ইসরায়েল ‘ক্যান্সারের টিউমার উচ্ছেদ করা’ প্রয়োজন: খামেনি
Published: 19th, May 2025 GMT
ইসরায়েলকে ‘একটি বিপজ্জনক ক্যান্সারের টিউমার’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এটিকে ‘উচ্ছেদ করা’ প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শনিবার তেহরানে এক সরকারি অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরে ইরানের শীর্ষ নেতৃত্বের বিষয়ে করা মন্তব্যকে ‘লজ্জা ও অসম্মানজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেন খামেনি। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প এমন ভাষায় কথা বলেছেন, যা তাঁর নিজের জন্য যেমন লজ্জার, তেমনি পুরো আমেরিকান জাতির জন্যও অপমানজনক।’
অনুষ্ঠানে খামেনি আরও বলেন, ‘ওই মন্তব্যগুলো এতই নীচু মানের ছিল, সেগুলোর জবাব দেওয়ারও দরকার নেই।’ তিনি অভিযোগ করেন, ট্রাম্প শান্তির কথা বললেও ফিলিস্তিনে যুদ্ধ ও গণহত্যায় ইসরায়েলকে সমর্থন দিচ্ছেন। এর আগে ট্রাম্প তাঁর মধ্যপ্রাচ্য সফরে ইরানের শাসকদের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত ও অকার্যকর’ বলে মন্তব্য করেন। এ ছাড়া তিনি দাবি করেন, ইরানের ‘সবুজ পশুচারণ এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে’। ইরানিরা প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকে বলেও দাবি করেন ট্রাম্প। এই বক্তব্যের পরই ইরান থেকে এমন প্রতিক্রিয়া এলো।
একই দিনে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘ট্রাম্প একদিকে শান্তির বার্তা দেন, অন্যদিকে গাজায় গণহত্যাকে সমর্থন করেন। আমরা কোনটা বিশ্বাস করব?’
এদিকে আজারবাইজানের সঙ্গে আরাস-২০২৫ নামে একটি যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে ইরান। আর্মেনিয়ার সঙ্গে বিরোধপূর্ণ কারাবাখ অঞ্চলে এই মহড়া আগামী বুধবার পর্যন্ত চলবে। ইরানি জেনারেল ভালি মাদানি বলেন, ‘চলমান এই মহড়া সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’ দুই দেশের মধ্যে আগে সম্পর্কের টানাপোড়েন থাকলেও বর্তমানে তা উন্নয়নের চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের বার্তা দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তেহরানে এক কূটনৈতিক সম্মেলনে তিনি বলেন, যদি ইউরোপ আন্তরিকতা ও স্বাধীন চিন্তাভাবনা দেখায়, তবে ইরান সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় শুরু করতে প্রস্তুত। খবর আলজাজিরা ও এএফপির।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ