সীতাকুণ্ডে ১৬টি স্থানে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত, বর্ষা নিয়ে শঙ্কা
Published: 24th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া সৈকত থেকে কুমিরা ফেরিঘাট পর্যন্ত বেড়িবাঁধের দৈর্ঘ্য চার কিলোমিটার। এর মধ্যে তিন কিলোমিটারে ব্লক বসানো হয়েছে। জোয়ারের আঘাতে এই বেড়িবাঁধের ১৬টি স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব স্থানে ব্লক সরে গিয়ে কিছু অংশে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত।
শুধু বেড়িবাঁধ নয়, বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট এলাকায় সিকদার খালের স্লুইসগেটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু বালুর বস্তা দিয়ে স্লুইসগেটটি ধরে রাখা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ও স্লুইসগেট সংস্কার করা না হলে বর্ষায় মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ৫০০ মিটারের মতো। বেড়িবাঁধের এ অংশের স্থায়ী সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি পাস হলে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে।
সম্প্রতি সরেজমিনে বেড়িবাঁধ ঘুরে দেখা যায়, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আকিলপুর সৈকতের দক্ষিণাংশে আধা কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি স্থানে বড় বড় গর্ত। বোয়ালিয়া কুল এলাকায়ও বেড়িবাঁধের কিছু অংশ জোয়ারের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সৈকতের জমাদার পাড়া এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্লক বেড়িবাঁধ। জমাদার পাড়া এলাকায় দুটি অংশে তিন মিটার প্রস্থের বেড়িবাঁধের উপরিতল এক মিটারের কম হয়ে গেছে।
জমাদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ বছর আগে এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। আগের বেড়িবাঁধটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় ২০ বছর দুর্ভোগের মধ্যে কাটিয়ে এই বেড়িবাঁধ মানুষ পেয়েছেন। এখন নতুন বেড়িবাঁধটিও ক্ষতিগ্রস্ত, যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমের কথা ভেবে এলাকার মানুষ খুবই উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।
আকিলপুর এলাকায় বেড়িবাঁধে যে ব্লক বসানো হয়েছে, তা আকারে তুলনামূলক ছোট। এগুলো সাধারণত ঢেউ নেই, এমন নদী এলাকায় ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের ব্লক বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের উপযোগী নয়।এস এম তারেক, উপসহকারী প্রকৌশলী, পানি উন্নয়ন বোর্ডবাঁশবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মো.
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম তারেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আকিলপুর এলাকায় বেড়িবাঁধে যে ব্লক বসানো হয়েছে, তা আকারে তুলনামূলক ছোট। এগুলো সাধারণত ঢেউ নেই, এমন নদী এলাকায় ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের ব্লক বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের উপযোগী নয়। ঢেউয়ের চাপ সামাল দিতে হলে নতুন করে ভারী ব্লক তৈরি করে এরপর বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণ বা মেরামত করতে হবে।’
এস এম তারেক আরও বলেন, গত সপ্তাহে কুমিরা নৌঘাট থেকে বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬০ কোটি টাকা। চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বেড়িবাঁধের উপরিতলের প্রশস্ত হবে ছয় মিটার, যাতে ওই সড়ক দিয়ে কুমিরা ও বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাটের সরাসরি যোগাযোগ শুরু হয় এবং সন্দ্বীপগামী যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের গাড়ি যাতায়াত করতে পারে। তিনি আশা করছেন, প্রকল্পটি দ্রুত পাস হবে।
দুই ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন
এদিকে উপজেলার কুমিরা ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দুই স্থানে চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ঘোড়ামারা এলাকায় চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধের তিন কিলোমিটারই বিলীন। কুমিরা ইউনিয়নের আলেকদিয়া এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, বেড়িবাঁধের এসব অংশ ব্যক্তিমালিকানাধীন হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সংস্কার করতে পারছে না।
আলেকদিয় এলাকার বাসিন্দা সোহেল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, অন্তত ১০ বছর ধরে তাঁদের এলাকায় বেড়িবাঁধ বিলীন। এসব অংশে অনেক জাহাজভাঙা কারখানা রয়েছে। প্রায় সব কটি কারখানা বন্ধ। এই অংশে বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধ জাহাজভাঙা কারখানামালিকেরা নিজেরাও নির্মাণ করছেন না, আবার পানি উন্নয়ন বোর্ডকেও নির্মাণ করতে দিচ্ছেন না। ফলে প্রতিবছর তাঁদের বাড়িঘর জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়।
একই কথা বলেন ঘোড়ামারা এলাকার বাসিন্দা নুরুল আলম। তিনি বলেন, তিন-চার বছর আগে তাঁদের এলাকায় জিও ব্যাগ ও কিছু ব্লক বসিয়ে কোনোমতে একটি বাঁধ তৈরি করে দিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেটিও এখন বিলীন হওয়ার পথে। ফকিরহাট এলাকায় একটি জাহাজভাঙা কারখানার অংশে বেড়িবাঁধ একেবারেই বিলীন। ফলে ওই এলাকায় জেলেপাড়াসহ তিনটি গ্রামে প্রতিবছরই বর্ষায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম তারেক বলেন, কুমিরা ও সোনাইছড়ি এলাকায় বেড়িবাঁধ অংশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা নেই। বেড়িবাঁধের ওই অংশগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন। তাই বেড়িবাঁধের বিষয়ে কোনো প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা যাচ্ছে না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক র ব স ন দ প রথম আল ক ন র ম ণ কর স ল ইসগ ট ইউন য ন র র এল ক য প রকল প ব লক ব রস ত ব
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিসিএলের দুই পদের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডে (আরপিসিএল) উপসহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল) এবং উপসহকারী প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) পদের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ প্রকাশ করা হয়েছে।
আবেদনকারী প্রার্থীদের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা (MCQ Test) অনুষ্ঠিত হয় গত ২৫ এপ্রিল। নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় (MCQ Test) উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা (Written Test) অনুষ্ঠিত হয় ১৬ মে। বাংলাদেশ পাওয়ার ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডে (সেনাকল্যাণ কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, পঞ্চম তলা, প্লট-৯, ব্লক-এফ, টঙ্গী, গাজীপুর) অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান আরপিসিএলের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন৪৭তম বিসিএস প্রিলির তারিখ তৃতীয়বারের মতো পেছাল২ ঘণ্টা আগে১. উপসহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল) = ২০ জনের মৌখিক পরীক্ষা ২৭ মে (২৭.০৫.২০২৫, মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত হবে। আরপিসিএলের করপোরেট অফিস প্লট-৫২, রোড-২১, নিকুঞ্জ-২ খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯–এ বেলা সাড়ে তিনটায় শুরু হবে।
২. উপসহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল) = ১০ জন ও উপসহকারী প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল)=১০ জন; অর্থাৎ মোট ২০ জনের মৌখিক পরীক্ষা আগামী ২৮ মে, বুধবার (২৮.০৫.২০২৫) অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন বেলা সাড়ে তিনটায় আরপিসিএলের করপোরেট অফিস প্লট-৫২, রোড-২১, নিকুঞ্জ-২ খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯–এ অনুষ্ঠিত হবে মৌখিক পরীক্ষা।
আরও পড়ুনশিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা, নেই পরিকল্পিত সমাধান ১২ ঘণ্টা আগে৩. উপসহকারী প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) = ১৬ জনের মৌখিক পরীক্ষা ২৯ মে, বৃহস্পতিবার (২৯.০৫.২০২৫) অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন বেলা সাড়ে ৩টায় আরপিসিএলের করপোরেট অফিস প্লট-৫২, রোড-২১, নিকুঞ্জ-২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯–এ হবে মৌখিক পরীক্ষা।
মৌখিকের সূচি দেখুন এখানে।
আরও পড়ুনবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে ৬৬২ পদে বিশাল নিয়োগ, করুন আবেদন ১১ ঘণ্টা আগে