সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় এনসিপি
Published: 24th, May 2025 GMT
জুলাই সনদ, সংস্কার, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার ও তার সংশ্লিষ্টদের বিচার এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
আজ শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের গুঞ্জন নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক মহলে অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকে এনসিপি। এ সময় দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সব রাজনৈতিক দলকে দায়িত্বশীল আচরণ করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদ, সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। এতে জনমনে ও রাজনৈতিক দলগুলো স্বস্তি বা আস্থা পাবে। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়ার পক্ষে এনসিপির অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।
গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের একটি তালিকা গত ২২ মে প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
এই তালিকার বিষয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যে তালিকা করা হয়েছে, সেটি যদি আরও আগেই, ৫ আগস্টের পরপরই প্রকাশ করা হতো তাহলে একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য আসত না। এ ছাড়া আমাদের রাজনীতির সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সম্পর্কের ঘটনা এর আগে ঘটেছে। আমরা ওয়ান-ইলেভেনর মতো ঘটনা দেখেছি। এগুলো কারও জন্যই ভালো ফল বয়ে আনেনি। তাই যার যা কাজ তার সেটির মধ্যেই থাকা উচিত।
অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে বিএনপি। এই দুইজনের পদত্যাগের ব্যাপারে বিএনপির আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে কথা বলেন নাহিদ।
নাহিদ ইসলাম বলেন, তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে আছেন। আমিও তাদের মধ্যে একজন ছিলাম। তারা রাজনীতি বা নির্বাচন করতে চাইলে সরকারে থেকে তা পারবে না। সরকার থেকে বের হয়ে তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদেরকে এনসিপির সঙ্গে সংযুক্ত করে অপপ্রচার ও হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই দুজনের সরকারে থাকা প্রসঙ্গে নাহিদ আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে তারা সরকারে রয়েছেন। শহীদ পরিবার এবং আহতদের পুনর্বাসন, অপরাধীদের বিচার এবং সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাগুলো তদারকি করার জন্য তারা অন্তর্বর্তী সরকারে গিয়েছিলেন। ফলে তারা সরকার থেকে কখন বের হবেন বা আদৌ বের হবেন কি না, সেটা তাদেরই সিদ্ধান্ত।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প জ ত য় ন গর ক প র ট র জন ত ন হ দ ইসল ম ড ইউন স এনস প র র জন ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসা করাবেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেয়ারটেকার ও কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম।
আহত ওই শিক্ষার্থী হলেন, ইতিহাস বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নিরব কুমার দাস।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ১ বছর পূর্তির উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান নজরুল।
আরো পড়ুন:
কুবিতে ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠার দাবি শিক্ষার্থীদের
খুবির ২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আনা ‘চাঁদাবাজি’র অভিযোগের নতুন মোড়
কর্মচারী সমিতির সভাপতি (১১-১৬ গ্রেড) নজরুল ইসলাম বলেন, “জুলাই-অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থী নিরব প্রশাসনিকভাবে বড় কোনো ধরনের সহযোগিতা পাননি। এমনকি তার নিজ হলে একটি সিট পাওয়ার সুযোগ থেকেও তিনি বঞ্চিত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে প্রতি মাসে চিকিৎসার জন্য প্রায় দুই-আড়াই হাজার টাকা খরচ করছেন।”
তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতদিন তার চিকিৎসা চলবে, ততদিন আমি আমার বেতন থেকে প্রতি মাসে তার চিকিৎসা খরচ বাবদ দুই-আড়াই হাজার টাকা বহন করবো।’
আহত শিক্ষার্থী নিরব বলেন, “আমরা ছয় বন্ধু মিলে আন্দোলনে গিয়েছিলাম। আমরা বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় শান্তিপূর্ণ আন্দলোন করছিলাম। হঠাৎ করে পুলিশ সরাসরি গুলি চালাতে শুরু করে। আমি পড়ে যাই, অনুভব করি আমার শরীরে অসংখ্য গুলিবিদ্ধ হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমার বাম হাত, কাঁধ ও পিঠে একসঙ্গে তিন শতাধিক গুলি লাগে। আর ডান হাতের কব্জিতে ৪০টির বেশি গুলি লেগেছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০ হাজার টাকার চেক পেয়েছি কিছুদিন আগে। ডাক্তার আমাকে বলেছে এই গুলি একবারে বের করা সম্ভব না।”
তিনি আরো বলেন, “ডাক্তারের ভাষ্য অনুযায়ি আমাকে অনেক দিন সময় নিয়ে অপারেশন করতে হবে। অপারেশনের জন্য অনেক টাকারও প্রয়োজন। এখন আমি হোমিওপ্যাথি ঔষধ খাচ্ছি। হোমিওপ্যাথি ঔষধ খেয়ে গুলি উপরের দিকে এলে তখন বের করা যাবে।”
ঢাকা/মুজিবুর/মেহেদী