সুরা বাইয়িনা, পবিত্র কোরআনের ৯৮তম সুরা, মদিনায় অবতীর্ণ। এতে ৮টি আয়াত রয়েছে। ‘বাইয়িনা’ অর্থ সুস্পষ্ট প্রমাণ, যা কোরআন ও মহানবী (সা.)-এর মাধ্যমে প্রকাশিত। এই সুরা বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের পরিণতি, কোরআনের সত্যতা এবং সরল ধর্মের বিধান তুলে ধরে। সুরাটি মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত করে: যারা বিশ্বাস ও সৎকাজ করে তারা জান্নাতে, আর যারা অবিশ্বাস করে তারা জাহান্নামে চিরকাল থাকবে।

 সুরার প্রধান বিষয়

 সুরা বাইয়িনা কিতাবি (আহলে কিতাব) ও মুশরিকদের অবিশ্বাসের কথা দিয়ে শুরু হয়। তারা সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার আগে নিজ নিজ মতে অটল ছিল: ‘কিতাবি ও অংশীবাদীদের মধ্যে যারা অবিশ্বাস করেছিল, তারা নিজ নিজ মতে অবিচল ছিল যতক্ষণ না তাদের কাছে এল সুস্পষ্ট প্রমাণ।’ (সুরা বাইয়িনা, আয়াত: ১)

 ‘সুস্পষ্ট প্রমাণ’ বলতে মহানবী (সা.

) ও কোরআনকে বোঝানো হয়েছে: ‘আল্লাহর কাছ থেকে এক রাসুল, যে আবৃত্তি করে পবিত্র কিতাব, যাতে আছে সরল বিধান।’ (সুরা বাইয়িনা, আয়াত: ২-৩)

 কিন্তু এই প্রমাণ আসার পরও কিতাবিরা মতভেদ সৃষ্টি করে এবং সত্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয় (আয়াত: ৪)।

আরও পড়ুনসুরা ইখলাসে আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সরল ধর্মের বিধান

 সুরায় মানুষের জন্য সরল ধর্মের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে: ‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে তাঁর উপাসনা করতে, নামাজ আদায় করতে এবং জাকাত দিতে। এ-ই তো সরল ধর্ম।’ (সুরা বাইয়িনা, আয়াত: ৫)

এই বিধান সব নবীর শরিয়তের মূল ভিত্তি, যা আল্লাহর একত্ববাদ, নামাজ এবং জাকাতের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে।

বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীর পরিণতি

 তাফসির ইবনে কাসিরে সুরা বাইয়িনার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, সুরাটি বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের পরিণতির মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য তুলে ধরে:

 অবিশ্বাসীদের গন্তব্য: ‘কিতাবি ও অংশীবাদীদের মধ্যে যারা অবিশ্বাস করে, তারা জাহান্নামের আগুনে চিরকাল থাকবে, ওরাই তো সৃষ্টির অধম।’ (সুরা বাইয়িনা, আয়াত: ৬)

অবিশ্বাসীরা সুস্পষ্ট প্রমাণ প্রত্যাখ্যান করে এবং কুফরিতে লিপ্ত হয়, ফলে তারা জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে। 

আরও পড়ুনবিসমিল্লাহ এর ফজিলত০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিশ্বাসীদের গন্তব্য: ‘যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, তারাই সৃষ্টির সেরা। তাদের প্রতিপালকের কাছে আছে তাদের পুরস্কার, স্থায়ী জান্নাত, যার নিচে নদী বইবে। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন ও তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট।’ (সুরা বাইয়িনা, আয়াত: ৭-৮)

বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলরা জান্নাতে চিরস্থায়ী সুখ লাভ করবে, যেখানে আল্লাহ ও তাঁর বান্দারা পরস্পরের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবেন।

সুরার তাৎপর্য

 সুরা বাইয়িনা মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত করে: বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী। এটি কোরআনের সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং সরল ধর্মের বিধান তুলে ধরে। অবিশ্বাসীরা সত্য প্রত্যাখ্যান করে সৃষ্টির অধম হিসেবে জাহান্নামে যায়, যখন বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলরা সৃষ্টির সেরা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করে। সুরাটি মানুষকে আল্লাহর ভয়ে বিশ্বাস ও সৎকাজে প্রতিষ্ঠিত হতে উৎসাহিত করে। (মাওলানা মুহাম্মদ শফি, মা’আরিফুল কোরআন, সুরা বাইয়িনা)

আরও পড়ুনঅবিশ্বাসীদের জন্য নুহ (আ.) ও লুত (আ.) স্ত্রীর দৃষ্টান্ত ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অব শ ব স দ র ও অব শ ব স ব শ ব স কর অব শ ব স র আল ল হ ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

জবিতে রাত ১০টার পর অবস্থান নিষেধ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) রাত ১০টার পর শিক্ষার্থীসহ কাউকে অবস্থান না করার নির্দেশনা জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার স্বার্থে রাত ১০টার পর অবস্থান না করার জন্য অনুরোধ করা হলো। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

আরো পড়ুন:

তুমি কি জাদু জানো, ছাত্রীকে ইবি শিক্ষক

সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের তালিকায় জবির ৩ শিক্ষার্থী

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে রাত ১০টার পর ক্যাম্পাসে যেকোনো ধরনের অবস্থান কার্যত নিষিদ্ধ হয়ে গেল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী দিয়া রশিদ বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী হলেও প্রয়োগের ক্ষেত্রে মানবিকতা ও নমনীয়তা থাকা দরকার।”

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশক্রমে বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর সুবিধা ও শৃঙ্খলার কথা বিবেচনা করে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, সবাই নিয়মটি মেনে চলবে।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ