দুই মেয়াদে ফিফার নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০২৩ সালে তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচন করলেও হেরে যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় পদ না থাকলেও ফিফার কংগ্রেস মানেই কিরণের উপস্থিতি। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার প্যারাগুয়েতে অনুষ্ঠেয় ফিফার ৭৫তম কংগ্রেসে যোগ দিতে যাওয়া কিরণকে মঙ্গলবার ভোর ৪টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
কেন তাঁকে প্যারাগুয়ে যেতে দেওয়া হয়নি, সেই কারণটা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না ফুটবল ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ধারণা করা হচ্ছে, কিরণের বিরুদ্ধে কোনো মামলা থাকতে পারে। বাফুফের নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যানকে প্যারাগুয়ে যেতে না দেওয়ার দেশের ফুটবলের জন্য লজ্জাজনক বলেই মনে করছেন ফুটবল-সংশ্লিষ্টরা। আর নির্বাহী কমিটির মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বোর্ড সভায় আলোচনা না করেই ফিফার কংগ্রেসে কিরণকে চূড়ান্ত করাটা ভালোভাবে নেননি অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্বাহী কমিটির এক সদস্য ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘ফিফার কংগ্রেসে যাওয়ার মতো কিরণ ছাড়া কি আর কেউ নেই! বারবার কেন কিরণই বাফুফের প্রতিনিধি হয়ে যাবেন?’
প্রতিবছর ফিফার কংগ্রেসে বাফুফের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যাওয়াটা নিয়মের মধ্যে পড়ে। সে হিসেবে সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার পদাধিকারবলে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এবারের কংগ্রেসে গিয়েছেন। তৃতীয় কোনো সদস্য চূড়ান্ত হয় বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপরে। সভাপতি থাকা অবস্থায় কাজী সালাউদ্দিনের আশীর্বাদে কিরণ যেভাবে মাসের পর মাস বিদেশে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, তাবিথ আউয়ালের সময়েও তা করছেন।
নির্বাহী কমিটির অনেকেরই অভিযোগ, সভাপতি চাইলে অন্য কাউকে ফিফার কংগ্রেসে পাঠাতে পারতেন। তাদের কাছে বিষয়টি রহস্যজনক। এবার বিদেশে যাওয়াটা কিরণের ব্যক্তিগত সফর ছিল না। ‘আমাদের সঙ্গে তো একটু আলোচনা করা উচিত ছিল। কিন্তু সভাপতি একক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি খুবই লজ্জাজনক যে বাফুফের একজন সদস্য ফিফা কংগ্রেসে যেতে পারেননি। নিশ্চয়ই তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আছে বলেই তো বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’ এভাবেই নিজের হতাশা প্রকাশ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্বাহী কমিটির এক সদস্য।
নানা ইস্যুতে প্রায়ই সমালোচিত হন মাহফুজা আক্তার কিরণ। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সর্বশেষ নির্বাচনের আগে তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন পর্যন্ত হয়েছিল। কোনো এক শক্তির জোরে নির্বাচনের ময়দানে নামা কিরণ বাফুফের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যানের চেয়ারটা তাঁর জন্য যেন ন্যস্ত ছিল, নতুন কমিটির দায়িত্ব বণ্টনে তা ফুটে ওঠে। অথচ দুর্নীতি ও অনিয়মের অনেক অভিযোগ ছিল কিরণের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ নারী ফুটবলে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া বিদ্রোহের সঠিক সমাধান না হওয়ার পেছনে তাঁর দায়টাও কম নয়। সালাউদ্দিনের মতো নতুন সভাপতি তাবিথও সবকিছুতে কিরণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, যা নিয়ে খোদ বাফুফেতে অসন্তোষ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।
তবে, কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক পতনের ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৭০০ পয়েন্টের ঘরে নেমেছে।
আরো পড়ুন:
প্রথম প্রান্তিকে ইউনিক হোটেল ও ইফাদ অটোসের মুনাফায় বড় উত্থান
ডিএসইতে সূচকের উত্থান, সিএসইতে পতন
আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসই ও সিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। সোমবার সকালে ডিএসইএক্স সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়। তবে, লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর থেকে সূচকের উত্থান দেখা যায়। লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪২.৮০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫.২৯ পয়েন্ট বেড়ে ১০০০ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৯.৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে মোট ৩৭৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৩২২টি কোম্পানির, কমেছে ৩৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬টির।
এদিন ডিএসইতে মোট ৩৪৮ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯৮ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৮.৯৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ২৮৭ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪১.৬৯ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৫.১১ পয়েন্ট কমে ৮৪৫ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১৬.৮৭ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ১১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে মোট ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১০০টি কোম্পানির, কমেছে ৪৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১১টির।
সিএসইতে ১৪ কোটি৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
ঢাকা/এনটি/রফিক