মির্জাপুরে কুমুদিনী হাসপাতালের ঘাটে পদচারী–সেতু নির্মাণের দাবি
Published: 14th, May 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরে লৌহজং নদের কুমুদিনী হাসপাতাল ঘাটে সেতু না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন অন্তত ৩৫টি গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা এই ঘাটে একটি পদচারী–সেতু নির্মাণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সভা-সমাবেশ করছেন, তবে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাঁরা হতাশ।
সর্বশেষ গত শুক্রবার বিকেলে সদরের সাহাপাড়া বাজারে সমাবেশ করেন সাহাপাড়া, আন্ধরা, মুন্দিরাপাড়া, সরিষাদাইড়, পাহাড়পুর, ভাওড়া, কুতুববাজারসহ আশপাশের গ্রামের লোকজন। সমাবেশ স্থানীয় বাসিন্দা শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের প্রদর্শক (ডেমোনেস্টেটর) প্রাণ গোপাল সাহা, সরিষাদাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মুক্তি সাহা, মির্জাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নিরঞ্জন পাল, ব্যবসায়ী খন্দকার সালাউদ্দিন, তারপদ সাহা, শ্রীদীপ সাহা, বিপ্লব কুমার সাহা, সাবেক ইউপি সদস্য ময়নাল হক, খন্দকার আবদুল সাত্তারসহ কয়েক শ মানুষ অংশ নেন।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই ঘাটে সেতু না থাকায় মির্জাপুরের দক্ষিণাঞ্চলসহ আশপাশের অন্তত ৩৫ গ্রামের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভরা বর্ষায় ঘাটে খেয়ানৌকায় পারাপার চলে। এ ছাড়া শুষ্ক মৌসুমে চলাচলের জন্য স্থাপন করা হয় বাঁশের সাঁকো। কয়েক মাস আগেও প্রায় এক লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁশের সাঁকো স্থাপন করা হয়। এরই মধ্যে ৩ মে সন্ধ্যার পর উজানের পানির স্রোত আর কচুরিপানার চাপে সাঁকোটি ভেসে যায়। নদ পারাপারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় লোকজন প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে পোষ্টকামুরী ও পাহাড়পুর এলাকার দুই সেতু দিয়ে গন্তব্যে যান। এ কারণে অতিরিক্ত অর্থ ও সময় নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি এলাকাবাসী।
আজ বুধবার সকালে দেখা যায়, ভেঙে যাওয়া বাঁশের সাঁকো চার দিন আগে মেরামত করা হয়েছে। নদে পানি আগের চেয়ে কম। স্রোতও কমে গেছে। সাঁকো দিয়ে লোকজন কোনো রকম পার হচ্ছেন। লোকজন সাঁকো দিয়ে হেঁটে নদ পার হয়ে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের তৈরি করা রাস্তা দিয়ে রিকশা, অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়িসহ নানা ধরনের যানবাহনে গন্তব্যে যান। কুমুদিনী হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং স্কুল ও কলেজ, ভারতেশ্বরী হোমসের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই নদের দক্ষিণ পাড়ে থাকেন। তাঁরাও গ্রীষ্মে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষায় নৌকা ব্যবহার করে নদের উত্তর পাড়ে অবস্থিত ওই সব প্রতিষ্ঠানে কর্মস্থলে যান।
কুমুদিনী হাসপাতালের কর্মচারী বুড়িহাটী গ্রামের সিদ্দিক মিয়া জানান, ‘সাঁকো যখন ভেঙেছিল, তখন দুই কিলোমিটারেরও বেশি জায়গা ঘুরে কর্মস্থলে আসতে হয়েছে। এতে বাড়তি টাকা ও সময় ব্যয় করতে হয়।’
নিজের অপারগতার কথা জানিয়ে গৃহিণী নাজমা বেগম বলেন, ‘বয়স হইছে। অহন আর এই বাঁশের বিরিজ দিয়া হাঁটা পারি না। একটা পাকা বিরিজ অইলে কতে যে ভালো অইতো।’
মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘লৌহজং নদের ওই ঘাটটি কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নিজস্ব রাস্তার সঙ্গে যুক্ত। এলজিইডি থেকে ঘাটে সেতু নির্মাণ করা যাবে, তবে কুমুদিনী কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে।’
কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচালক প্রদীপ কুমার রায় জানান, ‘ওই স্থানে সেতু নির্মাণের অনুমতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। প্রায় ২০ বছর আগে হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে একটি ট্রাক চলাচলের সময় কুমুদিনীর এক নারী কর্মীর পায়ের ওপর দিয়ে চালক চাকা উঠিয়ে দেন। পরে ওই নারী মারা যান। রাস্তাটিতে প্রচুর রোগীসহ হাসপাতালের কর্মী ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা চলাচল করেন। সেতু নির্মাণ করা হলে যান চলাচল করলে দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকে। এ জন্য সেতু স্থাপনে কর্তৃপক্ষ অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে এলাকাবাসীর দাবি অনুযায়ী ওই স্থানে পদচারী–সেতু হলে ভালো হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
সেই খাদিজাতুলকে জিএস প্রার্থী করে জকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের সমন্বিত প্যানেল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে সমন্বিত প্যানেল ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। এতে জিএস পদে মনোয়ন দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাইবার নিরাপত্তা মামলায় কারাগারে থাকা খাদিজাতুল কুবরাকে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং ক্যাম্পাসে পরিচিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত এই প্যানেলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’। প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়বেন ছাত্র অধিকার পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি এ কে এম রাকিব। এজিএস পদে লড়বেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য আতিকুর রহমান তানজীল।
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল ঘোষণা করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মুনতাসির মুকুল।
ঘোষিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ দেওয়া হয়েছে। এজিএস পদপ্রার্থী আতিকুর রহমান তানজীল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
সমন্বিত প্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক পদে অনিক কুমার দাস, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে নুসরাত চৌধুরী জাফরিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মাশফিকুল ইসলাম রাইন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে আল শাহরিয়ার শাওন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে অর্ঘ্য শ্রেষ্ঠ দাস, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে অপু মুন্সী, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে তাকরিম আহমেদ ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে কামরুল হাসান নাফিজ মনোনয়ন পেয়েছেন। এ ছাড়া পরিবহন সম্পাদক পদে মাহিদ হাসান, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক পদে আনন বিন রহমান এবং পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে রিয়াসাল রাকিব মনোনয়ন পেয়েছেন।
এ ছাড়া সাতটি সদস্য পদের মধ্যে ছয়টিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। আরেকটি সদস্যপদের প্রার্থী পরবর্তী সময়ে ঘোষণা করা হবে। সদস্য পদে লড়বেন ইমরান হাসান ইমন, সাদমান সাম্য, সুলতান মাহমুদ শুভ, মনিরুজ্জামান মনির, তৌহিদুল ইসলাম তানিম ও আরিফুল ইসলাম আরিফ।
প্যানেল ঘোষণার পর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সব অধিকার বাস্তবায়নে আমাদের এই প্যানেলে যে নাম ঘোষণা করলাম, সেই মনোনীত সদস্যরা জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে প্রচেষ্টা চালাবে। আমরা যাদের প্যানেলে রেখেছি, বিগত সময়ে তারা শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ, আন্দোলনসহ সকল কর্মকাণ্ডে মেধা-মনন দিয়ে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষার্থীরা তাদের মূল্যায়ন করবে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আগামী ২২ ডিসেম্বর। কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের পাশাপাশি একই দিন একটি ছাত্রী হল সংসদের নির্বাচনও হবে। ফলাফল ঘোষণা হবে ২২-২৩ ডিসেম্বর।