বিতর্ক তৈরি হয় এমন বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না
Published: 20th, May 2025 GMT
৫৪ বছরে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে জমা জঞ্জাল দূর করার সুযোগ এসেছে। এই সুযোগ নষ্ট করা যাবে না। তাই বিতর্ক তৈরি হয় এমন বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না বলে মনে করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
আজ মঙ্গলবার ইসলামী আন্দোলনের নিয়মিত বৈঠক শেষে দলের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদ এসব কথা বলেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। সরকারকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডর, চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল লিজ দেওয়া, নারী কমিশনের প্রস্তাবসহ বিতর্কিত বিষয় বাদ দিয়ে সংস্কারে মনোযোগ দিতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার জনতার প্রশ্নাতীত সমর্থন পেয়েছে উল্লেখ করে মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ইসলামবিরুদ্ধ যে প্রস্তাব হাজির করল, তা দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে আহত করেছে।’
মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতার সঙ্গে সম্পৃক্ত উল্লেখ করে মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, ‘এমন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে নিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে জটিলতা তৈরি করবে।’
শীত মৌসুমের শুরুতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, ‘সংস্কার কার্যক্রমকে গতিশীল করুন। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে মাঠপর্যায়ে জনগণের শাসন নিশ্চিত করা যাবে এবং মানুষ রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠবেন।’
ইসলামী আন্দোলনের নিয়মিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, দলের মুখপাত্র ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা লোকমান হোসাইন, শওকত আলী হাওলাদার, অধ্যাপক নাছির উদ্দিন, মাওলানা খলিলুর রহমান, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন স আহম দ র জন ত সরক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব: বাংলাদেশ
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বলেছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার জন্য বাংলাদেশ সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও মর্যাদা সমুন্নত রাখা এবং তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য দ্রুত একটি অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব।
শুক্রবার বিকেলে জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ওআইসির উদ্যোগে উত্থাপিত ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজ্যুলুশন গৃহীত হওয়ার আগে মানবাধিকার পরিষদে দেওয়া বক্তব্যে তারেক মো. আরিফুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, রাখাইনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং ‘আরাকান আর্মি’র মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীসমূহের মধ্যকার চলমান সংঘাত মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে। এ সময় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মানবাধিকার পরিষদকে অবহিত করে উল্লেখ করেন যে, রাখাইন রাজ্যে চলমান হত্যাযজ্ঞ, নিপীড়ন এবং সহিংসতা এড়াতে শুধুমাত্র ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
এ ছাড়াও আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা বিষয়ে আয়োজিতব্য উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানকল্পে বাস্তবমুখী এবং সময়াবদ্ধ সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত রেজ্যুলুশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। রেজুল্যুশনে রোহিঙ্গাদের জন্য ক্রমহ্রাসমান মানবিক সহায়তার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকতর দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। এ ছাড়াও এতে জাতিসংঘ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাসমূহকে রাখাইনে নিরবিচ্ছিন্ন এবং পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।
রেজ্যুলুশনটিতে রাখাইনে বিচারহীনতা ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি অবসানের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যের সব স্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের অংশগ্রহণ এবং অর্থপূর্ণ প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন কাঠামো স্থাপনের আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন ২০২৫ তারিখে শুরু হওয়া জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশন আগামী ৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে সমাপ্ত হবে।