টেস্ট ক্রিকেটের শেষ অধ্যায় লিখে ফেললেন কোহলি
Published: 12th, May 2025 GMT
বহুদিন ধরেই চলছিল গুঞ্জন— বিরাট কোহলি কি টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়াবেন? অধিনায়ক রোহিত শর্মার বিদায়ের পর সেই গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছিল। আর এবার আর কোনও রকম সন্দেহের অবকাশ না রেখে নিজেই জানিয়ে দিলেন, আর দেখা যাবে না তাকে লাল বলের ক্রিকেটে।
সোমবার (১২ মে) নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি আবেগঘন পোস্টে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান ভারতীয় ক্রিকেটের প্রাণপুরুষ কোহলি। লিখেছেন, “১৪ বছর আগে যখন প্রথম সাদা জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলাম, তখন বুঝতেই পারিনি এই যাত্রা আমার জীবনের এত বড় অংশ হয়ে উঠবে। টেস্ট ক্রিকেট আমাকে সাহস দিয়েছে, দায়িত্ব শিখিয়েছে এবং মানুষ হিসেবে গড়তে সাহায্য করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই ফরম্যাটে খেলার প্রতি এক বিশেষ অনুভব থাকে, যা শব্দে প্রকাশ করা কঠিন। প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি সংগ্রাম— আজীবন হৃদয়ে থাকবে। তবে এখন মনে হচ্ছে, সরে দাঁড়ানোর এটাই উপযুক্ত সময়। আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়েছি, আর ক্রিকেটও আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে আশাতীত ভালোবাসা।”
আরো পড়ুন:
রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে দ.
সাতাশ পর্যন্ত টেইট বাংলাদেশের
২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অভিষেক দিয়ে শুরু হয় কোহলির টেস্ট-যাত্রা। এরপর ১২৩ ম্যাচে ভারতের হয়ে করেছেন ৯২৩০ রান। রয়েছে ৩০টি শতক, ৩১টি অর্ধশতক এবং ৭টি ডাবল সেঞ্চুরি। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস— ২৫৪ রান। গড়টা দীর্ঘ সময় ৫০-এর ওপরে থাকলেও ক্যারিয়ারের শেষভাগে এসে সেটা নামল ৪৬.৮৫-তে।
ধীরে ধীরে টেস্টে ব্যাট হাতে তার ধার কমে আসছিল। যা নিয়ে উঠছিল নানা প্রশ্ন। বিশেষ করে গত অস্ট্রেলিয়া সফরে প্রথম ম্যাচে শতরান করলেও বাকিটা ছিল হতাশাজনক। সেই থেকেই নাকি নিজের ভিতরে টেস্ট ছাড়ার ভাবনা চলছিল— যা এবার বাস্তবে রূপ পেল।
গত বছর টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নেওয়ার পর এবার টেস্টও ছাড়লেন তিনি। এখন থেকে কোহলিকে দেখা যাবে শুধুই ওয়ানডে ফরম্যাটে।
বিসিসিআই শেষ পর্যন্ত কোহলিকে টেস্টে রেখে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, এমনকি কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাও কোহলিকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোহলি নিজেই মনে করেছেন, মঞ্চ ছেড়ে দেওয়ার এখনই সময়।
২০১৪ সালে ধোনির পর কোহলি যখন টেস্টের নেতৃত্ব নেন, তখন ভারতের টেস্ট দল ছিল রূপান্তরের মাঝে। কিন্তু তার অধীনে দলটি হয়ে ওঠে ভয়ংকর প্রতিপক্ষ। ৬৮টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে জয় এনে দিয়েছেন ৪০টি ম্যাচে— দেশের বাইরে ১৫ জয়ও রয়েছে তার কৃতিত্বে। এই পরিসংখ্যানই বলে দেয়, টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ভারতীয় অধিনায়ক তিনি।
আইসিসির কোনও মেজর ট্রফি না জিতলেও কোহলির অধীনে ভারত টানা চার বছর ছিল টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষে। ২০১৮-১৯ সালের অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারত প্রথমবার সিরিজ জেতে তার অধিনায়কত্বেই।
এবার যখন কোহলি বিদায় জানালেন, তখন শুধু একজন খেলোয়াড় নয়— বিদায় নিচ্ছে একটি প্রজন্মের আবেগ, এক অদম্য নেতৃত্ব আর খাঁটি ক্রিকেটীয় দৃষ্টিভঙ্গি।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আয়ারল্যান্ড সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ আশরাফুল, টিম ডিরেক্টর রাজ্জাক
এ মাসেই বাংলাদেশের আসছে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল। সেই সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ আশরাফুল। এই সিরিজে টিম ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন জাতীয় দলের আরেক সাবেক ক্রিকেটার বিসিবি পরিচালক ও নারী বিভাগের প্রধান আবদুর রাজ্জাক। আজ বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির প্রধান আমজাদ হোসেন।
মোহাম্মদ আশরাফুল জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। এই মৌসুমেই প্রথমবারের মতো বরিশাল বিভাগের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর আগে রংপুর রাইডার্সের ব্যাটিং কোচ ছিলেন ২০০১ সালে কলম্বোয় বিশ্ব কাঁপিয়ে টেস্ট অভিষিক্ত হওয়া এই ব্যাটসম্যান।
আশরাফুল যুক্ত হলেও আগের কোচিং স্টাফের সদস্যরা দলের সঙ্গেই থাকছেন। এত দিন বাংলাদেশ দলে কোনো বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ ছিলেন না। সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীন এই দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বাংলাদেশ সফরে দুটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে আয়ারল্যান্ড। সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১১ নভেম্বর, ভেন্যু সিলেট। মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ১৯ নভেম্বর। টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ চট্টগ্রামে ২৭ ও ২৯ নভেম্বর। ২ ডিসেম্বর মিরপুরে শেষ ম্যাচ।