বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সভা ফিফা কংগ্রেস। ফিফার দুই শটির বেশি সদস্যদেশের প্রতিনিধিরা একত্র হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। ব্যতিক্রম বাদে বছরে একবারই হয় এই সভা। এবার ফুটবলের মহাগুরুত্বপূর্ণ সেই সভাতেই তিন ঘণ্টা দেরিতে উপস্থিত হয়েছেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে সফরে থাকায় বৈঠক শুরুর নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে যোগ দেন ফিফার প্রধান। ইনফান্তিনোর এমন কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা উয়েফা। প্রতিবাদস্বরূপ সভা ছেড়ে যান বেশ কয়েকজন। ফিফা সভাপতির বক্তব্যের সময় বেশ কিছু চেয়ার ছিল ফাঁকা।

কংগ্রেস উপলক্ষে ফিফার ২১১টি সদস্য অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা তিন দিন আগে থেকেই প্যারাগুয়ের রাজধানী আসুনসিওতে জড়ো হন। দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে এ বছরের ফিফা কংগ্রেস শুরুর নির্ধারিত সময় ছিল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টা। কিন্তু ফিফা সভাপতি তখনো প্যারাগুয়ে থেকে অনেক দূরে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৩ মে চার দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফরে বের হলে তাঁর সঙ্গী হন ইনফান্তিনো। প্রথমে সৌদি আরব, এরপর কাতারে যান ট্রাম্প। এর মধ্যে ফিফা কংগ্রেসের সময় হয়ে এলে কাতার সরকারের দেওয়া বিমানে চড়ে দোহা থেকে নাইজেরিয়া হয়ে আসুনসিওর পথে রওনা দেন ইনফান্তিনো। ফিফা কংগ্রেস যখন শুরু হওয়ার কথা, সভাপতির বিমান তখন আটলান্টিক মহাসাগরের ওপরে।

ফিফাপ্রধানের এমন বিলম্বে সভামঞ্চ ছেড়ে চলে যান উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্ডার সেফেরিনসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। পরে ইনফান্তিনো সভাস্থলে পৌঁছালে বৈঠক শুরু হয় বেলা একটার কিছু আগে। পরে নিজের বক্তব্যে দেরির পেছনে ফ্লাইটের সমস্যা ও মধ্যপ্রাচ্যে গুরুত্বপূর্ণ সফরের কথা বলেন ইনফান্তিনো, ‘রাজনীতি ও অর্থনীতির বিশ্বনেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ছিল। আমার মনে হয়েছে আপনাদের সবার পক্ষ থেকে, ফুটবলের পক্ষ থেকে আমার সেখানে উপস্থিত থাকা দরকার। ফিফা সভাপতি হিসেবে সংস্থার স্বার্থে কাজ করা আমার দায়িত্ব।’

সভা দেরিতে শুরু হওয়ার কারণে মাঝবিরতির পর ইউরোপের কিছু প্রতিনিধি আর যোগ দেননি। ইনফান্তিনোর নেতৃত্বাধীন ফিফা কাউন্সিলের ৩৭ সদস্যদের জন্য যে আসন সংরক্ষিত ছিল, সেখানে সেফেরিন, ইউরোপের দুই সহসভাপতি হাঙ্গেরির সান্দর সানয়ি ও ইংল্যান্ড এফএর প্রধান ডেভি হিউইটকে দেখা যায়নি। নিজেদের আসনে ছিলেন না জার্মানি, নরওয়ে ও রোমানিয়ার প্রতিনিধিরাও।

ফিফা সভাপতির দেরিতে কংগ্রেসে যোগদানের ঘটনা ‘ভীষণ হতাশাজনক’ উল্লেখ করে উয়েফা এক বিবৃতিতে লিখেছে, ‘যা নিছক ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষার প্রয়াস বলেই প্রতীয়মান, তা খেলাটির উপকারে আসে না; বরং এর স্বার্থকে গৌণ করে তোলে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইনফ ন ত ন ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মাসব্যাপী অনুষ্ঠান শুরু আজ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালা শুরু হচ্ছে আজ ১ জুলাই। আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত মাঝেমধ্যে বিরতি দিয়ে এ অনুষ্ঠান হবে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘জুলাই স্মৃতি উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানমালা’।

ঘোষিত অনুষ্ঠানমালা অনুযায়ী আজ মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে শহীদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে। আজ জুলাই ক্যালেন্ডার দেওয়া হবে এবং জুলাই হত্যাকাণ্ডের খুনিদের বিচারের দাবিতে গণ-স্বাক্ষর কর্মসূচির সূচনা করা হবে। এটি চলবে আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত। এদিন জুলাই শহীদ স্মরণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবৃত্তি চালু করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জুলাই ক্যালেন্ডারের উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

এরপর কয়েক দিন বিরতি দিয়ে দিয়ে এ অনুষ্ঠানগুলো হবে। যেমন ১ জুলাইয়ের পর ৫ জুলাই, এরপর ৭ জুলাই ও ১৪ জুলাই অনুষ্ঠানমালা আছে। শেষ দিন, অর্থাৎ ৫ আগস্ট (অনুষ্ঠানমালায় ৩৬ জুলাই) ৩৬ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ারিং, ৩৬ জেলার কেন্দ্রে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদ পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে বিজয় মিছিল, এয়ার শো, গানের অনুষ্ঠান, ‘৩৬ ডেইস অব জুলাই’সহ জুলাইয়ের অন্যান্য ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, ড্রোন শোর আয়োজন করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জুলাই মাসজুড়ে আন্দোলন হয়। ছাত্র-জনতার এ অভ্যুত্থানকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বা জুলাই বিপ্লব বলা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ