রাঙামাটির লংগদু উপজেলা সদর হতে বাইট্টাপাড়া পর্যন্ত ব্যস্ততম সড়কটির প্রশস্তের কাজ শুরু হয়েছে। তবে সড়কের মধ্যে একাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি না সরিয়ে ঢালাই দেয়ায় আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এভাবে খুঁটি রেখে সড়ক প্রশস্ত করায় এর উপকারিতা নিয়ে এলাকাবাসী সন্দিহান।

উপজেলার বাসিন্দা নওজেশ আলী অভিযোগ করেছেন, প্রশাসন এতদিন পর সড়কটি প্রশস্ত করার কাজে হাত দিলো, অথচ বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো রেখে কাজ করলে সড়ক প্রশস্তের উপকারিতা তেমন পাওয়া যাবে না। তার চেয়ে সড়ক প্রশস্ত না করাই ভালো। বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে সড়ক প্রশস্তের দাবি জানান তিনি।

লংগদু উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আলম বলেন, ‘‘আমরা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ হতে প্রায় ১০ মাস আগে থেকে একাধিকবার বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠির মাধ্যমে খুঁটি সরানোর ব্যাপারে অবহিত করার পরও এখনো পর্যন্ত সড়কের মধ্যে খুঁটিগুলো রয়ে গেছে। অন্য দিকে ঠিকাদারের কাজের মেয়াদও শেষ হওয়ার পথে। তাই জনস্বার্থে সড়কের কাজ চলমান।’’  

আরো পড়ুন:

নবীগঞ্জে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে বাস খাদে, আহত ৫

ধানমন্ডির ২৭ নম্বর রোড এখন ‘শহীদ ফারহান ফাইয়াজ’ সড়ক

বিদ্যুৎ বিভাগের খাগড়াছড়ি নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুল আলীম বলেন, ‘‘আমি ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাঙামাটি নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি, দ্রুত সময়ে দুই অধিদপ্তরের সমন্বয়ে খুঁটি সরানোর কাজ শুরু করা হবে।’’ 

দীঘিনালা আবাসিক প্রকৌশলী নজরুল ইসলামকে কাজের ইস্টিমেট তৈরি করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুল আলীম। 

লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কফিল উদ্দীন মাহমুদ বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ বিভাগকে একাধিকবার উপজেলা প্রকৌশলী বিষয়টি অবগত করলেও তারা এখনো ব্যবস্থা নেয়নি। তবে ইতিমধ্যে আমিও বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি, আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক থেকে বিদ্যুতের খুঁটিগুলো সরিয়ে নেয়া হবে। এরপর ঢালাইয়ের কাজ হবে।’’
 

ঢাকা/শংকর/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন সড়ক দ র ঘটন সড়ক প রশস ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্কের কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্রমজীবী ভোটারদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য জোহরান মামদানি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনের দলীয় বাছাইয়ে সবাইকে চমকে দিয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমোকে হারিয়ে প্রাথমিক জয়ী হন জোহরান মামদানি। গত ২৪ জুন এই দলীয় বাছাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

গত মঙ্গলবার র‍্যাঙ্কড চয়েস পদ্ধতিতে (পছন্দের ক্রমানুযায়ী পাঁচজন প্রার্থীকে ভোট দেওয়া) তৃতীয় ধাপে ৫৬ শতাংশ ভোট পেয়ে চূড়ান্ত জয় নিশ্চিত করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত জোহরান। প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো পেয়েছেন ৪৪ শতাংশ ভোট।

জোহরানের এই সুষ্পষ্ট বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন তুলেছে। তবে একই সঙ্গে ভোটের মাঠে তাঁর দুর্বলতা কোথায় থাকতে পারে, তা নিয়েও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।

ভোটের প্রথম ধাপের ফলাফলে দেখা গেছে, ব্রাউনসভিল এবং ইস্ট ফ্ল্যাটবুশের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ–অধ্যুষিত এলাকায় খুব একটা ভালো করতে পারেননি জোহরান। এসব এলাকায় বেশ বড় ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন অ্যান্ড্রু কুমো।

ব্রাউনসভিল ও ইস্ট ফ্ল্যাটবুশের ৬০ শতাংশের বেশি বাসিন্দা কৃষ্ণাঙ্গ। এসব এলাকায় দারিদ্র্যের হারও বেশি। নিউইয়র্ক নগরে সামগ্রিক দারিদ্র্যের হার যেখানে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ, সেখানে ব্রাউনসভিলে এই হার ৩২ দশমিক ৪ এবং ইস্ট ফ্ল্যাটবুশে সেই হার ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ।

দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত ব্যাপক আলোচিত এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি, সেসব এলাকার মধ্যে ৪৯ শতাংশের সমর্থন পেয়েছেন কুমো, আর মামদানির পক্ষে সমর্থন ছিল ৩৮ শতাংশ।

অন্যদিকে যেসব এলাকায় কৃষ্ণাঙ্গদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, সেখানে কুমোর পক্ষে সমর্থনের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ শতাংশে।

তবে এখানেই মামদানি অনেককেই চমকে দিয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এবার ২০ ও ৩০ বছর বয়সী তরুণ ভোটারদের উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি, যা ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনকে ছাড়িয়ে গেছে।

এসব পরিসংখ্যানের কারণে প্রশ্ন উঠেছে, নিউইয়র্ক নগরে বসবাসের জন্য সাশ্রয়ী শহরে পরিণত করার যে প্রতিশ্রুতি জোহরান দিয়েছিলেন, তা কি কোনো কাজেই আসেনি? নাকি এসব পরিসংখ্যানের পেছনে লুকিয়ে আছে আরও জটিল কোনো গল্প।

পরিচিত মুখ, কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা

নির্বাচনের প্রাথমিক ফল ঘোষণার আগেই কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল, নিম্ন আয়ের ও কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের সমর্থন আদায়ে কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন জোহরান।

মার্চ মাসে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায়, যেসব ভোটারের পরিবারের আয় ৫০ হাজার ডলারের নিচে, তাদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ প্রথম পছন্দ হিসেবে কুমোকে বেছে নিয়েছেন।

জরিপে দেখা যায়, মেয়র প্রার্থী নির্বাচনের দলীয় বাছাইয়ে নয়জন প্রার্থীর মধ্যে জোহরান ছিলেন অনেক পিছিয়ে। তখন মাত্র ১১ শতাংশ সমর্থন ছিল তাঁর প্রতি। কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে তাঁর অবস্থান ছিল আরও নিচে—মাত্র ৮ শতাংশ। অথচ জরিপে কুমো পেয়েছেন ৫০ শতাংশ ভোট।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু বিষয়ের কারণে কুমো সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন। রাজনৈতিক পরামর্শক জেরি স্কারনিক বলেন, ‘কুমো এই নির্বাচনের আগেই পরিচিত মুখ ছিলেন। শুধু দুবারের গভর্নরই নন, বরং সাবেক গভর্নর মারিও কুমোর ছেলে এবং প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রশাসনেও কাজ করেছেন তিনি।’

আরও পড়ুনজোহরান মামদানি: প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতার দোটানায় নিউইয়র্কের নতুন স্বপ্ন০২ জুলাই ২০২৫ডেমোক্র্যাট প্রাইমারি নির্বাচনে জয়ের খবরে সমর্থকদের সঙ্গে উল্লাস করছেন জোহরান মামদানি। ২৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ