জাতীয় দলের সাবেক পেস বোলিং কোচ চম্পকা রমানায়েকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে খুবই বিস্মিত হয়েছেন। তিনি বিশ্বাসেই করতে পারছেন না এভাকে কোনো দল হারতে পারে। শ্রীলঙ্কান সাবেক এ ফাস্ট বোলার মনে করেন, ব্যাটাররা বোলারকে রিড করে খেলেনি। ইনিংস বড় করার চেষ্টা করেনি সেট ব্যাটার। সিরিজের বাকি দুই ম্যাচে একই ভুল না করার অনুরোধ বিসিবির সাবেক এইচপি কোচের। সাবেক শিষ্যদের ব্যাটে ভালো কিছু দেখতে চান তিনি। বাংলাদেশের ক্রিকেটের নানা দিক উঠে এসেছে চম্পকার সাক্ষাৎকারে। বৃহস্পতিবার কলম্বোয় তার একান্ত সাক্ষাৎকার নেন সেকান্দার আলী।
  
সমকাল: বাংলাদেশের কথা মনে পড়ে?

চম্পকা: অবশ্যই মনে পড়ে। বাংলাদেশের সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি। লম্বা সময় কাজ করেছি বিসিবিতে। জাতীয় দলের বোলিং কোচ হিসেবে ২০০৮ সালে নিযোগ পেয়েছিলাম। চুক্তি শেষে এইচপিতে কাজ শুরু করি। আমার ছেলেরাই এখন শ্রীলঙ্কায় খেলছে। তাসকিন আহমেদ, নাজমুল হোসেন শান্ত, তানজিদ হাসান তামিমরা তো আমার হাত দিয়ে এসেছে। আমার কাছে শান্তকে খুব প্রতিভাবান মনে হয়েছে। তাকে দেখলাম নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে। কেন ছেড়েছে জানি না। আমি বলব, তার মতো একজন অধিনায়ক প্রয়োজন বাংলাদেশের। 

সমকাল: তাহলে আপনার ছেলেদের গত ম্যাচে এত খারাপ ব্যাটিং করা নিয়ে কি বলবেন?

চম্পকা: কখনও কখনও এটা হয়। খেলোয়াড়রা হয়তো কল্পনা করতে পারেনি এরকম কিছু হতে পারে। ১০০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর ক্রিজে যে ছিল তাকে ইনিংস এগিয়ে নিতে হতো। কারণ একবার উইকেট পড়তে থাকলে থামতে চায় না। এই জিনিসটা সর্বদা ব্যাটারদের মাথায় রাখতে হবে। উইকেট যখন পড়া শুরু হয়েছে তখন কামিন্দু ও হাসারাঙ্গাকে খেলতে পারেনি। সোজা বলেও ব্যাট নিতে পারেনি। আমার কাছে মনে হয়েছে সবাই ঘাবড়ে গিয়েছিল। তা না হলে ৫ রানে উইকেট পড়ে না। আমি বলব, তানজিদের উচিত ছিল ইনিংস বড় করা। কারণ সে খুবই প্রতিভাবান একজন ক্রিকেটার। স্কিল আছে, মনযোগ দিয়ে খেললেই হতো। ব্যাটিং পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার। পরিস্থিতি বুঝে খেলতে হতো। পিচ কিন্তু খারাপ ছিল না।
    
সমকাল: ভুলটা কোথায় হয়েছে?

চম্পকা: হাসারাঙ্গা সব সময় লাইন লেন্থ ধরে বল করে। বেশিরভাগ গুগলি ডেলিভারি দেয়। সামনে ব্যাট এনে খেলতে হতো তাকে। পেছনে গেলেই বল প্যাডে আঘাত করে। বাংলাদেশের ব্যাটাররা ওখানে ভুল করেছে। এই ম্যাচ থেকে না শিখে থাকলে পরের ম্যাচেও ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। বিশেষ করে হাসারাঙ্গার কাছে আবারও বিট হবে। শ্রীলঙ্কান এই লেগ স্পিনারের কাছে বহুবার এভাবে পরাস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। 

সমকাল: প্রেমাদাসায় পরের ম্যাচে কি করলে ভালো করা সম্ভব হবে?

চম্পকা: বাংলাদেশের বোলিং বরাবরই ভালো। ৫০ ওভারের ম্যাচে ২৮০ বা ৩০০ রান করতে হবে জিততে। খুব খারাপ উইকেট হলে আলাদা কথা। প্রেমাদাসার উইকেট অতটা খারাপ না। আমি বলব, ব্যাটিংয়ে জুটি গড়ে খেলার চেষ্টা করতে হবে। ১০০ বা ৮০ রানের জুটি হলে বড় সংগ্রহ দাঁড়াবে। আমি বুঝতে পারি সিনিয়ররা চলে যাওয়ায় বাংলাদেশ কিছুটা সংগ্রাম করছে। কিন্তু শান্ত, মিরাজরা তো এখন সিনিয়র। যে কোনো পরিস্থিতিতে দলকে এগিয়ে নিতে তাদের দায়িত্ব নেওয়া উচিত।
 
সমকাল: কোচ হিসেবে বাংলাদেশে আপনার কোনো তিক্ত অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে?

চম্পকা: আমি খুশি ছিলাম। বিসিবির কাছ থেকে সব ধরনের সমর্থন পেয়েছি। সমস্যা হয়েছে ওখানে একইরকম উইকেটে খেলা হয়। ছেলেদের উচিত ভিন্ন ভিন্ন উইকেটে খেলা। আমি অনেকবার বলার পরও পরিবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বেড়েই উঠে একইরকমের উইকেটে খেলে। ফলে ভিন্ন কন্ডিশনে গিয়ে ভালো করতে পারে না। এছাড়া এইচপির প্রোগ্রাম শুধু প্র্যাকটিসে সীমাবদ্ধ রাখা হতো। পাঁচ ছয়মাস টানা প্র্যাকটিস করলেই উন্নতি হয় না। এজন্য বড় দলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে হতো। এশিয়ার বাইরে ম্যাচ খেলা সম্ভব হলে ছেলেরা বুঝতে পারত কি শিখেছে এবং বিপরীত কন্ডিশনে কিভাবে খেলতে হয়। ম্যানেজমেন্টকে বলেও এটা বুঝাতে পারিনি। এছাড়া আর কোনো অভিযোগ নেই আমার। সেদিক থেকে বলব খুব ভালো ছিলাম ওখানে।
 
সমকাল: বিসিবি থেকে আবার ডাক পেলে যাবেন?

চম্পকা: আমি জানি না নতুন করে ডাকা হবে কিনা। তেমন কোনো প্রস্তাব পেলে খণ্ডকালীন সময়ের জন্য যুক্ত হতে পারি। কারণ আমি এখন ইংল্যান্ডে থাকি। পরামর্শক কোচ হিসেবে কাজ করতে পারি। পূর্ণ সময়ের জন্য হলে করা সম্ভব হবে না।

সমকাল: চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করার খবর দেখেছেন?

চম্পকা: এরকমটা শুধু হাথুরুসিংহের সঙ্গে করা হয়নি। আগেও অনেক কোচকে এভাবে বিদায় করা হয়েছে। বেশিরভাগ কোচই কষ্ট নিয়ে ছেড়ে গেছে। যেটা ক্রিকেট বোর্ড বা দেশের জন্য ভালো না। বিশ্বের কাছে এই বার্তা কিন্তু খুব দ্রুত পৌঁছে গেছে। আমরা দেখেছি বাংলাদেশে বড় কোচরা কাজ করতে আগ্রহী হয়নি। আপনি নিয়োগ দেওয়ার পর মেয়াদপূর্ণ হলে বিদায় করে দাও। মাঝপথে চুক্তি বাতিল করা ভালো কিছু না। আমি আশা করব বিসিবি বর্তমান কর্মকর্তারা বিষয়টি অনুধাবন করবেন। সত্যি বলতে আমার সঙ্গে কোনো তিক্ততা ছিল না। কোচদের সম্মান দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোচরা বোর্ডের কাছে সম্মানিত না হলে খেলোয়াড়রা মানবে কেন?

সমকাল: মাহেলা, সাঙ্গাকারা, মুরালিধরনরা অবসর নেওয়ার পর শ্রীলঙ্কা সংগ্রাম করছিল। এখন কি সেটেল মনে করেন?

চম্পকা: বাংলাদেশের মতো শ্রীলঙ্কাকেও ট্র্যাানজেকশনের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। এখন সেটেলে। টেস্টে বেশ কয়েকজন ভালো ব্যাটার উঠে এসেছে। ওয়ানডে দলটি বেশ ভালো করছে। পরিকল্পিতভাবে গেলে বাংলাদেশও দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। 

সমকাল: বাংলাদেশের ক্রিকেট কাঠামো নিয়ে আপনার মতামত জানতে চাই।
 
চম্পকা: প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট লিগ কিন্তু খারাপ না। ৮ দলের লিগে ভালোই খেলা হয়। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটই হলো উন্নয়নের সোপান। এখানে খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলা হওয়া উচিত। প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে ছেলেরা লড়াই করতে শিখবে না। জাতীয় দলে দুই তিন বছর খেলে হারিয়ে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করতে হলে প্রথম শ্রেণি, এ দল এবং এইচপির কার্যক্রম ভালো হতে হবে। ওখান থেকেই জাতীয় দলের জন্য সেরাদের প্রস্তুত করা হয়। জাতীয় দল হলো মনস্তাত্ত্বিক। অভিযোগ করার সুযোগ নেই। দেশের জন্য ভালো খেলাই কাজ। জাতীয় দলে স্মার্ট দেখাতে হবে। স্কিল আছে, সেগুলোকে দায়িত্ব নিয়ে কাজে লাগাতে হবে। ব্যাটারকে বুঝতে হবে দলের জন্য তার উইকেট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সমস্যা হলো মেন্টাল স্কিল ভালো না। এখানে উন্নতি করতে হবে। এটা কোচের কাজ না। নিজেকে নিজে তৈরি করতে হবে। কোচ মাঠে প্র্যাকটিস করাবে, স্কিল দেখাবে, গেম প্ল্যান দেবে, কিন্তু ২২ গজে গিয়ে কোন বলটা কিভাবে খেলবে সে সিদ্ধান্ত ব্যাটারের।
 
সমকাল: জাতীয় দলে খেলার সময় রাজনীতি করতে দেখেছেন বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশে?

চম্পকা: (হাসি) বাংলাদেশ ছাড়া কোথাও সম্ভব না (হাসি.

.)। মিনিস্টার ও এমপিরা ক্রিকেট খেলছে (হাসি)। রাজনীতি এবং খেলা একসঙ্গে চালিয়েছে তারা (মাশরাফি, সাকিব) এটা ভালো না। এমপি যখন খেলবে কোচ তাকে কি পরিকল্পনা দেবে। কারণ সে তো ক্ষমতাবান।
 
সমকাল: আপনি কি মনে করেন সাকিবের মতো বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ইমেজ হারিয়েছে?

চম্পকা: অবশ্যই। সে খেলোয়াড়, ক্রিকেটে মনযোগ দেওয়া উচিত ছিল তার। দেশকে ক্রিকেট দিয়ে সেরা করা উচিত ছিল। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর রাজনীতি করার সুযোগ তো ছিলই। তার  মতো একজন ক্রিকেটারের উচিত হয়নি খেলা চলাকালে রাজনীতিতে জড়ানো। এখন তো সে দেশেই ফিরতে পারছে না।

সমকাল: আপনি তো অনেক পেস বোলার নিয়ে কাজ করেছেন। নাহিদ রানাকে তো দেখেননি। সে দ্রুতগতির একজন বোলার। সফল হতে তাকে কি করা উচিত মনে করেন?

চম্পকা: তাকে আমি এইচপিতে পাইনি। তালিকায় থাকলেও ইনজুরির কারণে ক্যাম্পে ছিল না। তাই তার ব্যাপারে খুব বেশি বলা সম্ভব হবে না। কারণ তার সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোও দেখা হয়নি। সে তরুণ একজন বোলার। শুধু পেস না কৌশল দিয়ে ব্যাটারদের পরাস্ত করতে শিখতে হবে তাকে। পেস দিয়ে সব সময় সফল হতে পারবে না। কাটার, ইয়র্কার, ইনসুইং, আউট সুইং শিখতে হবে। তার সঙ্গে কোচদের কথা বলতে হবে। প্রতিটি দেশ সম্পর্কে ভালো ধারণা দিতে হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য় দল র উইক ট র জন য র জন ত ক জ কর সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’

তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’

ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।

ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’

পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।

গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।

তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।

দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
  • নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ৩১ বিভাগকে প্রস্তুতির নির্দেশ ইসির