উপকূলের জেলা খুলনার জনপদ প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে। এই গরমের মধ্যেও উজ্জীবিত জনস্রোত নগরের পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। সবার গন্তব্য খুলনা নগরের ঐতিহ্যবাহী সার্কিট হাউস ময়দান। ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’-এর ডাকে সাড়া দিয়ে প্রখর রোদ উপেক্ষা করে দলে দলে মানুষ এসে জড়ো হচ্ছেন ওই ময়দানে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় তরুণ প্রজন্মকে নীতিনির্ধারণে যুক্ত করার লক্ষ্যে সারা দেশে যে মাসব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়েছে, তারই অংশ হিসেবে খুলনায় তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশের আয়োজন।

তারুণ্যের ভাবনা ও অধিকার নিয়ে গত সপ্তাহে চট্টগ্রামের পর বৃহত্তর বিভাগ হিসেবে খুলনায় খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ে গতকাল শুক্রবার থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন আজ শনিবার তারুণ্যের সমাবেশ ডাকা হয়েছে। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে ৪টি বৃহত্তর বিভাগে ভাগ করে ধারাবাহিকভাবে সেমিনার ও সমাবেশ আয়োজন করছে।

বেলা আড়াইটার দিকে খুলনা নগরের ময়লাপোতা, রূপসা, নতুন বাজার, ডাকবাংলাসহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে অসংখ্য মানুষকে সমাবেশস্থলের দিকে আসতে দেখা গেছে। রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে নতুন বাজার এলাকা, জোড়াগেট থেকে পুরাতন রেলস্টেশন রোড, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় মাঠ ও সিঅ্যান্ডবি কলোনি এলাকায় বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপসহ নানা ধরনের যানবাহন রেখেছেন সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীরা। যানবাহন রেখে সমাবেশস্থলে হেঁটে যাচ্ছেন বেশির ভাগ লোকজন। দলে দলে মিছিল নিয়ে ঢুকছেন সমাবেশস্থলে। নেতা-কর্মীদের হাতে জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা ও বিভিন্ন রকমের প্ল্যাকার্ড দেখা যাচ্ছে।

খুলনা শহরের বিভিন্ন মোড় ও সড়কের ডিভাইডারগুলো ছেয়ে গেছে প্যানা, ফেস্টুন আর ব্যানারে। সমাবেশস্থলের আশপাশে চোখে পড়ছে অসংখ্য শরবতের দোকান। বিকেলের এই সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। চট্টগ্রাম ও খুলনার পর ২৩ মে বগুড়ায় এবং ২৭ মে ঢাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হবে।

খুলনায় এই কর্মসূচির প্রথম দিনে খুলনা প্রেসক্লাবে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’শীর্ষক সেমিনারটি গতকাল বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনার ও সমাবেশ সফল করতে কয়েক দিন ধরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম ও তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা খুলনায় অবস্থান করছেন।

খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম (তুহিন) বলেন, তারুণ্যের ভবিষ্যৎ–ভাবনা ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির এক যুগান্তকারী কর্মসূচি। এই কর্মসূচি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অভিনব নেতৃত্ব এবং নির্দেশনার উজ্জ্বল স্মারক। বিএনপি তরুণদের মেধা, জ্ঞান এবং তাঁদের স্বপ্নকে ধারণ করতে চায়। পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তরুণদের দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চায়। সমাবেশে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শফিকুল আলম জানান, সমাবেশস্থলে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সমাবেশস্থলের শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের পাশাপশি দলের হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন। নগরের জিয়া হল চত্বর (শিববাড়ি মোড়) সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও নগরবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে জিয়া হল চত্বর থেকে সমাবেশস্থল সাকির্ট হাউস ময়দানে স্থানান্তর করা হয়েছে।

খুলনা মহানগর বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, দূরদূরান্ত থেকে অনেকে গতকাল রাতে এসে গেছেন। আজ দুপুরের আগে থেকে খুলনা ও আশপাশের লোকজন, বিশেষ করে তরুণেরা সমাবেশে যোগ দিতে আসতে শুরু করেছেন। খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ১৯টি সাংগঠনিক জেলার লোকজন অংশ নিচ্ছেন সমাবেশে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব চ ছ স বক দ র জন ত ক ব এনপ র য বদল নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

রংপুর-৪ আসনে নির্বাচনে লড়বেন এনসিপির আখতার হোসেন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রার্থী হিসেবে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রংপুরের কাউনিয়া বাসস্ট্যান্ডে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত পথসভায় এ ঘোষণা দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘কাউনিয়া ও পীরগাছার পক্ষ থেকে আখতার হোসেন এই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন। জুলাই গণভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা- বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের সেই লড়াইয়ে আখতার হোসেন এগিয়ে যাবেন।’ এরপর তিনি আখতারের হাত উঁচিয়ে ধরে তার হাত না ছাড়ার জন্য উপস্থিত জনতার কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আপনাদের এলাকার সন্তান আখতার হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। কয়েকবার জেলও খেটেছেন। নিজের জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা সৈনিকের নাম আখতার হোসেন। সে আপনাদের এলাকার গর্ব। আপনারা কীভাবে তাকে শক্তিশালী করবেন ও আরও উচ্চতায় পৌঁছাবেন, সেটা আপনাদের সকলের দায়িত্ব।’

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় এ পথসভায় আরও বক্তব্য দেন দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এর আগে জুলাই যোদ্ধা শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এনসিপি ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র সূচনা করে। দিনভর চলা এ কর্মসূচির সমাপ্তি হয় রাতে রংপুরের কাউনিয়া বাসস্ট্যান্ড চত্বরে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ