ‘বিজলী’, ‘দুষ্টু ছেলের দল’, ‘মিরাবাঈ’, ‘পাগলা হাওয়া’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কি দিয়া’ প্রভৃতি। 

নগর বাউল থেকে প্রকাশিত অ্যালবামগুলো হলো—‘স্টেশন রোড’ (১৯৮৭), ‘জেল থেকে বলছি’ (১৯৯৩), ‘নগর বাউল’ (১৯৯৬), ‘লেইস ফিতা লেইস’ (১৯৯৮), ‘দুষ্ট ছেলের দল’ (২০০১)। জেমসের একক অ্যালবামগুলো হলো— ‘অনন্যা’ (১৯৮৯), ‘পালাবে কোথায়’ (১৯৯৫), ‘দুঃখিনি দুঃখ করোনা’ (১৯৯৭), ‘ঠিক আছে বন্ধু’ (১৯৯৯), ‘আমি তোমাদেরই লোক’ (২০০৩), ‘জনতা এক্সপ্রেস’ (২০০৫), ‘তুফান’ (২০০৭), ‘কাল যমুনা’ (২০০৮)।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঝিনাইদহে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় শিশুসহ দুজন নিহত
  • বাষট্টিতে নগরবাউল জেমস
  • বৃষ্টিতে জলমগ্ন ঢাকা, দুর্ভোগে নগরবাসী