ফেসবুক পোস্টে প্রতিক্রিয়া দেওয়ায় মৎস্য অধিদপ্তরের পাঁচ কর্মকর্তাকে নোটিশ
Published: 17th, May 2025 GMT
প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খানের ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে প্রতিক্রিয়া (রিঅ্যাক্ট) জানানো ও মন্তব্য করায় মৎস্য অধিদপ্তরের পাঁচ কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর জন্য পৃথক পাঁচটি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশ পাওয়া কর্মকর্তারা হলেন মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এ এস এম সানোয়ার রাসেল, মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ দপ্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মো.
৪ মে এই পাঁচ কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো.আবদুর রউফ।
জানা গেছে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (অতিরিক্ত সচিব হলেও তিনি সচিব হিসেবে রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন) মো. তোফাজ্জেল হোসেনকে পদোন্নতি দিয়ে ‘সচিব’ করার সুপারিশ করে একটি আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দেওয়া হয়। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমানকে সেই আধা সরকারি পত্র দিয়েছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তোফাজ্জেল হোসেনের অতীতের কর্মকাণ্ডের ইতিহাস তুলে ধরে এমন পদোন্নতির বিরোধিতা করে গত ১৪ এপ্রিল ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান। সেই পোস্টে প্রতিক্রিয়া (রিঅ্যাক্ট) জানান ও মন্তব্য করেন ওই পাঁচ কর্মকর্তা।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে দুজন এমন নোটিশ পাওয়ার কথা প্রথম আলোর কাছে স্বাকীর করেছেন।
প্রতিটি নোটিশের ভাষা একই। প্রত্যেক নোটিশেই বলা হয়েছে, এহেন আচরণের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার সন্তোষজনক জবাব তিন কার্যদিবসের মধ্যে দিতে বলা হয়েছিল।
আবদুর রউফের সঙ্গে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে কারণ দর্শানোর এমন নোটিশ দেওয়ার কথা স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেননি তিনি। তাঁর কথামতো পরে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
তিন কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিয়েছেন বলে জানান নোটিশ পাওয়া দুই কর্মকর্তা। তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, নোটিশের জবাব দেওয়ার পর তাঁদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এদিকে আগের পোস্ট শেয়ার করে আজ শনিবার আরেকটি ফেসবুক পোস্টে দেন প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান। তিনি লেখেন, ‘এই পোস্টে ‘‘স্যাড’’ প্রতিক্রিয়া দেওয়ার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে মৎস্য অধিদপ্তরের পাঁচ কর্মকর্তাকে। অবিশ্বাস্য ব্যাপার!’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ কর মকর ত ক ফ সব ক সহক র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শাহরিয়ার হত্যার বিচার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হবে: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার তদন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে এই মামলা বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন শাহরিয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন শাহরিয়ার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এই মামলা বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। অভিযোগপত্র দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি বলতে চাই, আমরা চেষ্টা করব এ অপরাধের রহস্য উদ্ঘাটন করতে। সেই তদন্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হবে।’
এ সময় ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এ ঘটনার তদন্ত একটি জটিল কাজ। ঘটনাটি গভীর রাতে ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেকেই অসুস্থ ছিলেন। তাঁদের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে হেফাজতে নিই। পরে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী সাত দিনে তদন্ত শেষ করে চেষ্টা করব পুলিশের পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ ব্রিফ দিতে।’
পুলিশের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই জানিয়ে শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আমরা অনেক দূর এগিয়েছি; কিন্তু তদন্তের খাতিরে সব বলতে পারছি না। তবে মনে করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এটার মূল ঘটনা উদ্ঘাটিত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে। রোববার বিকেল তিনটায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে এ–সংক্রান্ত একটি বিশেষ সভা হবে।
আরও পড়ুনশাহরিয়ার হত্যায় গ্রেপ্তার তিনজন ৬ দিনের রিমান্ডে৭ ঘণ্টা আগেএর আগে উপাচার্যের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, সহ–উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, কলা অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ, ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলমসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।