কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াইফাই সংযোগ নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছেন। প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি শিক্ষার্থীদের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমস্যার তীব্রতা আরো বেড়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অর্থায়নে বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন নেটওয়ার্ক (বিডিরেন) ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ভবন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ডর্মেটরি, আবাসিক হলগুলোসহ কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করে।

সংযোগ স্থাপনের পর থেকেই নানা ধরনের জটিলতা দেখা যায় ওয়াইফাই সংযোগে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান বেশিরভাগ সময়ই ওয়াইফাই না থাকা, বিদ্যুৎ সংযোগ পরবর্তী দেরিতে ওয়াইফাই আসা, পর্যাপ্ত লোড নিতে না পারা, পর্যাপ্ত রাউটারের অভাব ইত্যাদি সমস্যার সমাধানে এখন পর্যন্ত স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। 

আরো পড়ুন:

প্রশাসনিক কাজেও বিরত থাকার ঘোষণা কুয়েট শিক্ষক সমিতির

যবিপ্রবিতে মাল্টিপারপাস রোভার কর্মশালা

এ বিষয়ে বিজয়-২৪ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রেজাউল করিম সিয়াম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে বিজয়-২৪ হলে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক প্রচুর সমস্যা করছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে তা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। বর্তমানে এর অবস্থা একদম নাজুক। ফলে পড়াশোনার কাজে অনেক ব্যাঘাত ঘটছে, অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা যাচ্ছে না।”

তিনি বলেন, “আইটি সেলকে এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার জানানোর পরও তারা এর কোনো সুষ্ঠু সমাধান দিতে পারেনি। প্রতিবারই হলের শিক্ষার্থীদের নয়-ছয় বুঝিয়ে এবং সমাধানের আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপণ করছে।”

কাজী নজরুল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে হলে ওয়াইফাই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ঠিকঠাক সংযোগই পাওয়া যায় না। বরান্দায় কোনোরকম ওয়াইফাই সংযোগ হলেও রুমে পাওয়া যায় না। এই সমস্যাটা শুধু হলে না, পুরো ক্যাম্পাস জুড়েই। প্রায়ই এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে দেখা গেলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য হয়নি। আমরা চাই, পুরো ক্যাম্পাসে শক্তিশালী নেট সংযোগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক।”

ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাবরিনা আতিকা জিদনী বলেন, “হলের ওয়াইফাই মাঝে মাঝে কাজ করে, কিন্তু অনেক ধীর। হলের শিক্ষার্থীরা কমপ্লেইন করছিল অনেকবার, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। প্রায়ই একদম নো নেটওয়ার্ক দেখায়, বিশেষ করে রাতের বেলা একেবারেই থাকে না।”

সুনীতি-শান্তি হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফাহমিদা সুলতানা রাইসা বলেন, “আগে বিদ্যুৎ গেলেও আসার একটু পর থেকেই ওয়াইফাই কাজ করত। কিন্তু এখন বিদ্যুৎও অনেক বেশি বিরক্ত করছে, তার উপর ওয়াইফাইও। বিদ্যুৎ আসার ৩-৪ ঘণ্টা পরও ওয়াইফাই সংযোগ হয় না। অনেকেরই সেমিস্টার চলছে এখন, মোবাইল-ওয়াইফাই ছাড়া তো এখন চলাই যায় না।”

তিনি বলেন, “সেমিস্টারের ভালো প্রিপারেশন ও নিতে পারছি না আমরা। আবার অনেকের অনলাইন ক্লাসও থাকে, এতেও অংশগ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। ওয়াইফাই এর এমন সমস্যার জন্য আমাদের অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার মো.

সাইফুল ইসলাম বলেন, “বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বজ্রপাতের কারণে ইন্টারনেট সংযোগে সমস্যা হয়েছে। এটা বুঝতে পারার পরপরই আমরা সমাধানের কাজ শুরু করেছি। আশা করি, আজ-কালের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের সিনিয়র প্রোগ্রামার ও দপ্তর প্রধান মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, “এখন এ বিষয়ে কোনো অফিসিয়াল স্টেটমেন্ট দিতে পারব না। তবে বজ্রপাতের কারণে আমাদের ক্যাম্পাসের অনেক রাউটারের ক্ষতি হয়েছে। আমরা দ্রুত সমাধান করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমস য র

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ আমার বিষয়

lশৈশবের প্রিয় মুহূর্ত
আমার বাবা সরকারি চাকরির সুবাদে চন্দ্রঘোনায় থাকতেন। শৈশবের কিছু মুহূর্ত আছে; যা ভুলতে পারি না। এখন বয়স বেড়ে গেছে কিন্তু সেসব মুহূর্ত চোখের সামনে ভাসে। আমাদের বাসাটি ছিল একদম পাহাড়ের চূড়ায়। খুব সুন্দর। তখন আমি চন্দ্রঘোনায় কেপিএম হাইস্কুলে প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করি। সেই সময়কার স্মৃতি খুব বেশি মনে পড়ে। পাহাড়ি এলাকায় আমরা স্কুলে যেতাম। খুব আনন্দ করেই যেতাম। সাম্পানওয়ালা দেখতাম। স্কুল থেকে নদীর ওপারে ঘুরতে যেতাম। আমাদের স্কুলটি ছিল বেশ আধুনিক। শিল্পচর্চা হতো। সেখান থেকেই আমার মনের ভেতরে প্রেরণা সৃষ্টি হয়েছে। পরে ছবি আঁকা বা অনেক কাজ করতে উৎসাহ পেয়েছি। পাঁচ দশক ধরে চারুকলার অঙ্গনে কাজ করে আসছি। আমি পাস করার সাথে সাথেই লেকচারার হিসেবে যোগদান করেছি। সেই থেকে এখনও একটি কথাই বলি, আমি কিন্তু ক্যারিয়ার সচেতন ছিলাম না। অনেকেই ক্যারিয়ার ছাড়া কিছু বোঝে না। আমি সাংসারিক একজন মানুষ। আমার স্বামী চিত্রশিল্পী শওকাতুজজামান মাটির মানুষ ছিলেন। তিনি মারা গেছেন দুই দশক হয়। আমার বাচ্চাদের কোলেপিঠে নিয়ে কাজ করেছি। সারারাত কাজ করতাম, সারাদিন সংসার ও শিক্ষকতায় ব্যস্ত থাকতাম। আমার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের সঁচিয়াখালী। মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়ি যেতাম। নৌকায় করে একদম বাড়ির ভেতর পর্যন্ত যেত। তখন যা দেখেছি নিজের ভেতর তা আত্মস্থ করেছি। ‘জাল’ সিরিজের ছবি তারই প্রতিফল। বাংলাদেশকে আমি ধারণ করার চেষ্টা করি। এই ধারণ করাটা আমার ভেতর থেকে আসে। ইচ্ছে করলেও সরে যেতে পারি না। বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড পেতাম দেশের বাইরে থেকে। সেখান থেকে আমন্ত্রণ পেতাম। সরকারি ও বেসরকারি নিমন্ত্রণে দেশের বাইরে অনেকবার গিয়েছি। সেখানে বিভিন্ন দেশের কাজ দেখেছি। কিন্তু আমার নিজের দেশের সংস্কৃতি, সোঁদা মাটির গন্ধ ভুলে যেতে পারিনি।
lআড্ডা-তর্কে সঙ্গী যারা
আমি কাজপ্রিয় মানুষ। অনেকেই মনে করে আমি কম কথা বলি। সংসার জীবন বা সামাজিক জীবন বলেন আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ; নিজের মতো করে চলি। সততা নিয়ে চলি। ছবি বিক্রির জন্য কখনও ক্রেজি হয়ে যাই না।  
lপ্রথম চিত্র প্রদর্শনী
১৯৭৮ সালে চারুকলায় প্রদর্শিত হয়। সেটা ছিল অন্যরকম অনুভূতি।
lপ্রিয় চিত্রশিল্পী, যে কারণে প্রিয়
দেশে বা দেশের বাইরে অনেকেই প্রিয় চিত্রশিল্পী। ফিদা, মার্ক সেগোল। মনোজের কথা মনে পড়ে। তাঁর কালার আমার খুব পছন্দ। একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে কে জি সুব্রামানিয়ান খুব প্রিয়। আধুনিক চিত্রকলার চোখ খুলে দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের মধ্যে জয়নুল আবেদিন, রফিকুন নবী, আনোয়ারুল হক, কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান, মনিরুল ইসলামের কাজ ভালো লাগে। 
lযা আঁকছি
আমি চিত্রে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বাংলাদেশ আমার বিষয়। সে হিসেবে এখন বিভিন্ন সিরিজ নিয়ে কাজ করছি।
lপ্রিয় উদ্ধৃতি
আমি সততা নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। সততা ও পরিশ্রম যার ঊর্ধ্বে কিছু নেই। v
lগ্রন্থনা: ফরিদুল ইসলাম নির্জন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশ আমার বিষয়