সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় গত বছর ঝড়েছে সাড়ে ৮ হাজারেরও বেশি তাজা প্রাণ, যা আগের বছরের চাইতে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ১ হাজার ৮৭৯ জনই ছিলেন পথচারী। এই তথ্য প্রমাণ করে আমাদের সড়কে নিরাপদে হাঁটা এবং সাইকেল চালনার জন্য অবকাঠামো গড়ে তোলা কতোটা জরুরি। 

নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে ১২ থেকে ১৮ই মে ২০০৫ তারিখে অষ্টম জাতিসংঘ বৈশ্বিক সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করেছে ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি। এ উপলক্ষ্যে মানব বন্ধন ও র‌্যালিসহ নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়। এ বছর সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ছিল ‘স্ট্রিট ফর লাইফ- মেক ওয়াকিং সেইফ, মেক সাইক্লিং সেইফ (জীবনের জন্য সড়ক – নিরাপদে হাঁটা ও সাইকেল চালানো নিশ্চিত করুন)’।

সপ্তাহব্যাপী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্র্যাক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) যৌথভাবে গত শুক্রবার, ১৬ই মে ঢাকার হাতিরঝিলে এক র‌্যালির আয়োজন করে। অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে শুরু হয়ে র‌্যালিটি ঝিলপাড় পার্কে গিয়ে শেষ হয়। বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ, নীতিনির্ধারক এবং উন্নয়ন সহযোগীরা এতে অংশ নেন। বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো: ইয়াসীন র‌্যালির নেতৃত্ব দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো: সরওয়ার, বিপিএম এবং ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইন।

মো: ইয়াসীন বলেন, এক সময় হাঁটা ছিল মানুষের দৈনন্দিন অভ্যাস। এখন স্বল্প দূরত্বের জন্যও মোটরযান ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে গেছে। হাঁটা ও সাইকেল চালানোকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি এবং যানজট কমাতে সহায়ক। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। 

দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য হাঁটা ও সাইকেল চালানোর গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে মো: সরওয়ার বলেন, পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে প্রত্যেককে ফুটপাথ ও ফুটওভারব্রিজ ব্যবহাারের মতো ট্রাফিক আইনগুলো মেনে চলতে হবে । নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে ফুটপাথগুলোকে হকারমুক্ত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

আহমেদ নাজমুল হুসেইন বলেন, সবার জন্য নিরাপদে হাঁটা ও সাইকেল চালানোর সুযোগ তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। এই অভ্যাসগুলো শুধু আমাদের হৃদরোগ, স্থূলতা ও মানসিক চাপ কমিয়ে স্বাস্থ্যকে সুরক্ষাই করে না, এটি বায়ুদূষণ এবং নগরীর যানজট কমাতেও সহায়তা করে।

এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার মহাখালীতে ব্র্যাক কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ব্র্যাক কর্মী ও সাধারণ নাগরিকরা নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতের দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে এতে অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ২০০১ সাল থেকে ব্র্যাক সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা বাড়ানো এই কর্মসূচির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এই কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কমিউনিটি পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিরাপদ সড়ক ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান। এছাড়া এই কর্মসূচির আওতায় গণপরিবহনে নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিবহন খাতের কর্মীদের সক্ষমতা বাড়ানো, পরিবহন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর বহন ন র পদ র জন য ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

নিরাপদে হাঁটা ও সাইকেল চালানোর সুযোগ সৃষ্টিতে ব্র্যাকের আহ্বান

সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় গত বছর ঝড়েছে সাড়ে ৮ হাজারেরও বেশি তাজা প্রাণ, যা আগের বছরের চাইতে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ১ হাজার ৮৭৯ জনই ছিলেন পথচারী। এই তথ্য প্রমাণ করে আমাদের সড়কে নিরাপদে হাঁটা এবং সাইকেল চালনার জন্য অবকাঠামো গড়ে তোলা কতোটা জরুরি। 

নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে ১২ থেকে ১৮ই মে ২০০৫ তারিখে অষ্টম জাতিসংঘ বৈশ্বিক সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করেছে ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি। এ উপলক্ষ্যে মানব বন্ধন ও র‌্যালিসহ নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়। এ বছর সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ছিল ‘স্ট্রিট ফর লাইফ- মেক ওয়াকিং সেইফ, মেক সাইক্লিং সেইফ (জীবনের জন্য সড়ক – নিরাপদে হাঁটা ও সাইকেল চালানো নিশ্চিত করুন)’।

সপ্তাহব্যাপী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্র্যাক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) যৌথভাবে গত শুক্রবার, ১৬ই মে ঢাকার হাতিরঝিলে এক র‌্যালির আয়োজন করে। অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে শুরু হয়ে র‌্যালিটি ঝিলপাড় পার্কে গিয়ে শেষ হয়। বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ, নীতিনির্ধারক এবং উন্নয়ন সহযোগীরা এতে অংশ নেন। বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো: ইয়াসীন র‌্যালির নেতৃত্ব দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো: সরওয়ার, বিপিএম এবং ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইন।

মো: ইয়াসীন বলেন, এক সময় হাঁটা ছিল মানুষের দৈনন্দিন অভ্যাস। এখন স্বল্প দূরত্বের জন্যও মোটরযান ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে গেছে। হাঁটা ও সাইকেল চালানোকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি এবং যানজট কমাতে সহায়ক। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। 

দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য হাঁটা ও সাইকেল চালানোর গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে মো: সরওয়ার বলেন, পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে প্রত্যেককে ফুটপাথ ও ফুটওভারব্রিজ ব্যবহাারের মতো ট্রাফিক আইনগুলো মেনে চলতে হবে । নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে ফুটপাথগুলোকে হকারমুক্ত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

আহমেদ নাজমুল হুসেইন বলেন, সবার জন্য নিরাপদে হাঁটা ও সাইকেল চালানোর সুযোগ তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। এই অভ্যাসগুলো শুধু আমাদের হৃদরোগ, স্থূলতা ও মানসিক চাপ কমিয়ে স্বাস্থ্যকে সুরক্ষাই করে না, এটি বায়ুদূষণ এবং নগরীর যানজট কমাতেও সহায়তা করে।

এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার মহাখালীতে ব্র্যাক কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ব্র্যাক কর্মী ও সাধারণ নাগরিকরা নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতের দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে এতে অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ২০০১ সাল থেকে ব্র্যাক সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা বাড়ানো এই কর্মসূচির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এই কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কমিউনিটি পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিরাপদ সড়ক ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান। এছাড়া এই কর্মসূচির আওতায় গণপরিবহনে নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিবহন খাতের কর্মীদের সক্ষমতা বাড়ানো, পরিবহন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ