কুলিয়ারচরে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে মারধরে ষাটোর্ধ্ব নারী নিহত, ছেলে গুরুতর আহত
Published: 12th, May 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের মারধরে এক নারী নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে গুরুতর আহত হয়েছেন ওই নারীর ছেলে। আজ সোমবার বিকেলে উপজেলার গোবরিয়া আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নারীর নাম মমতাজ বেগম (৬১)। তিনি লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের স্ত্রী। আহত তাঁদের ছেলের নাম জিল্লুর রহমান (৪০)। জিল্লুরকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মমতাজ বেগমের সঙ্গে তাঁর প্রতিবেশী কালো মিয়া পরিবারের জমিসংক্রান্ত পূর্ববিরোধ রয়েছে। সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে মমতাজ বেগমের ছেলে জিল্লুর বাড়ির কাছের একটি গাছ থেকে আম পাড়তে যান। এ সময় কালো মিয়ার ছেলে তানভির মিয়া বাধা দেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কালো মিয়া পরিবারের লোকজন এসে জিল্লুরকে লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করেন। চিৎকার শুনে সেখানে জিল্লুরের মা মমতাজ বেগম আসেন। ছেলেকে মারতে দেখে তিনি বাধা দেন। তখন প্রতিপক্ষের লোকজন মমতাজ বেগমের ওপর চড়াও হন। মা-ছেলে দুজনকেই মেরে রক্তাক্ত জখম করা হয়। প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে মা-ছেলেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বাজিতপুর উপজেলার বেসরকারি জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই মমতাজ বেগম মারা গেছেন।
মমতাজ বেগমের স্বজনদের দাবি, আমগাছটি অনেক পুরোনো, অন্তত ত্রিশ বছর হবে। শুরু থেকে ওই গাছের আম পাড়েন মমতাজ বেগমের পরিবারের লোকজন। এবার কালো মিয়ার পরিবারের লোকজন আম পাড়তে দিচ্ছিলেন না। আজ আম পাড়তে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রথমে জিল্লুরকে, পরে মমতাজকে মারধর করেন।
কালো মিয়ার পরিবারের সদস্যদের দাবি, গাছটি মূলত কালো মিয়ার পরিবারের জায়গায় জন্মেছে। জোর করে এত দিন মমতাজ বেগমের পরিবারের লোকজন আম পেড়ে নিতেন। এবার আগে থেকে আম না পাড়ার জন্য বলা ছিল। তারপরও আজ মমতাজ বেগমের ছেলে আম পাড়তে যান। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র র ল কজন র পর ব র র আম প ড় ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ইউট্যাবের বিজয় র্যালি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ১ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিএনপিপন্থি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ইউট্যাব) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা। এ সময় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও জিয়া পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোড থেকে এ বর্ণাঢ্য র্যালি বের করেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন তারা।
এ সময় ইউট্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, “আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, এ দেশ স্বাধীন হয়েছে ১৯৭১ সালে। ২০২৪ এ আমরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছি। যে বৈষম্যের কারণে এ আন্দোলন হয়েছিল, সেই বৈষম্য এখনো বন্ধ হয়নি।”
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন
রাবির ২১ আওয়ামী শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ, বিচার দাবি ছাত্রদলের
তিনি বলেন, “আজ পর্যন্ত যারা নিহত হয়েছেন, বিপ্লবের ১ বছর পার হলেও এখনো তাদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হয়নি। গত ১৬ বছর অত্যাচার, হামলা-মামলা সহ্য করে আন্দোলন চালিয়ে গেছে। এইটা আমরা করেছি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। যাতে জনগণ ভোট দিতে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।”
ইউট্যাবের সদস্য ও জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, “বিজয় র্যালিতে সাধারণত আনন্দ হয়। কিন্তু আমরা আজ ২৪ এর জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করছি। একজন শিক্ষক হিসেবে আমরা জুলাই শহীদদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। ১ বছর হয়ে গেল, আমাদের উচিত ছিল তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা। কিন্তু সেই সময় কিছু জাতীয় নেতৃবৃন্দ কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠছেন।”
তিনি বলেন, “যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, যারা অন্ধ হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তারা সমুদ্র সৈকতে আনন্দ করছেন। দেশে গণতান্ত্রিক সরকার না থাকলে যা হয়, আমরা তার প্রমাণ পাচ্ছি।”
তিনি আরো বলেন, “বিএনপি গত ১৭ বছর ধরে একটি জবাবদিহিমূলক সরকারের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। আমরা প্রদীপের আলো দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু সেই আলো বড় পরিসরে আমাদের সামনে আসেনি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমাদের হয়তো আবার রাস্তায় নামতে হতে পারে।”
ইউট্যাব রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বাবু বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার দ্বারা এ দেশের জনগণ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ ছিল না। দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করে রাখা হয়েছিল। গত জুলাই আন্দোলনের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা ও সাধারণ জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা স্বৈরাচার মুক্ত করেছি।”
তিনি আরো বলেন, “নব্য যারা ফ্যাসিস্ট, তারা শেখ হাসিনার মতো সেই ব্যবস্থা পুনরাবৃত্তি করতে চায়। তাদের সহযোগিতা করছে একটি গুপ্ত বাহিনী ও তাদের সহযোগী সংগঠন। তাদের আমরা বলতে চাই, যতই ষড়যন্ত্র করেন কোনো লাভ হবে না। জাতীয়তাবাদী শক্তি গত ১৭ বছর সংগ্রাম করেছে, আগামী দিনেও রাজপথে গিয়ে সব দাবি আদায় করে একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে “
ইউট্যারের রাবি শাখার সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. খালেদউজ্জামান মিজানের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ইউট্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি জিএম শফিউর রহমান ও আব্দুল আলিম, রাবি শাখা ইউট্যাবের সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম, অধ্যাপক হিরা সোবহান, অধ্যাপক গোলাম সাদিক, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক নুরুজ্জামান হক, অধ্যাপক আনিসুর রহমান, নাঈম ফারুকী লুথার, স্বপ্নীল রহমান, ড. সাবিনা সুলতানা প্রমুখ।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী