ঝিনাইগাতীতে দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে বন্য হাতির আক্রমণে আরও একজনের মৃত্যু
Published: 21st, May 2025 GMT
দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার বাঁকাকুড়া শালবনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই ব্যক্তির নাম এফিলিস মারাক (৪৫)। তিনি উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের বড় গজনী গ্রামের সোহান মারাকের ছেলে। একই রাতে দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার গজনী পাহাড়ের টিলায় ৩-৪ দিন ২০-৩০টি বন্য হাতি দল বেঁধে অবস্থান করছিল। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে এফিলিস মারাক তাঁর তিন বন্ধুকে নিয়ে বাঁকাকুড়া গ্রাম থেকে হেঁটে বড়গজনী এলাকায় বাড়ি ফিরছিল। এ সময় বাঁকাকুড়া শালবনে রাস্তা ধরে এগোতে থাকলে বন্য হাতির একটি দল তাঁদের তাড়া করে। তিন বন্ধু দৌড়ে নিরাপদ জায়গায় চলে গেলেও এফিলিসকে হাতি শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে ওপর দিকে ছুড়ে মারে। পরে মাটিতে পড়ে গেলে হাতির পায়ে পিষ্ট করে এফিলিসের শরীরের বিভিন্ন অংশ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ঘটনাস্থলেই এফিলিস মারাকের মৃত্যু হয়। বন্য হাতির ভয়ে গতকাল রাতে কেউ লাশ উদ্ধার করতে যাননি।
এ ব্যাপারে বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল করিম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গজনী জঙ্গলে ২০-৩০টি বন্য হাতি তিন দিন ধরে অবস্থান করছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাতির আক্রমণে এফিলিস মারাক নামের আরও এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এলাকায় হাতির দল অবস্থান করায় রাতে লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আজ বুধবার সকালে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বন বিভাগের লোকজনের উপস্থিতিতে লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আরও পড়ুনঝিনাইগাতীতে বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু ৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিড়ালের দেখাশোনা করলে সম্পত্তি লিখে দেবেন বৃদ্ধ
চীনের গুয়াংডং প্রদেশের বাসিন্দা লংয়ের (ছদ্মনাম) কোনো সন্তান নেই। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর এক দশক ধরে একাই থাকেন। একদিন বৃষ্টিতে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া চারটি বিড়ালকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। এখন শুধু একটিই বেঁচে আছে। সিয়ামি জাতের সেই বিড়ালের নাম সিয়ানবা। বয়সের কারণে লং এখন তাঁর মৃত্যুর পর বিড়ালটির যত্নে একজন বিশ্বস্ত অভিভাবক খুঁজছেন, যাঁকে তিনি নিজের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করবেন।
স্থানীয় একটি টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, সঠিক ব্যক্তি পেলে নিজের ফ্ল্যাট ও জমানো সব অর্থ দিয়ে দেবেন লং। শর্ত একটাই, সিয়ানবার যত্নে কোনো ত্রুটি করা যাবে না। তবে এখন পর্যন্ত উপযুক্ত কাউকে খুঁজে পাননি তিনি।
৮২ বছর বয়সী লংয়ের বিড়ালের জন্য উত্তরাধিকারী খোঁজার বিষয়টি চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনলাইনে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘যদি কেউ এ প্রস্তাবে রাজি না হয়, তাহলে বুঝতে হবে, তারা (চীনের মানুষেরা) হয়তো বিড়াল ভালোবাসে না, নয়তো শর্তগুলো কঠিন।’ বিড়ালটি দত্তক নেওয়ার শর্তগুলো প্রকাশ করা হয়নি।
ভবিষ্যতে লংয়ের আত্মীয়রা সম্পত্তির দাবিতে আইনি লড়াইয়ে নামতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। চীনের ২০২১ সালে কার্যকর হওয়া দেওয়ানি আইন (সিভিল কোড) অনুযায়ী, যে কেউ ইচ্ছাপত্র করে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে উত্তরাধিকারী করতে পারবেন।
অনেকে আবার সম্পত্তি ছাড়াই লংয়ের বিড়াল দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এক নারী মন্তব্য করেছেন, ‘আমি বিড়ালটিকে নিতে রাজি, টাকার দরকার নেই।’
এই নারী লেখেন, ‘আমি নিজেও ভেবেছি, আমার মৃত্যু হলে বিড়ালটি কে দেখবে? যদি কাউকে বিশ্বাস না করা যায়, তাহলে উত্তরাধিকারীর জন্য অর্থ রেখে যাওয়া যেতে পারে, যাতে বিড়ালটা বোঝা না হয়ে ওঠে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ভুয়া বিড়ালপ্রিয় মানুষের বিষয়েও সতর্ক করেছেন। তাঁদের মতে, এমন অনেকে আছেন, যাঁরা কেবল অর্থের লোভে দত্তক নিতে চাইতে পারেন, পরে প্রাণীটির সঙ্গে হয়তো খারাপ ব্যবহার করবেন।
চীনে এখন পর্যন্ত পোষা প্রাণীর প্রতি নির্যাতন ঠেকাতে নির্দিষ্ট আইন নেই। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেশটির পোষা প্রাণী বাজার দ্রুত বেড়েছে।
২০২৫ সালের চায়না পেট ইন্ডাস্ট্রি হোয়াইট পেপার অনুযায়ী, ২০২৪ সালে চীনে বিড়াল ও কুকুরের সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪০ লাখ, যা ২০২৩ সালের চেয়ে ২ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। বাজারের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন ইউয়ান বা প্রায় ৪ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার।