নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। তবে কারাগারে আসামীকে ডিভিশন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক শামসুর রহমান। সোমবার নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে এ শুনানি হয়।

পোশাক শ্রমিক মিনারুল হত্যা মামলায় গত ৯ মে আইভীকে নারায়ণগঞ্জের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সোমবার আদালত থেকে বেরিয়ে আইভীর আইনজীবী এস এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আদালতকে আমরা বলেছি আইভী স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ। তিনি তিনবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন এবং একবার নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। সিটি করপোরেশনের প্রত্যেক নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরা প্রায় ১ লাখ ভোটে পরাজিত হয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

আরেক আইনজীবী মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, কারাগারে আইভীকে ডিভিশন দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। জেল কর্তৃপক্ষকে আইভীকে ডিভিশন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আইনজীবী আওলাদ হোসেন বলেন, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছে। আমরা এখন জেলা জজ আদালতে যাব।

গ্রেপ্তারে বাধা দেওয়ায় মামলা
আইভীকে গ্রেফতারে বাধা, চড়াও এবং সাড়ে ছয় ঘণ্টা পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগে মামলা হয়েছে।

গত রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় এ মামলা করেন উপপরিদর্শক রিপন মৃধা। এতে ৫০জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো দুইশজনকে আসামী করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার পরিদর্শক নাছির উদ্দিন আহমেদ।

তিনি জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আইভী। তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা। তাকে ধরতে পুলিশ গিয়েছিল। তার কর্মীরা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়। 

পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, ওই দিনের ভিডিও সংগ্রহ করে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষও বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিল। সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ আইভ ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিচার কার্যক্রম বিলম্ব করতে চাইলে ‘টুঁটি চেপে’ ধরবেন ট্রাইব্যুনাল

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম কেউ বিলম্ব করতে চাইলে ‘টুঁটি চেপে’ ধরবেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-২ আজ বুধবার এ কথা বলেন।

ট্রাইব্যুনাল-২-এর অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো.মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

ট্রাইব্যুনাল–২–এ আজ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় ছয় আন্দোলনকারীর লাশ পোড়ানোর ঘটনায় হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ এই মামলার ১৬ আসামির অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁদের আইনজীবীরা। তাঁরা এ সময় বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই মামলার শুনানি শুরু হয়। আড়াই ঘণ্টা পর বেলা ২টার দিকে শুনানি শেষ হয়।

শুনানির শেষের দিকে ট্রাইব্যুনালকে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সঙ্গে সংবিধানের সংঘর্ষ হলে এই আইন থাকবে। এটা সুপিরিয়র ল। আইন অনুযায়ী এই মামলায় হেয়ারিং (শুনানি) দ্রুততার সঙ্গে করা হবে, বিলম্ব হলে তাতে বাধা দেবেন ট্রাইব্যুনাল।

জবাবে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এই ট্রাইব্যুনালের অ্যাকশন (পদক্ষেপ) দেখে বুঝেন নাই?ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম বিলম্ব হয় এমন কার্যক্রম করা যাবে না। করলে ট্রাইব্যুনাল টুঁটি চেপে ধরবে। ট্রাইব্যুনাল তাড়াহুড়া করছে না, আইনই এমন।’

‘পালিয়ে গেছে, মরেনি, এটাই কি অপরাধ’

সাভার সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.শাহিদুল ইসলামের আইনজীবী ছিলেন মাহাদী হাসান ও আসাদুজ্জামান বাবু। তাঁরা বলেন, এই মামলায় ৫৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। সাক্ষীদের কেউই জবানবন্দিতে শাহিদুলের সম্পৃক্ততার কথা বলেননি। এই মামলায় ২১টি জব্দ তালিকা আছে, সেখানেও তাঁর সম্পৃক্ততা নেই। গণ–অভ্যুত্থানের ১ মাস পর চারটি জাতীয় গণমাধ্যম সংবাদ করে এই ঘটনায়, সেখানেও শাহিদুলের নাম আসেনি। সেই সঙ্গে এই আসামির পক্ষে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার কোনো দালিলিক প্রমাণ আনুষ্ঠানিক অভিযোগে নেই। এসব কারণে এই মামলা থেকে শাহিদুলের অব্যাহতি চান তাঁরা।

কল রেকর্ডসহ কিছু তথ্য–প্রমাণ চেয়ে শাহিদুল ইসলামের পক্ষে এই আইনজীবীরা দুটি আবেদন করলে তা খারিজ করেন ট্রাইব্যুনাল।

এই মামলা থেকে ঢাকা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক মো.আরাফাত হোসেনের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী এস এম মিরাজুল আলম। তিনি বলেন, গত বছরের ৪ আগস্ট আরাফাত অন্য এলাকায় দায়িত্ব পালন করেছেন। পরদিন ৫ আগস্ট তাঁর দায়িত্ব পড়েছিল আশুলিয়ায়। আরাফাত গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তাঁকে কখনো অস্ত্র দেওয়া হয়নি। ফলে গুলি করে কাউকে হত্যা করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তা ছাড়া তিনি ডিবির কর্মকর্তা হওয়ায় পুলিশের কাউকে লাশে আগুন দিতে নির্দেশ দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি সেখানে কোনো অপরাধ করেছেন এমন কোনো ভিডিও ফুটেজ বা অন্য কোনো প্রমাণও নেই।

আইনজীবী মিরাজুল আলম বলেন, ‘সেসময় অনেক পুলিশ মারা গেছেন। আরাফাত জীবন বাঁচাতে থানা থেকে পালিয়ে গেছেন, এমন ভিডিও আছে। আরাফাত মরেননি, সেটা কি তাঁর অপরাধ?’

এই মামলায় ১৬ জন আসামি। এই মামলা থেকে সব আসামির পক্ষেই অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে আটজন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন সাভার সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, আশুলিয়া থানার সাবেক উপপরিদর্শক আবদুল মালেক, আরাফাত উদ্দীন, কামরুল হাসান, শেখ আবজালুল হক ও সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদার।

সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ এ মামলার আট আসামি পলাতক।

এর আগে ৭ আগস্ট এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন করেছিল প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের এসব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য ২১ আগস্ট তারিখ ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদালত প্রাঙ্গণে আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদক বহনে নিষেধাজ্ঞা
  • ভোটের মাঠে সরব জামায়াতপন্থি আইনজীবিদের ভোট প্রার্থনা
  • দুদকের নতুন আইনজীবী শাহদীন মালিক
  • আইনজীবী সমিতির নির্বাচন : হুমায়ূন-আনোয়ার প্যানেলের পক্ষে জমজমাট প্রচারণা 
  • রাষ্ট্রপতিকে স্পিকারের শপথ পড়ানোর বিধান প্রশ্নে রুল শুনানিতে ৭ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ
  • প্রাণনাশের আশঙ্কায় রাহুল গান্ধী, আদালতে অভিযোগ
  • বিচার কার্যক্রম বিলম্ব করতে চাইলে ‘টুঁটি চেপে’ ধরবেন ট্রাইব্যুনাল
  • হুমায়ূন-আনোয়ারের নেতৃত্বে বিএনপি’র পূর্ণ প্যানেল ঘোষণা
  • নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ৩ প্যানেলের মনোনয়নপত্র জমা 
  • নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ৩ প্যালেনের মনোনয়নপত্র জমা