নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের কাছে হার, সোহানদের ৩ ওভারের দুঃখ
Published: 17th, May 2025 GMT
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। তবে জাতীয় দলের ছায়াদল নিয়েও সিরিজের প্রথম চার দিনের ম্যাচে ৭০ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে নুরুল হাসান সোহানরা। রানের চেয়েও বড় কথা দিনের শেষ ৩ ওভার টিকতে না পেরে হেরেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ ‘এ’ দল।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের শেষ ৩ ওভারে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ ‘এ’ দল। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন অন্য প্রান্তে নিঃসঙ্গ হার নিয়ে মাঠ ছাড়েন। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে হাসান মুরাদ ম্যাচ সমতার দিকে নিচ্ছিলেন। ৪১ বল খেলে ৭ রান করেন বাঁ-হাতি স্পিনার মুরাদ। বৃষ্টি ম্যাচ ড্র’র সুযোগ এনে দিলে তিনি ক্রিজে টিকে থাকার দায়িত্ব নেন।
কিন্তু মুরাদ ফিরতেই হেরে গেছে বাংলাদেশ। মুরাদ আউট হলে ম্যাচ বাঁচাতে ইনজুরি নিয়ে নেমে পড়েন এনামুল হক বিজয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ইনজুরির কারণে টপ অর্ডারে ব্যাটিং করতে পারেননি তিনি। কিন্তু এনামুল ২ বল খেলেই আউট হয়ে যান। পরের বলেই এবাদত সাজঘরে ফেরেন। এরপর খালেদ আউট হলে হেরে যায় বাংলাদেশ ‘এ’ দল।
এর আগে সিলেটে টস জিতে বোলিং করে প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলকে ২৫৬ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। দলটির হয়ে মিশেল হে ৮১ রান করেন। বাংলাদেশের খালেদ আহমেদ ৬ উইকেট নেন। জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৬৮ রান তোলে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। অধিনায়ক নুরুল হাসান ৮৮ বলে ১০৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। তার সেঞ্চুরির পরও ১২ রানের বেশি লিড নিতে পারেনি বাংলাদেশ ‘এ’।
দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দল ২৫৭ রান তোলে। তিনে ব্যাট করা নিক কেলি ২০৭ বল খেলে ১২২ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। ওপেনার জো কার্টার ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন। হাসান মুরাদ ৫টি ও নাঈম হাসান নেন ৪ উইকেট। ২৪৬ রানের লক্ষ্যে নেমে ৪৬ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ ‘এ’ দল। দলের একশ’র আগে ৫০ রান করে ফিরে যান জাকির হাসান।
এরপর মাহিদুল ইসলাম হাল ধরে ১৬৭ বলে ৫৭ রানের দৃঢ় ইনিংস খেলেন। তাকে কেউ সঙ্গ দিতে না পারায় হেরেছে বাংলাদেশ ‘এ’। নিউজিল্যান্ডের দলটির ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্পিনার আদিত্য অশোক ৫ উইকেট নিয়ে নুরুলদের ধসিয়ে দিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ক্রিস্টিয়ান ক্লার্ক ও জোশ ক্লার্কসন যথাক্রমে ৩টি ও ৪টি উইকেট নেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে কার কত লাভ-ক্ষতি হলো
চার দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই লড়াইয়ে কেউ পুরোপুরি জয়ী হয়েছে কি না, তা বলা কঠিন। তবে সংঘাতে দুই পক্ষই নিজেদের ‘বিজয়’ দাবি করেছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্বল্প পরিচিত সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল। তবে ভারত দাবি করেছে, এই গোষ্ঠী পাকিস্তান–সমর্থিত। তবে পাকিস্তান এ অভিযোগ নাকচ করে দিলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেন।
এরপর দুই প্রতিবেশী দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি নানা কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে থাকে। এরপরই সেই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেয়। ৭ মে সকালে পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের চারটি স্থানে ‘জঙ্গিঘাঁটি’তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত।
এরপরের দিনগুলোতে দুই দেশই একে অপরের ভূখণ্ডে ড্রোন হামলা চালিয়েছে এবং একে অপরকে হামলার জন্য দায়ী করেছে। ১০ মে উভয় দেশ একে অপরের সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়।
ভারত শুরুতে পাকিস্তানের তিনটি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যার একটি ছিল রাওয়ালপিন্ডি। এ শহরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান সদর দপ্তরের অবস্থান হওয়ায় একে সামরিক ঘাঁটির শহর (গ্যারিসন সিটি) হিসেবে গণ্য করা হয়। এরপর ভারত আরও কিছু পাকিস্তানি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।
যুদ্ধবিরতির পর উভয় দেশই সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের ‘জয়ী’ দাবি করে এবং নানা ‘প্রমাণ’ উপস্থাপন করে। গত সোমবার ভারত ও পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তারা ফোনে কথা বলেন এবং আগামী দিনগুলোতে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার অঙ্গীকার করেন।অন্যদিকে পাকিস্তান ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা এবং ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অবস্থিত সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যা ভারতের অন্তত চারটি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে।
পরিস্থিতি যখন পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে যাচ্ছিল, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন এবং দাবি করেন, এ যুদ্ধবিরতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হয়েছে। পাকিস্তান এ উদ্যোগের প্রশংসা করলেও ভারত বলেছে, বাইরের কারও হস্তক্ষেপ ছাড়াই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যেই হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির পর উভয় দেশই সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের ‘জয়’ দাবি করে এবং নানা ‘প্রমাণ’ উপস্থাপন করে। গত সোমবার ভারত ও পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তারা ফোনে কথা বলেন এবং আগামী দিনগুলোতে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার অঙ্গীকার করেন।
তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২২ এপ্রিলের ঘটনার পর কেউই পুরোপুরি নিজেদের সত্যিকারের জয়ী বলে দাবি করতে পারে না। বরং উভয় দেশই কিছু লাভ করলেও ক্ষতিও হয়েছে তাদের।
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মুজাফফরাবাদের বিলাল মসজিদের প্রাঙ্গণে এক পাকিস্তানি সেনা। পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর, ৭ মে