যে তিন কারণে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতাতে পারেন আনচেলত্তি
Published: 13th, May 2025 GMT
দীর্ঘ অপেক্ষা ও নাটকীয়তা শেষে কার্লো আনচেলত্তিকে প্রধান কোচ হিসেবে পেয়েছে ব্রাজিল। ২৬ মে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করে ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য দল গোছানো শুরু করবেন ইতালির এই কিংবদন্তি কোচ।
তবে কাজটা আনচেলত্তির জন্য মোটেও সহজ হবে না। টানা ব্যর্থতায় সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাজিলের পারফরম্যান্স রীতিমতো তলানিতে পৌঁছেছে। সেই তলানি থেকেই উঠে এসে সাফল্যে ফিরতেই মূলত আনচেলত্তির শরণাপন্ন হয়েছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। ব্রাজিলের জন্য সাফল্য বলতে শুধু বিশ্বকাপ জেতাকেই বোঝায়। সব মিলিয়ে আনচেলত্তির জন্য চ্যালেঞ্জটা এখন বিশাল।
ভিনিসিয়ুস–রদ্রিগোদের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলা আনচেলত্তি ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের অন্যতম সফল কোচ। সেই সাফল্যের ওপর আস্থা রেখেই মূলত তাঁকে বেছে নিয়েছে সিবিএফ। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সাফল্য কি আনচেলত্তি ব্রাজিলের ডাগআউটে দাঁড়িয়ে এনে দিতে পারবেন? বার্তা সংস্থা এএফপি এমন তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে, যা আনচেলত্তিকে ব্রাজিলের কোচ হিসেবেও বড় সাফল্য এনে দিতে পারে।
শান্ত স্বভাব
‘কোয়াইট লিডারশিপ’ বইয়ের লেখক আনচেলত্তি শান্ত স্বভাবের মানুষ হিসেবেই পরিচিত। ফুটবল দুনিয়ার পাহাড়সম চাপ ঠান্ডা মাথায় সামলানোর অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। তুমুল চাপের মুখেও নিজেকে স্থির রাখতে পারেন। গাম চিবুতে চিবুতে চোখের ইশারায় বদলে দিতে পারেন খেলার গতিপথও। এমন চাপ নিয়েই রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি, বায়ার্ন মিউনিখ, এসি মিলান ও পিএসজির মতো বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোর হয়ে সাফল্য পেয়েছেন আনচেলত্তি। ব্রাজিলের ডাগআউটে চাপটা আরও বেশি থাকবে। আনচেলত্তির শান্ত স্বভাব সেই চাপ সামলানোর কাজটা নিশ্চিতভাবেই অনেক সহজ করে দেবে।
রিয়াল মাদ্রিদে আর অল্প কিছুদিন আছেন আনচেলত্তি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।