ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির জবাবে ‘সম্মানের’ আহ্বান ইউরোপীয় ইউনিয়নের
Published: 24th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মানজনক সম্পর্ক ও আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য চুক্তি চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইইউ।
ইইউর বাণিজ্য প্রধান মারোস সেফকভিস জানান, ইইউ পুরোপুরি আলোচনায় নিয়োজিত। ইইউ এমন একটি চুক্তি করতে চায় যা উভয় পক্ষের জন্যই কার্যকর হবে। ইউরোপ-আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক অনন্য। এই সম্পর্ককে হুমকি নয়, বরং পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত। আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষায় প্রস্তুত।
এর আগে শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চলমান আলোচনা আশানুরূপ না হওয়ায় ১ জুন থেকে উচ্চ হারে শুল্ক কার্যকর করা হবে।
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, আমাদের আলোচনা এগোচ্ছে না। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউরোপীয় কোনো কোম্পানি বড় বিনিয়োগ করলে, শুল্ক আরোপে কিছুটা নমনীয়তা দেখাতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি করেছে এবং আমেরিকা থেকে কিনেছে ৩৭০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।
ট্রাম্পের হুমকির প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় দেশগুলো সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন বলেন, এই পথে আমাদের যেতে হবে না। আলোচনাই একমাত্র টেকসই পথ।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা উত্তেজনা কমাতে চাই, তবে প্রয়োজনে প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত।
জার্মানির অর্থমন্ত্রী ক্যাথেরিনা ঘাইচা বলেন, আমরা যা কিছু সম্ভব তা করব যাতে ইউরোপীয় কমিশন একটি আলোচনাভিত্তিক সমাধানে পৌঁছাতে পারে।
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ বলেন, আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য কৌশলের পক্ষে এবং আগেও দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় শুল্ক কমবেশি হতে পারে।
উল্লেখ্য, এপ্রিলের শুরুতে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধিকাংশ পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেন। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি সেটি তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন (৮ জুলাই পর্যন্ত) এবং আপাতত ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর রাখেন।
ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্যহীন—ইইউ আমেরিকার চেয়ে অনেক বেশি পণ্য রপ্তানি করে। তিনি গাড়ি ও কৃষিপণ্যের বাণিজ্যনীতি নিয়ে বিশেষভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এছাড়াও, আমেরিকায় তৈরি না হলে অ্যাপলের আইফোনের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প। পরে তিনি বলেন, এই শুল্ক যেকোনো স্মার্টফোনে প্রযোজ্য হতে পারে।
ট্রাম্পের সর্বশেষ হুমকির পর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র শ ল ক আর প ইউর প য ইউন য ন শ ল ক আর প ইউন য ন র ইউর প য আম র ক
এছাড়াও পড়ুন:
চীনা ক্ষেপণাস্ত্রের চালান হাতে পেয়েছে ইরান
ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য চীনা ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা এইচকিউ-৯বি ইরানের হাতে এসে পৌঁছেছে। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুনরায় শক্তিশালী করতেই নিজেদের অস্ত্রভান্ডার সমৃদ্ধ করার দিকে মনোযোগ দিয়েছে তেহরান।
মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো দ্রুত পুনর্গঠন করতে চাচ্ছে ইরান। সেই লক্ষ্যেই চীন থেকে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সংগ্রহ করেছে দেশটি।
একজন আরব গোয়েন্দা কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে বলেন, গত ২৪ জুন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর চীনের তৈরি ওই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা তেহরানে পাঠানো হয়েছে। আরেক আরব কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরব মিত্ররা তেহরানের এই প্রতিরক্ষা জোরদারের প্রচেষ্টা বিষয়ে সচেতন এবং হোয়াইট হাউসকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে ইরান ঠিক কতটা ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা হাতে পেয়েছে, তা নিশ্চিত করেননি ওই আরব কর্মকর্তারা। ইরান এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার মূল্য তেল দিয়ে শোধ করছে। চীন ইরানি তেলের সর্ববৃহৎ আমদানিকারক এবং মার্কিন প্রশাসনের তথ্যমতে, গত মে মাসে ইরানের শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ জ্বালানি রপ্তানি হয়েছে চীনে।
মিডল ইস্ট আই বলেছে, চীন ও ইরানের মধ্যে সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্ক যে ক্রমেই বাড়ছে, ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ তারই ইঙ্গিত দেয়।
আলজাজিরা জানায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের বিরোধ আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে সহজেই সমাধান করা সম্ভব। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি হামলার পর দু’পক্ষের মধ্যে আস্থার বিষয়টি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।
সোমবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন পেজেশকিয়ান। শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎকার নেন যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল পডকাস্টার টাকার কার্লসন। পেজেশকিয়ান বলেন, আমি বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্ব ও বিরোধ খুব সহজেই আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্ররোচনায় ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়েন। পেজেশকিয়ান আরও বলেছেন, সংঘাতের সময় ইসরায়েল তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। তারা সেই অনুযায়ী কাজও করেছে, তবে তারা ব্যর্থ হয়েছে।
আনাদোলুর খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমরা ইরানের সঙ্গে আলোচনার সময়সূচি নির্ধারণ করেছি। তারা আলোচনা করতে চায়। স্থানীয় সময় সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।