আম পাকাতে ব্যবহৃত হরমোন কি ক্ষতিকর
Published: 19th, May 2025 GMT
রাজশাহীর কোনো কোনো এলাকায় গাছের সব আম একসঙ্গে পাকাতে ও রং ধরাতে ব্যবহার করা হচ্ছে একধরনের রাসায়নিক। ফল গবেষণাকেন্দ্র বলছে, এটা ‘রাইপেনিং হরমোন’। মাত্রা অনুযায়ী পরিপক্ব আমে ব্যবহার করা হলে কোনো ক্ষতি নেই।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এর আগে টমেটোতে এই হরমোন প্রয়োগ করে তারা পরীক্ষা করেছে, এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আমেও এই হরমোন ব্যবহার করছেন অনেক আমচাষি ও ব্যবসায়ী।
রাজশাহীতে ঘোষিত ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ১৫ মে থেকে গুটি জাতের আম ভাঙা হচ্ছে। ২২ মে থেকে গোপালভোগ ও ৩০ মে ক্ষীরশাপাতি বা হিমসাগর আম বাজারজাত করার কথা। কিন্তু এরই মধ্যে গোপালভোগ আমে বাজার ভরে গেছে। এমনকি নির্ধারিত সময়ের ১২ দিন আগেই ক্ষীরশাপাতি আম পাড়া শুরু হয়েছে।
গত শনিবার রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নোন্দাপুর চাত্রাপুকুর এলাকায় ক্ষীরশাপাতি আম পাড়তে দেখা গেছে। অপরিপক্ব এই আমে ‘টম টম’ নামের একধরনের রাসায়নিক ছিটানো হচ্ছে। আবার উপজেলার কাঁকনহাট পৌর এলাকার সাহাপুর মহল্লায় গোপালভোগ আম পেড়ে একইভাবে হরমোন ছিটাতে দেখে গেছে। চাষিরা বলছেন, এই হরমোন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। আমগুলো একসঙ্গে পাকবে আর সুন্দর একটা রং হবে, পচবে না, সে জন্য তাঁরা এই হরমোন ব্যবহার করছেন। তাঁরা বলছেন, দেশে এই হরমোন অনুমোদিত।
তবে ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার ঘোষণার সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে এই ক্যালেন্ডারের বাইরেও যদি কোনো এলাকায় কোনো আম আগাম পেকে যায়, তাহলে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে আম বাজারজাত করা যাবে। কিন্তু কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহীর কোনো কৃষক এখন পর্যন্ত আগাম আম পাড়ার জন্য প্রত্যয়নপত্র নেননি।
এ বিষয়ে রাজশাহী ফল গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো.
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে সালমা জানান, এটা ইথোফেন–জাতীয় হরমোন। সাধারণত চাষিরা টমেটোতে ব্যবহার করেন। পরীক্ষা করে টমেটোতে এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। একটি আমগাছে সম্পূর্ণ মুকুল আসতে প্রায় ২০ দিন সময় লাগে। যে মুকুলটি শুরুতে আসে আর যেটি শেষে আসে—এই দুই মুকুলের আম একসঙ্গে পাকে না। কিন্তু এভাবে বারে বারে আম পাড়তে গেলেও চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই তাঁরা নির্দেশনা দিয়ে থাকেন, গাছ থেকে পাকা আম পড়লেই ধরে নেওয়া যাবে যে গাছে সব আম মোটামুটি পরিপক্ব হয়েছে। যাঁরা বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ করেন বা যাঁরা উদ্যোক্তা হিসেবে আমের ব্যবসা করেন, তাঁরা এই হরমোন ব্যবহার করে থাকেন, যাতে সব আম একসঙ্গে পাকে ও সুন্দর একটা রং হয়। কিন্তু অবশ্যই পরিপক্ব আম হতে হবে।
কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, গোপালভোগ আম ভাঙার সময় দু–এক দিন বাকি থাকলেও গাছে এই আম পাকা শুরু হয়ে গেছে। তবে ক্ষীরশাপাতি আম পাকতে এখনো অনেক দেরি আছে। ঘোষণা অনুযায়ী কোনো চাষির গাছে আগে আম পাকলে প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার কথা। তাঁর জানামতে কোনো চাষি ক্ষীরশাপাতি আম পাড়ার জন্য প্রত্যয়নপত্র নিতে আসেননি।
তাহলে কীভাবে চাষিরা এই আম পাড়ছেন জানতে চাইলে উম্মে সালমা বলেন, যদি অপরিপক্ব আমে কেউ হরমোন ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে তাঁকে জরিমানা করা হবে। হরমোন ব্যবহার করা আমও পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। দেখা হবে, এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: একসঙ গ আম প ক র জন য আম প ড়
এছাড়াও পড়ুন:
একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদার ছয় সন্তানের পাঁচজনই মারা গেল
একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদা আক্তারের ছয় সন্তানের মধ্যে পাঁচজনই মারা গেল। গতকাল রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জন্ম নেওয়ার পরপরই একটি শিশু মারা যায়। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় একে একে আরও চার নবজাতকের মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কর্মকর্তা মো. ফারুক প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের মোকসেদা আক্তার রোববার সকালে একসঙ্গে এই ছয় সন্তানের জন্ম দেন। তাঁর স্বামী মো. হানিফ কাতারপ্রবাসী। মোকসেদা আক্তারের ননদ লিপি বেগম আজ প্রথম আলোকে বলেন, বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকের অবস্থাও বেশি ভালো নয়।
ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মোকসেদা তিন ছেলে ও তিন মেয়েসন্তান প্রসব করেন। সন্তানেরা ২৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই জন্ম নেয়। জন্মের সময় প্রত্যেকের ওজন ছিল ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামে মধ্যে। এ কারণে তাদের সবার অবস্থাই ছিল সংকটজনক।
আরও পড়ুনঢাকা মেডিকেলে একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম, নবজাতকদের অবস্থা সংকটাপন্ন২২ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে আইসিইউতে পর্যাপ্ত শয্যা খালি না থাকায় তিনজনকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকটি বেসরকারি হাসপাতালে আছে।