বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় কমেডি ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘হেরা ফেরি’এর তৃতীয় কিস্তি ঘিরে জমে উঠেছে বিতর্ক। ছবির প্রযোজক সংস্থা কেপ অফ গুড ফিল্মস অভিনেতা পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় ৩৫ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ দাবি করে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে।

অভিযোগ, চুক্তি সই করার পরও অপেশাদারভাবে ছবির কাজ থেকে হঠাৎ সরে দাঁড়িয়েছেন পরেশ। এর জেরে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে প্রযোজকদের।

প্রযোজক সংস্থা কেপ অফ গুড ফিল্মসের মালিক অক্ষয় কুমার। অক্ষয়ের প্রায় ৩৫ বছরের ক্যারিয়ারে এই প্রথম তিনি কোনো সহ-অভিনেতার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। বলিউডে যেখানে এমন পদক্ষেপ বিরল, সেখানে এ ঘটনা নিঃসন্দেহে নজর কাড়ছে।

প্রথমদিকে শোনা গিয়েছিল, সৃজনশীল মতভেদের জেরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরেশ রাওয়াল। কিন্তু পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি নিজেই স্পষ্ট জানান, চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রিয়দর্শনের প্রতি তার পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে, আছে ভালোবাসা ও আস্থা। তার সঙ্গে কোনও সৃজনশীল মতবিরোধ নেই।

তিনি লেখেন, ‘আমি ‘হেরা ফেরি ৩’ থেকে সরে দাঁড়িয়েছি, তবে এর পেছনে অন্য কারণ রয়েছে, যা আমি এখনই জানাতে চাই না।’

ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্র ‘বাবু ভাইয়া’কে পরেশ রাওয়াল ছাড়া কল্পনা করা কঠিন। তাই তাঁর এই সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে যান সহ-অভিনেতা অক্ষয় কুমার ও সুনীল শেটিও।

সূত্রের খবর, প্রযোজক সংস্থাটি আগের ধার শোধ করে একটি নিখুঁত প্রোডাক্ট তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। এই উদ্দেশ্যে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগও করা হয়েছিল। পরেশ রাওয়ালের সরে দাঁড়ানোয় সে সব প্রচেষ্টা আপাতত থমকে গিয়েছে।

প্রযোজকদের অভিযোগ, চুক্তি সই করার পরও, এমনকি একটি প্রোমো ভিডিওর শ্যুটিংয়ে অংশগ্রহণ করার পর হঠাৎ ছবিটি ছেড়ে চলে যাওয়া নিছক ‘অপেশাদার’ আচরণ। তাছাড়া, অভিনেতার বাজারদরের চেয়েও বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে তাঁকে রাজি করানো হয়েছিল। সেই আর্থিক বিনিয়োগ এখন প্রায় অনর্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সূত্রের দাবি, ‘এই সিদ্ধান্তের জন্য প্রযোজকদের অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই আইনি পথে হাঁটতে হয়েছে।’

জানা গেছে, পরেশ রাওয়াল ছবির প্রাথমিক প্রস্তুতি বৈঠক ও পরিকল্পনায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করছিলেন। তাই তাঁর এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত শুধু বিতর্কই নয়, প্রযোজকদের মধ্যে অসন্তোষও সৃষ্টি করেছে। ছবির শুটিং শুরু করার জন্য একটি দিন নির্ধারিত হয়েছিল এবং সেই দিনের প্রোমো ভিডিও শুটে অংশ নিয়েছিলেন তিনজন মুখ্য অভিনেতা—অক্ষয়, সুনীল ও পরেশ।

অক্ষয় কুমারও এই প্রোজেক্টের পেছনে অত্যন্ত আন্তরিকভাবে যুক্ত ছিলেন। ছবির স্বত্ব ও অন্যান্য দাবি মিটিয়ে তিনি ‘হেরা ফেরি ৩’ আবার বড় পর্দায় ফিরিয়ে আনার জন্য উদ্যোগী হন। তাই এই মুহূর্তে পরেশ রাওয়ালের সিদ্ধান্ত গোটা দলকেই ভীষণভাবে বিপদে ফেলেছে।

‘হেরা ফেরি ৩’-এর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন প্রিয়দর্শন। প্রথম দু’টি ছবির মতো এই কিস্তিতেও রাহুল, শ্যাম ও বাবু ভাইয়ার চরিত্রে অক্ষয়, সুনীল ও পরেশকেই দেখতে চাইছিলেন দর্শকরা। তবে এখন পরেশ রাওয়াল থাকবেন কি না, তা নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সূত্র: দ্য ওয়াল ও এবিপি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অভ ন ত র র পর

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ