ঢাবি ছাত্র শাহরিয়ার হত্যা: গ্রেপ্তার আসামি তামিমের মাদারীপুরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ
Published: 14th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার তামিম হাওলাদারের গ্রামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মাদারীপুরের ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী এলাকায় একদল বিক্ষুব্ধ লোক এ আগুন দেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
গ্রেপ্তার তামিম হাওলাদার (৩০) সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী এলাকার এরশাদ হাওলাদারের ছেলে। আলোচিত এ হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার বাকি দুজনের বাড়িও মাদারীপুরে। তাঁরা হলেন ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী গ্রামের পলাশ সরদার (৩০) ও ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের শশিকর গ্রামের সম্রাট মল্লিক (২৮)।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সূত্র জানায়, ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় মাদারীপুরের তিনজন গ্রেপ্তার হওয়ার খবর বুধবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। গ্রেপ্তার তিনজন মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা হলেও তাঁদের বাড়ি আলাদা স্থানে। বুধবার বিকেলে ছাত্রদলের স্থানীয় কয়েকজন কর্মী–সমর্থকসহ স্থানীয় বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জড়ো হয়ে গ্রেপ্তার তামিম হাওলাদারের বাড়িতে প্রথমে হামলা চালান। পরে সন্ধ্যার দিকে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় তামিমদের দুটি ঘর আগুনে পুড়ে যায়। খবর পেয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানার পুলিশের একটি দল ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তবে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো.
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) চাতক চাকমা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার তামিম হাওলাদার বাড়িতে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা অগ্নিসংযোগ করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় কোনো আহত নেই।
আরও পড়ুনশাহরিয়ার ও তাঁর দুই বন্ধুর ওপর হামলা চালায় ১০–১২ জনের একটি দল৩ ঘণ্টা আগেউল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার নিহত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায়। এ ঘটনায় শাহরিয়ারের বড় ভাই এস এ এম শরিফুল আলম শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন।
ডিএমপি বলছে, থানা-পুলিশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত তিন আসামি তামিম, সম্রাট ও পলাশের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। বুধবার সকালে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের বিক্ষোভ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা–উপাচার্য–প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি৮ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র
এছাড়াও পড়ুন:
দিনের বেলায় কিশোর গ্যাং, রাতে মাদকসেবীদের দখলে ডিসি পার্ক
দিনের বেলায় কিশোর গ্যাংয়ের আড্ডা। রাতে বসে মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের আড্ডা। এই কিশোর গ্যাং ও মাদকসেবীদের আনাগোনা সাটুরিয়ার ডিসি পার্কে। উপজেলার হাতকোড়া মৌজায় এই কৃত্রিম দ্বীপ ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এই পার্কে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রকাশ্যে অসামাজিক কার্যকলাপ ঘটালেও মাদকসেবী ও কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পান না স্থানীয়রা।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, এই কৃত্রিম দ্বীপটি দখল করে নিয়েছিলেন আসমান আলী নামে এক ব্যক্তি। সরকার পক্ষ মামলা করে ৪ একর ৬৬ শতাংশ সরকারি জমিসহ দ্বীপটি উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন। ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল কৃত্রিম দ্বীপটির ডিসি পার্ক নামকরণ করে উদ্বোধন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস। সরকারি অর্থায়নে কিছু স্থাপনা করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে সেগুলো।
জানা গেছে, এই কৃত্রিম দ্বীপটি বালিয়াটি জমিদারবাড়ির জমিদাররা করেছিলেন ২০০ বছর আগে। জলাশয়ের মাঝখানে গোলাকার একটি দ্বীপ। যেখানে জমিদাররা পানসী নৌকায় চরে জ্যোৎস্না রাত উপভোগ করতেন এবং আনন্দ-বিনোদন করতেন। জমিদারি প্রথা চলে যাওয়ার পর বা দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দ্বীপটি ভুয়া দলিলপত্রে দখল করে নিয়েছিলেন আসমান আলী নামে এক ব্যক্তি। কয়েক যুগ ভোগদখল করেন তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি জমিদারবাড়ি এখন পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই কৃত্রিম দ্বীপকে বালিয়াটি জমিদারবাড়িতে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য সংস্কার করে একটি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হলে সরকার এই ডিসি পার্ক থেকে বছরে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব পাবে।
এদিকে ডিসি পার্কে তদারকি না থাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে অসামাজিক কার্যকলাপ। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে ডিসি পার্ককে দৃষ্টিনন্দন ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সাটুরিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কয়েকটি প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সরকার পাবে রাজস্ব। রক্ষা পাবে এলাকার মানুষ।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ডিসি পার্ককে দৃষ্টিনন্দন করতে কয়েকটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দ্বীপটির মধ্যে কয়েকটি নৌকা, পিকনিক স্পট, গাড়ি রাখার পার্কিং, শিশু-কিশোরদের চিত্তবিনোদনের জন্য কয়েকটি রাইড গড়ে তোলা হবে। পর্যটকরা টিকিটের মাধ্যমে ডিসি পার্কে প্রবেশ করতে পারবেন। এ ছাড়া শীতকালে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পিকনিক করতে চাইলে ভাড়া নিতে পারবে। তাঁর ভাষ্য, ডিসি পার্কটির প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুতই শেষ করা হবে। এতে কিশোর গ্যাং ও মাদকসেবীদের হাত থেকে এলাকাবাসী রেহাই পাবে। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।