ঢাকার হাজারীবাগে ও মোহাম্মদপুরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে এক শিক্ষর্থীসহ দুজন নিহত হয়েছে। 

শুক্রবার (১৬ মে) রাতে এসব ঘটনা ঘটে। 

মোহাম্মদপুর: মোহাম্মদপুরে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নুর ইসলাম (২৬) নামে এক ফটোগ্রাফার নিহত হয়েছেন। তার কাছ থাকে দুটি ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। 

শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মোহাম্মদপুর মন্দিরের গলিতে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত পৌনে ১০ টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নুর ইসলামের গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝড়া থানার সুজনকাঠি গ্রাম। তার বাবার নাম আবুল ফকির। ঢাকার ধানমন্ডি শঙ্কর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় থাকতেন।  

নিহতের বড় ভাই ওসমান গনি বলেন, “নুর ইসলাম ডে ইভেন্টের ফটোগ্রাফার ছিলো। রাতে মুঠোফোনে খবর পাই ওকে মোহাম্মদপুর এলাকায় দুর্বৃত্তরা কুপিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে ছোট ভাইয়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পাই।” 

তিনি আরো বলেন, “নুর ইসলাম ও তার বন্ধু ইমনকে নিয়ে রিকশা করে মোহাম্মদপুর মন্দির গলি দিয়ে যাচ্ছিলো।  তখন কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাদের রিকশার গতিরোধ করে ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে নুর বাধা দিলে ছুরিকাঘাত করে।

হাজারীবাগ: হাজারীবাগের জিগাতলা এলাকায় দূর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আলভী (২৭) নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। তিনি ডক্টর মালিকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। 

শুক্রবার রাত ৮টার দিকে এ জিগাতলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে এ ঘটনা ঘটে। পরে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তার ২ বন্ধু আহত হয়েছেন।

নিহতের মামি মাহি আক্তার জানান, আলভি তার বন্ধু রাব্বি, ও জাকারিয়ার সঙ্গে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে আড্ডা দিচ্ছিল। ওই মুহূর্তে ২০ থেকে ২৫ জন ছেলে তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তারা আহত হন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে আলভীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 
আলভীর বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। তার বাবার নাম মশিউর রহমান। তিনি হাজারীবাগ বিজিবি ৫ নম্বর গলির একটি ভাড়া বাসায় মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন।

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোহাম্মদ ফারুক বলেন, “দুই যুবকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”

ঢাকা/বুলবুল/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদপ র ন র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ