প্রয়োজনীয় ওষুধ, চিকিৎসক ও লোকবলের অভাবে নিজেই অসুস্থ-অচল হয়ে পড়েছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আওতাধীন মুন্সীগঞ্জ সদরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি। বিগত কয়েক মাস ধরে নরমাল ডেলিভারি ছাড়া কোন প্রকার অস্ত্রোপচারের (সিজার রিয়ান অপারেশন) মাধ্যমে শিশু জন্মদানের কার্যক্রম হয়নি এখানে। এতে কেন্দ্রটিতে চিকিৎসা নিতে আসা প্রসূতি তাদের স্বজনরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

কর্তৃপক্ষ বলছে, গত ছয় মাসে এ কেন্দ্রটি নিরাপদ মাতৃত্বের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। কেন্দ্রটিতে গত দুই মাসে একটিও অস্ত্রোপচার (সিজার) হয়নি। স্বাভাবিক প্রসবের হারও ছিল হতাশাব্যঞ্জক। যে দুয়েকটি অস্ত্রোপচার হয়েছে তাও অসহায় গরিব রোগীদের নিজেদেরই বাইরে থেকে ওষুধ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনিয়ে আনা হয়েছে। তাছাড়া দালালের খপ্পরে পড়ে রোগীরা প্রায়ই কেন্দ্রের আশপাশের ক্লিনিকে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, চিকিৎসাকেন্দ্রটিতে প্রতিদিন শতাধিক রোগী আসেন চিকিৎসা নিতে। কিন্তু চিকিৎসা না পেয়ে তাদের ফিরে যেতে হয়।

গত ছয় মাসে এখানে যা দুয়েকটি সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছ, তাও রোগীর নিজ খরচে। এছাড়া নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ২২৯ জনের। কোন লাইগেশন ও ভেসেকটমি হয়নি। কনডম ও জন্মনিয়ন্ত্রল পিল দেওয়া হয়নি। ইমপ্লান্ট গ্রহীতা ১৯১ জন ও আইইউডি গ্রহীতা ৪০ জন।

কেন্দ্রটিতে মেডিকেল অফিসার রয়েছেন মাত্র দুই জন, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা রয়েছেন দুই জন, একজন রয়েছেন ফিমেইল নার্স এটেন্ডেন্ট, একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও একজন অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার।

এখানে জেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে প্রতিদিন শতাধিক রোগী সেবা নিতে আসেন। তবে চরম বিড়ম্বনায় পড়ে সেবা ছাড়াই তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংকট রয়েছে হাসপাতালটিতে। নানা অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ সেবা গ্রহীতাদের। ওয়ার্ডে রোগী নেই, বেড খালি পড়ে রয়েছে। লোকবল নিয়োগ না হওয়ায় নতুন ভবনে আইসিইউ ও সিসিইউসহ নানা ধরনের আধুনিক চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষ।

অকপটে এসব অভিযোগ স্বীকার করে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারিয়া নুসরাত বলেন, “সিজারের কোন ওষুধ এখানে সাপ্লাই নেই। তাহলে আমরা কীভাবে ওষুধ ও সরঞ্জাম ছাড়া সিজার করব? তাই বাধ্য হয়েই রোগীদের নিজ খরচে বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনতে হচ্ছে।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুপুর আড়াইটার পর চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। এখানে কোনো আল্ট্রাসনোগ্রাম হয় না। অন্যান্য জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষারও সুযোগ নাই। ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও, বেলা আড়াইটার পর রোগীরা কোনো সেবা পান না। 

এ বিষয়ে কেন্দ্রের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আড়াইটার পর ওষুধ-পথ্যের কারণে ইচ্ছে থাকলেও তারা সেবা দিতে পারেন না। তাছাড়া লোকবলের অভাবে এখানে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়াও সম্ভব না।

এদিকে, এ অচলাবস্থার সুযোগে দালালদের উৎপাত ব্যাপকহারে বেড়েছে। সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় রোগী নিয়ে টানা-হেঁচড়া। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১০টার পর থেকে প্রধান ফটকে জরুরি বিভাগের সামনে প্রথমে একজন ও পরে তার সঙ্গে আরও তিনজনকে যোগ দিতে দেখা গেল। 

মুক্তারপুর থেকে আসা এক নারীকে ওই দালাল চক্রটি বাইরের কোনো ক্লিনিকে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছিল। এ প্রতিবেদক প্রথম ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে তিনি জানান, কাছেই তার নিজের ক্লিনিক আছে। তাছাড়া এখানেতো কোন ওষুধ নেই, সিজারও হয় না।

কেন্দ্রটির বহির্বিভাগে চিকিৎসকদের রুমে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়োগকৃত দালালদের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ার মতো। এমনকি খোদ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরাই ডাক্তারদের সাথে আঁতাত করে দালালদের লালন-পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে ডাক্তার ও স্টাফদের বিরুদ্ধে। হাসপাতালটির প্রধান ফটক থেকে শুরু করে ইনডোর ও আউটডোরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ওষুধ কোম্পানি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের দৌরাত্ম্যের কারণে কেন্দ্রটিতে রোগীদের প্রবেশ করাই দায় হয়ে পড়েছে। এছাড়া বাইরের লোকের এই অবাধ প্রবেশের সুযোগে রোগী ও স্বজনদের মোবাইল এবং টাকা চুরির মতো ঘটনা নিত্য ঘটে চলেছে। এসব ব্যপারে সব কিছু জেনেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ উদাসীন।

সরেজমিনে মুন্সীগঞ্জ সদরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারিয়া নুসরাতের চেম্বারে গিয়ে যদেখা যায়, সেখানে কয়েক জন লোক বসে আছেন। তারা সবাই ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি। তাদের কারো হাতে লাল-হলুদ খাম। কারো হাতে তাদের কোম্পানির ওষুধ, কলম ও প্যাড। ডাক্তারের দরজায় পাহারায় রত ক্লিনিক-ডায়গনস্টিক সেন্টারের দুজন দালাল। ডাক্তারের রুমে ঢুকতে চাইলে তারা বাধা দেন। তবে সংবাদকর্মী পরিচয় দিলে ভিতরে ঢুকতে দিয়ে তারা সটকে পড়েন। 

রুমের ভিতরে গিয়ে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের পরিচয় জানতে চাইলে ডাক্তারের সামনেই তারা বীর দর্পে বলেন, “আমরা ওষুধ কোম্পানির লোক। আপার নির্দেশেই এখানে এই সময় প্রতিদিন আসি।” এ কথা বলেই চলে যান তারা। এদিকে, ডাক্তারের রুমের বাইরে ১০-১৫ জন রোগীর সিরিয়াল। 

এসব দৃশ্য দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারিয়া নুসরাতের কাছে এই প্রতিবেদক জানতে চান- অফিস টাইমে আপনি বাইরে রোগী দাঁড় করিয়ে রেখে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সময় দেন কেন?

জবাবে তিনি বলেন, “রোগী দেখার পাশাপাশি আমি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদেরও ভিজিট করার সময় দেই। তাছাড়া এখানেতো কোন ওষুধ নাই, সিজারও করা হয় না। শুধু নরমাল ডেলিভারি করা হয়। রোগীদের যেহেতু বাইরের ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে নিতে হবে, তাই আমি ভালো কোম্পারি ওষুধই লিখে দেই।”

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনার উপ পরিচালক মো.

শাহিন হাসান বলেন, “আমাকে জেলার প্রশাসনিক সব কাজ করতে হয়। এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শকেরা কী করছেন, তাও মাঠে গিয়ে দেখতে হয়। সিজারিয়ানের জন্য কোনো ওষুধ আপাতত নেই এখানে। এখানে পর্যাপ্ত ওষুধ ও সিজারের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ থাকলেও এবারই বেশ কয়েকমাস যাবৎ আমরা তা পাচ্ছি না। তাই সিজার সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। আমি মুন্সীগঞ্জের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সকল উপকরণের জন্য প্রতিদিনই যোগাযোগ করছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।”

তিনি আরো বলেন, “বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক, ক্লিনিক এবং ওষুধ কোম্পানির লোকদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ শুনেছি। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো ধরনের অনিয়মের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে না।’’

উপ পরিচালক বলেন, “ওষুধ কোম্পানির দৌরাত্ম্য বেড়েছে। অভিযোগ পেয়েছি মাতৃসদনের ডাক্তার ও স্টাফরা এসব দালালদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। ভবিষ্যতে যেনো এসব অপকর্ম তারা করতে না পারেন, সে ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের অবগত করা হবে। দালালদের প্রশ্রয় দিয়ে রোগী টানা-হেঁচড়া করে জোরপূর্বক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাবে, তা হতে দেওয়া যাবে না। এদের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসনের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড য় গনস ট ক স ন ট র গনস ট ক স ন ট র র চ ক ৎসক ব যবস থ র পর চ পর ব র র জন য কল য ণ

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

বান্দরবানের থানচি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে এই হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুরো হাসপাতাল চালাচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। গত পাঁচবছরে চিকিৎসাধীন ও রেফার্ড করা ২৪ জন রোগী মারা গেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে ৩১ শয্যার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। তাদের মধ্যে একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ১৮ জন নার্স পদে রয়েছেন মাত্র চারজন। চারজন মিডওয়াইফ থাকার কথা, নেই একজনও।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০

বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লেন কাদের সিদ্দিকী

প্রাথমিক থেকে শুরু করে জরুরি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে ছুটে যান পাহাড়ি ও বাঙালিরা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা যোগ হয়নি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

দুর্গম এলাকার রোগীরা অনেক সময় নদীপথ কিংবা পাহাড়ি রাস্তা পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে এলেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পান না। বরং তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অনেক সময় বান্দরবানে যাওয়ার পথে রোগীরা মারা যান। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

হাসপাতালের পরিসংখ্যানবীদ পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এখানে ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৮ জন রোগী। এর মধ্যে ৪৫৬ জনকে রেফার্ড করা হয় বান্দরবান সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন রোগী। 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মংক্যসিং মারমা বলেন, “২০১৯ সালে চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে অন্তত সাতজন রেফার্ড করা রোগী মাঝপথে আমার গাড়িতেই মারা গেছেন।”

 

শৈসাই মং মারমা তিন বছর আগে বিনা চিকিৎসায় তার মাকে মারা যেতে দেখেছেন। তিনি জানান, তার মা শৈমেপ্রু মারমা (৩৪) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। রেমাক্রী বাজার থেকে নদীপথে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান মাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ভাড়া গাড়িতে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার সময় চিম্বুক বারো মাইল এলাকায় তার মা মারা যান।

লেংরু ম্রো নামে চার সন্তানের মা হারিয়েছেন স্বামীকে। তিনি জানান, তার স্বামী রেং য়ুং ম্রো (৪৫) কিডনি জটিলতা নিয়ে থানচি হাসপাতালে যান। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। থানচি থেকে বান্দরবান যাওয়ার মাঝপথে মারা যান তার স্বামী।

স্থানীয় বাসিন্দা মংমে মারমা বলেন, ‍“হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ ও যন্ত্রপাতির সংকট দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বদলি হলেও অনেকেই থানচিতে যোগ দেন না, ডিপুটেশনে থেকে যান সদর হাসপাতালে। ফলে এ অঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙালি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

রিয়েং ম্রো নামে অপর বাসিন্দা বলেন, “পাহাড়ে বসবাসকারীদের অধিকাংশ গরিব। জেলা সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল ও কষ্টকর। রেমাক্রি, বড় মোদক, তিন্দু থেকে থানচি সদরে রোগী আনতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর আবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চিকিৎসা করাবে?” 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “বর্তমানে হাসপাতালে আমিসহ দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন। তিন রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ফলে পুরো হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কারণে গুরুতর রোগীদের রেফার্ড করা ছাড়া উপায় থাকে না। দীর্ঘ পথের কারণে অনেকেই জীবিত অবস্থায় সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না।”

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “শুধু বান্দরবান নয়, পুরো তিন পার্বত্য জেলাতেই চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নতুন করে ৪৮তম বিসিএসের ডাক্তার পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও বিভাগীয় প্রধানকে বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের আট-দশজন চিকিৎসককে বান্দরবানে বদলি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
  • ৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে