টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিনসহ গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী কিনতে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ সুবিধা রয়েছে। এ জন্য কনজ্যুমার ক্রেডিট বা ভোক্তা ঋণ নামে ব্যাংকিং পণ্য রয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন উৎসব সামনে রেখে বা বছরের যে কোনো সময়ে ডেবিট, ক্রেডিট বা প্রি-পেইড কার্ডে এসব পণ্য কেনাকাটা করলে ছাড় পাওয়া যায়। মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের মাধ্যম ব্যবহার করে পণ্য কিনলে ছাড় দিয়ে থাকে। 
ঋণ কীভাবে পাবেন
ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে এ ধরনের ঋণ নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে বিবরণ থাকে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের কল সেন্টারে ফোন করে এ বিষয়ে জানা যায়। কারও কোনো ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব বা অন্য কোনো ঋণ হিসাব থাকলে সেই শাখায় গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। অনেক সময় বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানও ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়। সাধারণত পণ্যের দামের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়। বাকি অর্থ গ্রাহক নগদ বা ডিজিটাল পরিশোধ মাধ্যমে দিতে পারেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঋণ পাওয়ার জন্য কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়। আয়ের সপক্ষে কাগজপত্র, ছবি ইত্যাদি জমা দিতে হয়। ব্যাংকের প্রতিনিধিরা দেখে থাকেন, ঋণ পরিশোধ করার মতো আয় আছে কিনা। সাধারণত এ ধরনের ঋণে কোনো জামানত লাগে না। 
কার্ডে কেনাকাটায় বাড়তি সুযোগ
মানুষ এখন নগদ টাকার পাশাপাশি ইলেকট্রনিক কার্ড দিয়ে হোম অ্যাপ্লায়েন্স কেনাকাটা করেন। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তিন ধরনের কার্ড রয়েছে। ব্যাংকে সঞ্চয়ী বা চলতি হিসাবের বিপরীতে ডেবিট কার্ড ইস্যু করা হয়। আগে থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পরিশোধ করে ব্যাংকের কাছ থেকে প্রি-পেইড কার্ড নেওয়া যায়। অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ড হচ্ছে ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণের একটি সীমাসংবলিত কার্ড। সীমার মধ্যে আপনি যে কোনো কিছু কেনাকাটা করতে পারেন। সব ধরনের কার্ডেই কেনাকাটায় নানা ছাড় ও অফার থাকে। ছাড়ের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চুক্তি হয়। বিপণিবিতানের এসব অফারের তথ্য প্রদর্শন করা হয়। সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংক জানিয়েছে, তাদের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানির হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য কিনলে সর্বোচ্চ ২৪ মাস পর্যন্ত শূন্য ইএমআই সুবিধা রয়েছে। এর মানে কোনো সুদ এবং সার্ভিস চার্জ আরোপ করা হবে না। 
ঈদুল আজহার আনন্দকে আরও সহজ ও উপভোগ্য করে তুলতে বিভিন্ন ব্যাংক দিচ্ছে বিশেষ অফার। বিভিন্ন কেনাকাটা ও সেবায় তাদের ঘোষিত অফারের মধ্যে হোম অ্যাপ্লায়েন্সও রয়েছে। ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে অনলাইন শপিংয়ের ক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট অফার। ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ অফারগুলোয় গ্রাহকরা বিভিন্ন ছাড় উপভোগের সুযোগ পাবেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

ভূমি অধিগ্রহণ না করেই কাজ

সাঁথিয়া উপজেলার গাগড়াখালী-সোনাতলা বাইপাস সড়ক উন্নয়নকাজ শুরু হয়েছিল ছয় বছর আগে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগের অপ্রশস্ত সড়কের পাশে মাটি ফেলাসহ কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু করে। সড়কের বর্ধিত অংশের বেশির ভাগই ব্যক্তিমালিকানাধীন হওয়ায় জমির মালিকেরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে কাজে বাধা দেন। তারা একজোট হয়ে ক্ষতিপূরণের দাবিতে আদালতে মামলা করলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে সড়কটি খুঁড়ে রাখায় খানাখন্দে ভরে গেছে। বৃষ্টিতে বেহাল সড়কটি কাদাপানিতে সয়লাব। পাটগাড়ি এলাকায় কালভার্ট নির্মাণ করে ফেলে রাখা হয়েছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় সেটিও কোনো কাজে আসছে না। এতে অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এ পথে চলাচলকারী ৫০ হাজার মানুষ। 
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের পাবনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়াই গাগড়াখালী-সোনাতলা বাইপাস সড়কের কাজ শুরু হয়। আট কিলোমিটারে  ব্যয় ধরা হয় ২৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। কাজ পায় ঢাকার এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কাজের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। প্রথমদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের পাশে মাটি ফেলাসহ কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু করে। 
গাগড়াখালি, ফেচুয়ান ও তেঘরি গ্রামের সড়কের বর্ধিত অংশের বেশির ভাগ জমিই ব্যক্তিমালিকানাধীন। মালিকদের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে কাজ শুরু করায় তারা বাধা দেন এবং ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা করেন। এখনও মামলার চূড়ান্ত রায় হয়নি। এ কারণে কাজ বন্ধের জন্য আদালত থেকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বর্ধিত অংশ অধিগ্রহণের জন্য টাকা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কাগজপত্র জমা দিয়ে ভূমিমালিকরা টাকা তুলে নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। নামমাত্র কয়েকজন জমির মালিক ক্ষতিপূরণ পেলেও অনেকেই পাননি। কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের কাগজপত্র সঠিক নয়। 
এ বিষয়ে জমির মালিক তেঘড়ি গ্রামের সৈয়দ গোলাম মওলা বলেন, ‘আমার কাগজপত্র সঠিক আছে। আমার মতো গাগড়াখালি, ফেচুয়ান ও তেঘরি গ্রামের ৩০ থেকে ৩৫ জনের কাগজপত্র ঠিক থাকলেও তারা ক্ষতিপূরণ পায়নি।’ 
তেঘড়ি গ্রামের সৈয়দ গোলাম মাওলা, গোলাম রসুল, আব্দুস সাত্তার, আব্দুল ওহাব, গোলাম মোস্তফা, আব্দুল বারি, আলমগীর হোসেন, রিজিয়া খাতুনসহ কয়েকজন জমির মালিক বলেন, ‘২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট ক্ষতিপূরণ চেয়ে পাবনা আদালতে মামলা করেছি। ছয় বছর পেরিয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাড়া পাইনি। ক্ষতিপূরণ পেলে মামলা তুলে নেব।’ 
মামলার বাদী ফেচুয়ান গ্রামের মকবুল হোসেন, সুজন হোসেন ও আজিজ খাঁ জানান, সড়ক হলে সবারই সুবিধা হয়। জমির মালিকরা সড়কের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত। এ ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। 
কথা হলে সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী মাহবুব হাসান জানান, সোনাতলা থেকে পাটগাড়ি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ঠিকাদারের সময় পেরিয়ে যাওয়াসহ কিছু জটিলতার কারণে কাজ শুরু করা যায়নি। 
সরেজমিন পাটগাড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সড়ক ছাড়াই কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এ কালভার্টের দুই পাশে মাটি ফেলে রাখায় কাদামাটিতে একাকার। এ পথ দিয়ে চলাচল এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কটি দ্রুত নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন তেঘড়ি গ্রামের গোলাম কিবরিয়া, পাটগাড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলাম সান, স্কুলশিক্ষার্থী সিমি খাতুনসহ অনেকে। 
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপক প্রহ্লাদ কুমার বলেন, ‘আমরা যথাসময়ে কাজ শুরু করেছিলাম। ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা এবং মামলার কারণে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হই। এরই মধ্যে সময় পেরিয়ে যাওয়ায় আমাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়েছে।’
পাবনা সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী  সাদেকুর রহমান বলেন, ‘যাদের জমির কাগজপত্র সঠিক ছিল, তারা টাকা পেয়েছেন। যাদের কাগজ সঠিক নেই, তারা পাননি। জটিলতা এখনও কাটেনি। মেয়াদ শেষ হওয়ায় প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন প্রকল্প এলে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। অনুমোদন হলে দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সড়কটির কাজ শুরু করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভূমি অধিগ্রহণ না করেই কাজ
  • সাবেক কাউন্সিলর বকুলকে রেখে এজাহারভুক্ত ৩ আসামি বাদ
  • নুরু-রাশেদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে আদালতের নির্দেশ
  • নওগাঁয় শ্বশুরবাড়িকে গুদাম বানিয়ে ৫০০ বস্তা চাল মজুত ব্যবসায়ীর
  • মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে বিআরটিএর নতুন নির্দেশনা
  • এস আলম ও পিকে হালদারসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ৩ মামলা
  • টাকা ছাড়া কথাও বলেন না শিক্ষা কর্মকর্তা