ট্রাম্পের সফর মধ্যপ্রাচ্যকে কতটা বদলে দেবে
Published: 16th, May 2025 GMT
এই সপ্তাহে যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য সফরে বের হয়েছেন, তখন তিনি আগের চেনা জায়গাটা আর আগের মতো নেই দেখে অবাক হচ্ছেন—কারণ, এবার তিনি যে মধ্যপ্রাচ্য দেখছেন, সেটা তাঁর প্রথম প্রেসিডেন্ট থাকার সময়কার মধ্যপ্রাচ্য থেকে অনেকটাই বদলে গেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন হলো—ইসরায়েলের একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে আবির্ভাব।
আরব বিশ্ব এখনো গভীর বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে। অন্তত পাঁচটি আরব দেশ নিজেদের দেশের ভেতরে গভীর সংকটে পড়েছে। এর ফলে তারা কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে বা রাষ্ট্র হিসেবে ব্যর্থতার পথে রয়েছে। এই ক্ষমতাশূন্যতার মধ্যে দুটি বিকল্প শক্তিকেন্দ্র গড়ে উঠেছে।
প্রথমত, পারস্য উপসাগরের ধনী দেশগুলো—বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের কথা বলা যায়। আরব বসন্তে তারা তুলনামূলকভাবে অক্ষত থেকেছে এবং তেল-গ্যাস ও সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের কারণে তারা শক্তিশালী ও স্থিতিশীল কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিশেষ করে সৌদি আরব এখন মধ্যপ্রাচ্যে বড় ভূমিকা নিতে শুরু করেছে।
দ্বিতীয়ত, আরব নয়—এমন তিনটি দেশ ইসরায়েল, তুরস্ক ও ইরানের কথা বলা যায়। এই তিন দেশই এমন শক্তি, যাদের নিজেদের সীমান্তের বাইরে সামরিক প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা আছে। তারা সবাই কোনো না কোনো সময় অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার মুখোমুখি হলেও শেষ পর্যন্ত নিজেদের স্থিতিশীলতা ধরে রেখেছে। এদের রয়েছে বড় অর্থনৈতিক সম্ভাবনা, নিজস্ব অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা এবং উন্নত নিরাপত্তা, সামরিক ও গোয়েন্দা শক্তি।
এই তিন দেশের মধ্যে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র। তুরস্ক ন্যাটোর সদস্য এবং সিরিয়ায় নতুনভাবে প্রভাবশালী এক শক্তি হয়ে উঠেছে। আর ইরান, যদিও তার মিত্রগোষ্ঠী হামাস ও হিজবুল্লাহকে ইসরায়েল ধ্বংস করে দিয়েছে, তবু এখনো যথেষ্ট প্রভাবশালী। বিশেষ করে তার পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে ইরান আজও ইসরায়েল ও আমেরিকার নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এই তিন আরব নয়—এমন রাষ্ট্রকে আরব দেশগুলো সন্দেহ ও অবিশ্বাসের চোখে দেখে; কিন্তু কেউই তাদের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক করতে চায় না। এই তিন দেশের মধ্যে পরস্পরের উদ্দেশ্য ও স্বার্থ নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। তারা একে অন্যকে প্রতিহতও করছে। কিন্তু তারা মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতায় স্থায়ীভাবে থেকে যাবে বলেই মনে হচ্ছে। আরব বিশ্বের বিভক্তির কারণে ভবিষ্যতে এদের প্রভাব আরও বাড়বে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরপরই মনে হচ্ছিল ফিলিস্তিন সমস্যা আবারও মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। যাঁরা বলছিলেন ফিলিস্তিন ইস্যু গুরুত্ব হারিয়েছে, তাঁরা তখন গাজার বেসামরিক মানুষের প্রতি বিশ্বজুড়ে সহানুভূতি ও সমর্থনের জোয়ার দেখে চুপ হয়ে গিয়েছিলেন। ইসরায়েল যখন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালায়, তখন যে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়, সেটাই এই সহানুভূতির মূল কারণ ছিল।
জাতিসংঘ যুদ্ধ থামাতে বলেছে এবং এ নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাবও পাস করেছে। পৃথিবীর অনেক দেশ ও মানুষ ইসরায়েলকে এবং এই যুদ্ধকে তীব্রভাবে নিন্দা করেছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) খতিয়ে দেখছেন ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা করছে কি না। আর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও হামাসের এক শীর্ষ নেতার (যিনি পরে মারা গেছেন) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনি জাতীয় আন্দোলনও সম্পূর্ণ বিভক্ত ও দুর্বল। এখন ফিলিস্তিনিদের সামনে দুটি অপছন্দনীয় বিকল্প—একদিকে হামাস, অন্যদিকে বহুদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা ও কার্যত নিষ্ক্রিয় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ক্ষীণ।
এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসন কীভাবে সিদ্ধান্ত নেবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে এটা স্পষ্ট, তারা ইসরায়েলপন্থী অবস্থান নিয়েছে। ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজাকে রিভিয়ারার মতো পর্যটনকেন্দ্র বানানো যায়। তিনি গাজা থেকে জিম্মি মুক্ত করতে একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করেছেন; কিন্তু যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা দেননি। বরং গাজা–পরিস্থিতি ইসরায়েলের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন, যারা আবারও সেখানে সামরিক অভিযান শুরু করেছে।
ট্রাম্প লেবানন ও সিরিয়া সীমান্তে ইসরায়েলের আগ্রাসী নিরাপত্তানীতিও মেনে নিয়েছেন এবং পশ্চিম তীরে দখলদারি ও বসতি স্থাপনেও সমর্থন দিয়েছেন।
তবে ট্রাম্প একেবারে অনিশ্চিত চরিত্র। নেতানিয়াহুর পাশে বসেই তিনি ঘোষণা করেছেন, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে আলোচনা শুরু করবে। যদিও নেতানিয়াহু চান ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সমাধান হোক সামরিকভাবে। কিন্তু যদি এই আলোচনায় অগ্রগতি হয়, কিংবা ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ বাড়ে, তাহলে তাকেও গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা ও ফিলিস্তিনিদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে হতে পারে।
এই সম্ভাবনাগুলো ইতিমধ্যে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি করছে। এবার মধ্যপ্রাচ্য সফরে ট্রাম্প ইসরায়েল যাবেন না, আর নেতানিয়াহুও অনমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছেন। কিন্তু যেহেতু রিপাবলিকান দলে ট্রাম্পের নিয়ন্ত্রণ একচেটিয়া, তাই হোয়াইট হাউস যদি ইসরায়েলের বিপক্ষে কিছু নীতির প্রস্তাব দেয়, তাহলে নেতানিয়াহুর হাতে বিকল্প তেমন থাকবে না। আর ট্রাম্প কিছু চাইলে তা পেতে চাপ প্রয়োগ করতে তিনি কুণ্ঠাবোধ করেন না—এটা বিশ্বের সব মিত্রদেশই ইতিমধ্যে জেনে গেছে।
আরন ডেভিড মিলার কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর একজন জ্যেষ্ঠ গবেষক এবং
লরেন মর্গানবেসার কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর একজন জুনিয়র ফেলো
স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট, অনুবাদ: সারফুদ্দিন আহমেদ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র এই ত ন ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
সার্কভুক্ত ‘দেশি’ ফুটবলার আশীর্বাদ নাকি শঙ্কা
বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে সার্কভুক্ত দেশগুলোর ফুটবলারদের ‘দেশি’ খেলোয়াড় হিসেবে সুযোগ দেওয়াকে কেউ স্বাগত জানাচ্ছেন, কেউ আবার এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।
আবাহনী লিমিটেডের কোচ মারুফুল হক বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জটা আমাদের দেশি খেলোয়াড়দের সামনে থাকা উচিত।’ অন্যদিকে সাবেক জাতীয় ফুটবলার আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নুর প্রশ্ন, ‘দেশি খেলোয়াড়দের সুযোগ না দিলে জাতীয় দল কীভাবে গড়ে উঠবে?’
নতুন মৌসুমের জন্য খেলোয়াড় নিবন্ধন শেষ হয়েছে গতকাল। শেষ খবর, চারটি ক্লাব সার্কভুক্ত দেশের মোট আট ফুটবলারকে বাফুফের কাছে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। বাংলাদেশ পুলিশ এফসি নিয়েছে নেপালের গোলরক্ষক ও অধিনায়ক কিরণ কুমার লিম্বু, ফরোয়ার্ড আয়ুশ ঘালান এবং ভুটানের মিডফিল্ডার ওয়াংচুক শেরিংকে। ফর্টিস এফসিতে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ও গোলরক্ষক সুজান পেরেরা এবং নেপালের ডিফেন্ডার অনন্ত তামাং। রহমতগঞ্জে নেপালের ডিফেন্ডার অভিষেক লিম্বু। আরামবাগ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী ও মিঠুন সামান্তাকে, তাঁদের একজন গোলকিপার একজন ডিফেন্ডার।
কোনোভাবেই সার্কের খেলোয়াড়কে দেশি কোটায় আনা ঠিক হয়নি। দেশিদের সুযোগ না দিলে খেলোয়াড় উঠে আসবে কীভাবে? জাতীয় দলই–বা কীভাবে তৈরি হবে? এগুলো ভাবতে হবে।আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, সাবেক ফুটবলারক্লাবগুলোর সার্কের ফুটবলারের দিক ঝোঁকার বড় কারণ অর্থনৈতিক সুবিধা। স্থানীয় শীর্ষ খেলোয়াড়দের মাসিক বেতন যেখানে পাঁচ–ছয় লাখ টাকা বা তারও বেশি, সেখানে নেপাল বা ভুটানের জাতীয় দলের খেলোয়াড় পাওয়া যাচ্ছে এক থেকে দেড় লাখ বা তারও কম টাকায়। অর্থনৈতিক ব্যাপারটা যে বড় কারণ, তা স্বীকার করে নিলেন রহমতগঞ্জের সভাপতি টিপু সুলতান, ‘নেপাল, শ্রীলঙ্কা বা ভুটানের ফুটবলারদের মান বাংলাদেশিদের চেয়ে পিছিয়ে নেই। কিন্তু ওদের পাওয়া যাচ্ছে কম টাকায়। ক্লাব এই সুযোগটা নেবেই।’
নতুন নিয়মে প্রতিটি ক্লাব সার্কভুক্ত দেশ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচজন খেলোয়াড় নিবন্ধন করাতে পারবে এবং তাঁদের সবাইকে এক ম্যাচে খেলানো যাবে। সার্কের বাইরের দেশ থেকে পাঁচজন বিদেশি নেওয়া যাবে, তবে মাঠে একসঙ্গে সর্বোচ্চ তিনজন খেলতে পারবেন। অর্থাৎ, এ মৌসুমে কোনো ক্লাব চাইলে একাদশে সর্বোচ্চ আটজন বিদেশি খেলাতে পারবে। কোনো দল যদি এ সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে, সেই দলের একাদশে দেশি খেলোয়াড় থাকবেন মাত্র তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজন আবার অনূর্ধ্ব–১৯ হতে হবে।
সার্ক দেশগুলোর খেলোয়াড় এলে আমাদের লিগের মান বাড়তে পারে। তবে সার্কের এক বা দুজন ঠিক আছে, পাঁচজন খেললে দেশের খেলোয়াড়দের সুযোগ কমবে, এটা ঠিক।ছাইদ হাছান কানন, বাফুফের সদস্য ও সাবেক ফুটবলারদেশের ফুটবল–বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, এত বিদেশি খেলানো জাতীয় দলের জন্য ক্ষতিকর। মোহামেডানের কোচ আলফাজ আহমেদ বলেন, ‘সার্কভুক্ত খেলোয়াড়দের দেশি কোটায় আনা উচিত নয়। এতে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের খেলার সুযোগ কমে যাবে। নতুন নিয়মটা কোনোভাবেই সমর্থন করি না।’ তাঁর প্রস্তাব, সার্কভুক্ত একজন, সার্কের বাইরে তিনজনসহ মোট চারজন বিদেশি খেলানো যেতে পারে।
আটজন বিদেশি খেললে বাকি তিনজন হবে স্থানীয় এবং তারা মানসম্মত হবে। যারা সুযোগ পাবে না, তারা নিজেদের যোগ্যতা বাড়াবে। দুই-তিন মৌসুমের মধ্যে দেশে মানসম্মত খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে।মারুফুল হক, কোচ, আবাহনী লিমিটেডবাংলাদেশের ফুটবলে এর আগে পাঁচজন বিদেশি এক ম্যাচে খেলতে পেরেছেন। কিন্তু এবার নজিরবিহীনভাবে তা আটে পৌঁছানোর সম্ভাবনা আছে। যদিও কোনো ক্লাবই পাঁচজন সার্কভুক্ত খেলোয়াড় নেয়নি। বড় দলগুলো একজনও নেয়নি। তারপরও অভিজ্ঞ কোচ জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুও নিয়মটা সমর্থন করছেন না, ‘সার্কভুক্ত খেলোয়াড়দের দেশি কোটায় খেলানোর সিদ্ধান্তটা আরও চিন্তাভাবনা করে নেওয়া উচিত ছিল। বলা হচ্ছে, আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য সার্কের অন্য দেশগুলোর দুয়ারও খুলবে। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড়েরা কোথাও তো ডাক পায়নি। পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখছি না। এর ফলে আমাদের ফুটবল ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
সাবেক ফুটবলার আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নুও নিয়মটা মানতে পারছে না। তাঁর কথায়, ‘এমনিতে বিদেশিরা বিরাট নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে আমাদের ফুটবলে। তার ওপর এখন কোনোভাবেই সার্কের খেলোয়াড়কে দেশি কোটায় আনা ঠিক হয়নি। দেশিদের সুযোগ না দিলে খেলোয়াড় উঠে আসবে কীভাবে? জাতীয় দলই–বা কীভাবে তৈরি হবে? এগুলো ভাবতে হবে।’
সার্কভুক্ত খেলোয়াড়দের দেশি কোটায় আনা উচিত নয়। এতে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের খেলার সুযোগ কমে যাবে। নতুন নিয়মটা কোনোভাবেই সমর্থন করি না।আলফাজ আহমেদ, কোচ, মোহামেডানতবে এর ইতিবাচক দিকও দেখছেন আবাহনী লিমিটেডের কোচ মারুফুল হক। তিনি বলেন, ‘পুরো বিষয়টা নেতিবাচক হিসেবে দেখছি না। আটজন বিদেশি খেললে বাকি তিনজন হবে স্থানীয় এবং তারা মানসম্মত হবে। যারা সুযোগ পাবে না, তারা নিজেদের যোগ্যতা বাড়াবে। দুই–তিন মৌসুমের মধ্যে দেশে মানসম্মত খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে।’ মারুফুলের সংযোজন, ‘এই চ্যালেঞ্জ দেশি খেলোয়াড়দের সামনে থাকা উচিত। পাশাপাশি আমাদের খেলোয়াড়দের সার্কের অন্যান্য দেশে খেলতে পারার জন্য সব দেশের মধ্যে সমঝোতা হওয়া প্রয়োজন।’
বাফুফের সদস্য ও সাবেক ফুটবলার সাইদ হাছান কানন মনে করেন, সার্কভুক্ত মানসম্মত খেলোয়াড় এলে সমস্যার কিছু নেই। তিনি বলেন, ‘সার্ক দেশগুলোর খেলোয়াড় এলে আমাদের লিগের মান বাড়তে পারে। তবে সার্কের এক বা দুজন ঠিক আছে, পাঁচজন খেললে দেশের খেলোয়াড়দের সুযোগ কমবে, এটা ঠিক।’ কী কারণে বাফুফে এ নিয়ম করেছে? বাফুফের পেশাদার লিগ কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধুরীর ভাষ্য, ‘মূল লক্ষ্য হলো সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে খেলোয়াড় আদান-প্রদান ও প্রতিযোগিতা বাড়ানো। আমাদের পর ভারতও এই নিয়ম করেছে। তবে ভালো ফল না এলে নিয়মটা বদলের সুযোগও আছে।’
বিষয়টি এখনো পরীক্ষামূলক, ১৯ সেপ্টেম্বর প্রিমিয়ার লিগ মাঠে গড়ালে সার্কভুক্ত ফুটবলারদের ‘দেশি’ হিসেবে পারফরম্যান্স বিচার করা যাবে। তখনই নিয়মটির কার্যকারিতা ও প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠবে।